করোনার নমুনা সংগ্রহে সদর ও ফরিদগঞ্জে দু’টি ডক্টর সেফটি চেম্বার স্থাপন

কবির হোসেন মিজি :
দেশের চলমান পরিস্থিতিতর করোনা রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করতে আড়াইশ’ শয্যা বিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে ও ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দু’টি ডক্টর সেফটি চেম্বার স্থাপন করা হয়েছে। এখন থেকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারের কাছেই এই ডক্টর সেফটি বুথে রোগীদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে। এতে করে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অনেকটা নিশ্চিত থাকবেন নমুনা সংগ্রহকারী স্বাস্থ্যকর্মীরা।

জানা যায়, এতদিন ধরে চাঁদপুরে করোনা আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করা হতো হাসপাতালেরই একটি আলাদা ভবনের কক্ষে। যা ছিল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এতদিন এই হাসপাতালটিতে এমন স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা না থাকায় অনেকটা ঝুঁকির মধ্য দিয়েই রোগীদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছেন হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীরা। দেশের এই ভয়াবহ চলমান পরিস্থিতিতে জেলার একটি প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে এ ডক্টর সেফটি চেম্বার বুথ স্থাপন করায় এখন অনেকটাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত থাকবে বলে মনে করছেন হাসপাতালের চিকিৎসকগণ।

জানা যায়, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাকসুদুর রহমান পাটওয়ারীর তত্ত্বাবধানে এবং আমেরিকা প্রবাসী ফরিদগঞ্জের কৃতি সন্তান সাজ্জাদ রশিদ সুমনের ব্যক্তিগত অর্থায়নে ১৬ মে এই ডক্টর সেফটি চেম্বারটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে দেয়া হয়। আর এটি স্থাপন করা হয়েছে হাসপাতালের টিকেট কাউন্টারের সামনে। এখন থেকে নিয়মিত এই সেফটি চেম্বার বুথেই রোগীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার সুজাউদ্দৌলা রুবেল বলেন, চাঁদপুর সদর হাসপাতালটিতে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০জন রোগীর করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এতদিন অনেক ঝুঁকির মধ্য দিয়ে হাসপাতালের একটি কক্ষে রোগীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হতো। এখন থেকে করোনায় আক্রান্ত সন্দেহভাজন রোগীদের এখান থেকেই নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তিনি বলেন, এই ডক্টর সেফটিটি সুরক্ষাটা বেশি নিশ্চিত হয়ে থাকে। তাই এটি হাসপাতালে স্থাপন করাতে আমাদের জন্য অনেক ভালো হয়েছে।

সেফটি চেম্বারটি উদ্বোধনকালে উপস্থিত ছিলেন চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোঃ হাবিব-উল-করিম, সহকারী পরিচালক ডাক্তার এ কে এম মাহবুবুর রহমান, জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডাক্তার সৈয়দ মো. নুরুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক ডা. মাহমুন্নবী মাসুম, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার সুজাউদ্দৌলা রুবেল, সহকারী রেজিস্ট্রার (অর্থো ও সার্জারি) ডাক্তার মোহাম্মদ ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ও জেলা বিএমএ’র কাউন্সিলর ডাক্তার মোহাম্মদ মিজানুর রহমানসহ হাসপাতালের অন্যান্য চিকিৎসক ও কর্মকর্তাবৃন্দ।

এছাড়া একই দিনে ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও একই রকম একটি ডক্টর সেফটি চেম্বার উদ্বোধন করেন সিভিল সার্জন ডা. মো. সাখাওয়াত উল্লাহ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিউলী হরি, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আশরাফ আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ। এ সময় সাজ্জাদ রশিদ ব্যবসায়ী কাজে দেশের বাইরে থাকার কারনে তার প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাহফুজ শেখ, বাবলু শেখ ও ফরহাদ শেখ, মামুন পাটওয়ারী ও শাহাদাত মিজিসহ আরো অনেকে।

উল্লেখ্য, ডক্টর সেফটি চেম্বার প্রদানকারী ফরিদগঞ্জ উপজেলার কৃতি সন্তান মরহুম হাজী কাজীমুদ্দিন শেখের নাতি, এডভোকেট এম. এ রশিদ শেখের সন্তান সাজ্জাদ রশিদ সুমন। দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট চিন্তা করে করোনা মোকাবেলা করার জন্য ডাক্তাররা যাতে রোগীদের কাছে থেকে সেবা প্রদান করতে পারেন সেজন্য ডাক্তারদের নিরাপত্তার জন্য ডক্টরস সেফটি চেম্বার, মেডিক্যাল ইকুইপমেন্ট, পিপিই, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস উপহারস্বরূপ প্রদান করেন ফরিদগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও চাঁদপুর সদর হাসপাতালে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)