করোনায় খাদ্য সহায়তা থেকে বঞ্চিত ইমারত শ্রমিকরা

কবির হোসেন মিজি :
মরণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে বর্তমান দেশের সংকটময় পরিস্থিতিতে সরকারি এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের দেয়া খাদ্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত রয়েছে ইমারত নির্মান শ্রমিকরা। তাই জীবনের তাগিদে পেটের দায়ে করোনা সংক্রমনের ঝুঁকি নিয়েই মাঝে মধ্যে কাজ বের হচ্ছেন এসব শ্রমিকরা।

সারা বাংলাদেশের সাথে গত ৮ দিন ধরে চাঁদপুরেও ঘরে থাকা কর্মসূচি। অর্থাৎ করোনাভাইরাস প্রতিরোধ করতে সকলকে ঘরে থাকার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। দেশের এই সংকটময় সময়ে হঠাৎ ঘরবন্দী হয়ে পড়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছে শ্রমজীবী মানুষ। বিশেষ করে রিক্সাচালক, অটোবাইক চালক, সিএনজি স্কুটারচালক, হকার এবং ইমারত নির্মাণ শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ। যাদের নুন আনতে পান্তা ফুরায়। এসব শ্রমিকরা কাজ করলে তাদের সংসার চাকা চলে, নয়তো অসহায়ত্বের মতো থমকে যায় তাদের জীবন। সবচেয়ে বেশি বিপাকে রয়েছে বিভিন্ন যানবাহন চালক, হকার ও ইমারত নির্মাণ শ্রমিকরা।

জানা যায়, চাঁদপুরে বাইরে থাকা নিষিদ্ধ ঘোষণার পর থেকে ধীরে ধীরে সরকারি এবং বেসরকারিভাবে গরীব অসহায় শ্রমজীবী মানুষদের মাঝে বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়। গরীব অসহায় মানুষজন এবং অন্যান্য শ্রমিকরা বিভিন্নভাবে খাদ্য সামগ্রী পেলেও এসব খাদ্য সামগ্রী পাওয়া থেকে বঞ্চিত রয়েছে ইমারত নির্মাণ শ্রমিকরা।

চাঁদপুর শহরের ওয়্যারলেস এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, থরে থাকা সত্ত্বেও ওই এলাকার কয়েকটি নবনির্মিত ভবনে ইমারত নির্মাণ শ্রমিকরা কাজ করছেন। এ সময় একাধিক শ্রমিকরা জানান, আমরা তো আর সরকারি কিংবা বেরসরকারি কোন সংগঠন থেকে কোন সাহায্য সহযোগিতা পাইনি। তাই এই সময়ে ঘর থেকে বের হওয়ার নিয়ম না থাকলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পেটের দায়ে কাজে নেমেছি। কারন আমরা কাজ করলে সংসার চলে নয়তো না খেয়েই দিন কাটাতে হবে। আমরা ইমারত নির্মাণ শ্রমিকরা যদি অন্যান্যদের মতো খাদ্য সহযোগিতা পেতাম তাহলে আর কাজে আসতাম না। আমরা জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আর্কষণ করছি। জেলা প্রশাসন যেন আমাদের দিকে একটু সুদৃষ্টি দেন। কারণ আমাদেরও পরিবার পরিজন আছে, আমরা চাই এই কঠিন সময়ে ঘরে থাকতে। আমরা কোন খাদ্য সহযোগিতা পেলে আমরা ঘরে থেকেই দিন পার করবো।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সামাউন কবির বলেন, আমাদের ইমারত নির্মাণ শ্রমিকদের খাদ্য সহায়তার বিষয়ে জেলা প্রশাসনের কাছে গিয়েছি। তিনি বলেন, এসব শ্রমিকদের জন্য আলাদা কোন বরাদ্দ নেই। তাই যদি কোন শ্রমিক অভাব অনটনে থাকে তাহলে তাদের সেবাকৃত নম্বরে কল দিলে তারা ওই শ্রমিকের বাড়িতে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিবে। কিন্তু সেভাবেও যে কোন শ্রমিক সঠিকভাবে খাদ্য সহায়তা পাবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। কারণ যারা খাদ্য পৌঁছে দেবার দায়িত্বে রয়েছেন তারা সঠিকভাবে তা দিবেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন