চাঁদপুরে মার্কেট খোলার আগেই লকডাউন অমান্য করে মানুষের ভিড়

কবির হোসেন মিজি :
লকডাউনের বর্তমান পরিস্থিতিতে ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে দোকানপাট ও শপিংমল শর্ত সাপেক্ষে সীমিত আকারে খোলার সিন্ধান্ত গৃহীত হলেও তার আগে থেকেই চাঁদপুরে ব্যাপক হারে বাড়ছে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি। শহরের প্রাণকেন্দ্র কালিবাড়ি এলাকায় মানুষের ভিড় এখন লক্ষ্যণীয়।

দেশের করোনা পরিস্থিতিতে সাড়াদেশে একযোগে চলছে অনির্দিষ্টকালের লকডাউন। এই মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে সচেতনতার জন্য এই লকডাউন ঘোষণা করে সরকার।

দীর্ঘদিন ধরে চাঁদপুরেও চলছে এ লকডাউন কার্যক্রম। প্রথম প্রথম সাধারন মানুষ সচেনতা অবলম্বন করে লকডাউনে তেমন একটা বাইরে বের না হলেও কয়েক দিন যেতেই বাড়তে থাকে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি। লকডাউন আর বাস্তব চিত্র দেখলে কোন মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

করোনা ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে যেখানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য রাস্তা-ঘাটে কাউকে অতি প্রয়োজন ছাড়া বের না হবার কথা ঘোষণা করা হয়। সেখানে সরজমিনে দেখা গেছে হাট, বাজার, দোকানপাটে মিলছে মানুষের কম বেশি উপস্থিতি। সড়কে চলছে ছোট বড় বিভিন্ন যানবাহন।

বাংলাদেশে মরণঘাতী করোনা ভাইরাস যাতে ছড়াতে না পারে সেজন্য সরকার গত ২৬ মার্চ থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য সরকারি ছুটি ঘোষণা করেন।

একই সাথে চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চাঁদপুরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন এবং শহর কিংবা গ্রামে প্রত্যেক স্থানে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে গণজমায়েত, এড়াতে বিভিন্ন দোকান পাট, ও যানবাহন চলাচল না করার নির্দেশ প্রদান করা হয়।

তারই প্রেক্ষিতে ২৬ মার্চ থেকে চাঁদপুর শহরের বিভিন্নস্থানে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সদস্যরা কঠোর নজরদারি জোরদার করেন। পাশাপাশি সেনাবাহিনী সদস্যদেরও টহল ছিলো। যাতে করে শহরে কোন প্রকার যানবাহন এবং মানুষজন বাইরে বের হতে না পারেন।

প্রথম কয়েক দিন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়ে রাস্তা ঘাটে তেমন কোন যানবাহন কিংবা মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা না গেলেও তার কিছুদিন পর থেকেই ধীরে ধীরে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি বাড়তে শুরু করে। এমন কি শহরের অনেক স্থানে চায়ের দোকান’সহ অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেখা যায়।

প্রশাসনের এমন ঘোষণার পরেও গত কয়েক দিন ধরে দেখা যায়, চাঁদপুর শহরের শপথ চত্বর কালী বাড়ি, বাসস্ট্যান্ট, ছায়াবানী মোড়, নতুন বাজার, পুরানবাজার, মিশন রোড, চিত্রলেখা মোড়, চেয়ারম্যান ঘাটা, ওয়্যারলেসসহ শহরের বিভিন্ন সড়কে ট্রাক পিকআপ ভ্যান, রিক্সা অটোরিক্সাসহ বিভিন্ন যানবাহন সড়কে চলতে দেখা গেছে। এসব যানবাহনের সাথে সাথে বাড়ছে মানুষের উপস্থিতিও।

মহামারী করোনা ভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে সচেতনতার লক্ষে এসব জনসাধারণকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার জন্য বার বার সতর্কতা ও ঘোষণা দিলেও অনেকেই তা না মেনে অন্যান্য স্বাভাবিক দিনের মতোই প্রতিনিয়ত বাইরে বের হচ্ছেন।

বিশেষ করে গত দুদিন আগে ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে শর্ত সাপেক্ষে সীমিত আকারে বিভিন্ন শপিংমল, মার্কেট খোলার সিন্ধান্ত গৃহীত হওয়ার কথা শুনে শহর এবং গ্রামে সবখানেই ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে যানবাহন ও মানুষের উপস্থিতি।

প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেকে ফাঁকে ফাঁকে খুলছেন বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। আর এতে মনে হচ্ছে ভেস্তে যাচ্ছে যেনো প্রশাসন ঘোষিত লকডাউন। জনসাধারনের বাইরে ঘুরাফেরার এমন উপস্থিতিতে মহামারী করোনা ভাইরাস ছড়ানোর ঝঁকি থাকতে পারে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)