চাঁদপুর লকডাউন করায় জেলা প্রশাসককে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের ধন্যবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চাঁদপুর জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী। তিনি বলেন, এটি একটি সময়োপযোগী ও সঠিক সিদ্ধান্ত। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্তণহীন হওয়ার আগেই এমন উদ্যোগ চাঁদপুর জেলায় করোনার সংক্রমণ রোধে কার্যকরী ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সর্বস্তরের জনগণ সম্মিলিতভাবে নিজ নিজ ঘরে থাকলেই এই লডকাউন ফলপ্রসূ হবে।

এক বিবৃতিতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বলেন, করোনা কবলিত ঢাকা ও নারায়নগঞ্জ থেকে চাঁদপুর জেলায় অতি সম্প্রতি ব্যাপক সংখ্যক লোক ঢুকে পড়েছে এবং এদের মধ্যে একজন করোনায় আক্রান্ত রোগী হিসেবে সনাক্ত হয়েছেন। তাই এখন আমাদের সম্মিলিত ও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। ঢাকা, নারায়নগঞ্জসহ করোনা কবলিত বিভিন্ন জেলা থেকে যারা চাঁদপুরে অতি সম্প্রতি প্রবেশ করেছেন এদের টানা ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা নিশ্চিত করতে হবে। প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের এই কাজে সম্পৃক্ত করা দরকার। লকডাউন অবস্থায় কেউ যাতে এই জেলায় প্রবেশ করতে বা বের হতে না পারে তা কঠোরভাবে নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন জেলে পরিষদ চেয়ারম্যান। আর অতি জরুরী ক্ষেত্রে শুধুমাত্র অনুমোদিত যানবাহন/ব্যক্তির আসা/যাওয়ার একান্ত প্রয়োজন হলে সর্বোচ্চ সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এ ক্ষেত্রে যানবাহন ও আসা/যাওয়া লোকদের জীবাণুনাশক স্প্রে করা, সংশ্লিষ্টদের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, করোনার সংক্রমণে এপ্রিল মাসকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এ কারণে সরকারি ছুটিও ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করা হচ্ছে। এ অবস্থায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনাসমূহ অনুসরণ করে সবাইকে নিজ নিজ ঘরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী। যথাযথভাবে লকডাউন বাস্তবায়নে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনীর দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও সদস্য এবং পুলিশ প্রশাসনের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী, করোনায় কর্ম হারিয়ে বেকার হওয়া রিক্সাচালক, সিএনজি অটোরিক্সাচালক, বাস-ট্রাকের চালক/হেলপার, অটোবাইকচালকসহ বিভিন্ন ধরনের দিনমজুরসহ অসহায় মানুষকে সঠিক তালিকা করে সরকারি সহায়তা প্রদান আরো জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। এসব সহায়তা প্রদান ও তালিকা করার ক্ষেত্রে জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, এর ফলে সরকারি সহায়তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত হবে। কারণ, জনগণের প্রতি নির্বাচিত জনপ্রতিধিদের জবাবদিহিতা, দায়িত্ব ও দায়বদ্ধতা রয়েছে। জনআকাঙ্খাও রয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করার মাধ্যমেই ভুক্তভোগী/সুবিধাভোগী লোক ও তালিকা প্রণয়ন সঠিক এবং সহজতর হবে। জনপ্রতিনিধিরাই জানেন, স্ব স্ব এলাকায় কারা সরকারি সামাজিক নিরাপত্তা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। ফলে সর্বোচ্চ সংখ্যক লোককে সরকারি সহায়তার আওতায় আনা সম্ভব হবে।

চাঁদপুর জেলাবাসীর উদ্দেশ্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ ওচমান গনি পাটওয়ারী বলেন, করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে ও পরিবারের সদস্যদের বাঁচাতে আপনারা সবাই নিজ নিজ ঘরে অবস্থান করুন। অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া কোনো অবস্থাতেই ঘরের বাইরে অবস্থান করবেন না। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন। খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন হলে ঘরে থেকেই জনপ্রতিনিধি ও সরকারি কর্মকর্তাদের মোবাইল ফোনে অবহিত করুন। যে কোনো অসুস্থতা বা করোনার উপসর্গ দেখা দিলে ঘরে বসেই স্ব স্ব উপজেলা/জেলার সরকারি হাসপাতালের মোবাইল ফোনে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারের সাথে সংশ্লিষ্ট আমরা সবাই আপনাদের পাশে আছি, পাশে থাকবো। আসুন, আমরা সবাই করোনামুক্ত থাকতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিদের্শনাগুলো মেনে চলি। দেশের এই দুর্যোগময় পরিস্থিতিতে আমরা কেউ কারো ভুল-ত্রুটি খোঁজার চেষ্টা না করে সম্মিলিতভাবে করোনার সংক্রমণ রোধে কাজ করি ও প্রশাসনকে সহযোগিতা করি। বিশেষ করে করোনায় সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা চিকিৎসক ভাই-বোনদের পাশে থেকে তাদের মানবতার সেবায় উৎসাহিত করি, সাহস সঞ্চার করি, মনোবল বৃদ্ধি করি ও প্রয়োজনে সহযোগিতা করি। মহান আল্লাহ আমাদের এই দুর্যোগ থেকে অচিরেই মুক্তি দান করুক- আমিন।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)