মমিনপাড়ায় মসজিদের বারান্দা ভেঙ্গে দিলেন পিতা-পুত্র

ভাঙ্গার কাজ স্থগিত করলেন পুলিশ

কবির হোসেন মিজি :
চাঁদপুর শহরের মমিনপাড়াস্থ বহরদার বাড়ি রোডে জুমার নামাজ আদায় করা আব্দুস সামাদ নামে জামে মসজিদের বারান্দা ভেঙ্গে দিলেন মোতায়ালিনের ১জন স্থানীয় বাসিন্দা ইসহাক মোল্লা ও তার পুত্র সাঈদুল ইসলাম মোল্লা। এ নিয়ে স্থানীয় মুসল্লিদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। মসজিদ ভাঙ্গার অভিযোগের খবর পেয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মসজিদ ভাঙ্গার বিষয়টি স্থগিত করে আসেন।

স্থানীয়রা জানান, ২০১৬ সালে মমিনপাড়া বহদার বাড়ি রোডে স্থানীয়রা মিলে আলাপ আলোচনা করে ইসহাক মোল্লা মোতায়ালিন হিসেবে দানকৃত জমিতে আব্দুস ছামাদ নামে সকলের দানের টাকায় এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মসজিদ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে স্থানীয়রা শান্তিপূর্ণভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে আদায় করে আসছেন। পরবর্তীতে প্রতি জুমায় মুসল্লি বেশি হওয়ার কারণে মসজিদের একটি বারান্দা নির্মাণ করা হয়। কয়েক বছর যেতেই মসজিদের দান বাক্সের টাকা নিয়ে মসজিদ কমিটির সাথে ইসহাক মোল্লার বাকবিতন্ডা হয়। কারণ দান বাক্সের জমানো টাকা ইসহাক মোল্লা মসজিদের কাজে ব্যয় না করে নিজে খরচ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই কমিটির সাথে কয়েক বছর পূর্বে বাকবিতন্ডা হলে তিনি ওই সময় একদিন মসজিদে তালা লাগিয়ে দেন। তারই সূত্র ধরে ২৮ মার্চ শনিবার সকালে ইসহাক মোল্লা ও তার ছেলে সাঈদুল মসজিদের বাড়ান্দার চালের টিন, জানালা, বেড়া এবং সিলিং ফ্যান খুলে ফেলে।

ব্যক্তিগত আক্রোসে একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ভাঙ্গার কারনে স্থানীয়রা চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে জানালে থানার এসআই সর্ঙ্গীয়ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে তা ভাঙ্গা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ প্রদান করেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ফারুক হোসেন জানান, আমি একজন প্রবাসী। মসজিদটি উদ্বোধন হওয়ার সময় আমাকে জানালে আমি ২টি মাইকসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম দেই। তবে তাদের সমস্যার কারনে আরও অনেক কিছু দেওয়ার ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও আর কিছুই দেই নি।

আরও কয়েকজন এলাকাবাসীর সাথে আলাপ হলে জানা যায়, পারিবারিক সমস্যার সাথে মসজিদ কে না ঝরানো ভাল। যেহুতু তারা ৩ ভাই মসজিদ করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ও করেছেন। তাই নিজেরা বসে তা সমাধান করা ভাল। আর মুসল্লীদের স্বার্থে মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ না করাই ভাল বলে মনে করছি। আমরা এ মসজিদ ভাঙ্গার পক্ষে নই।

মসজিদের খতিব হাফেজ মাওঃ দ্বীন ইসলাম জানায়, ২০১৬ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে আমি নামাজ পড়াচ্ছি। পারিবারিক দ্বন্দের কারণে ইসহাক মোল্লা শনিবার সকালে মসজিদের বাহিরের ছাপড়াটি ভেঙ্গে ফেলেন। প্রায় ৮ মাস পূর্ব থেকে মসজিদের বাহিরে নামাজ পড়া বন্ধ রয়েছে।

মসজিদ ভাঙ্গার প্রতিবাদে স্থানীয় মুসল্লিদের দাবি যারা একটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে নিজেদের ব্যক্তিগত আক্রোসে তা ভেঙ্গে ফেলেছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন মুসল্লিরা।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত ইসহাক মোল্লা বলেন, আমরা তিন ভাই মিলে তিন শতাংস জমি দিয়ে সবার আলোচনা সাপেক্ষে মসজিদটি আমার জায়গায় নির্মাণ করা হয়। পরবর্তীতে জুমার নামাজে মুসল্লি বেড়ে যাওয়ায় মসজিদের বারান্দাটিও আমার জায়গায় নির্মাণ করি। তারা বলেছিলেন, পরবর্তীতে আমার দু’শতাংশ জমি বুঝিয়ে দিবেন। কিন্তু আজো তা নিয়ে বসি বসি করে বসা হয়নি। সে জন্য আমি আমার জমি থেকে মসজিদের বারান্দাটি সরানোর জন্য বারান্দার চাল, বেড়া এবং সিলিং ভেঙ্গে ফেলি।

চাঁদপুর মডেল থানার এসআই মোঃ বেলাল হোসাইন জানায়, আমি খবর পেয়ে মসজিদটি না ভাঙ্গার জন্য বলে এসেছি। এটি যেহেতু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সেজন্য তাদের কে বলেছি ৮নং এবং ৯ নং ওয়ার্ডের দুই কাউন্সিলদের সাথে আলোচনা করে তা মিমাংসা করার জন্য। তারা আগামী শুক্রবারে তারা উভয়পক্ষ বসবেন বলে জানিয়েছে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)