চাঁদপুরে গ্রীষ্মকালীন শাক-সবজির বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

শরীফুল ইসলাম :
চাঁদপুর দেশের অন্যতম নদীবিধৌত কৃষি প্রধান অঞ্চল। মেঘনা, পদ্মা, মেঘনা ধনাগোদা ও ডাকাতিয়া নদী এ জেলা ওপর দিয়ে বয়ে যাওযায় রবি, আউস, আমন ও বোরোর মত কৃষি উৎপাদনে নদী অববাহিকায় ব্যাপক গ্রীষ্মকালীন শাক-শবজি উৎপন্ন হয়ে থাকে। জেলার কোনো কোনো উপজেলায় এখনো চাষাবাদ চলমান রয়েছে বলে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি চাঁদপুরের দায়িত্বরত কৃষিবিদ আবদুল মান্নান এ তথ্য জানান।

তার দেয়া তথ্য মতে, চাঁদপুরে এ বছর (২০১৯-২০২০) শাক-সবজির চাষাবাদ ২ হাজার ৮শ’ ৮০ হেক্টর এবং উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ৫১ হাজার ৮শ’ ৪০ মে. টন। ২৫ এপ্রিল ২০২০ পর্যন্ত চাষাবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯শ’ ৫০ হেক্টর। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে ছিল ৪৪ হাজার ৫শ’ মে. টন ।

বিশেষ করে চাঁদপুরের ১১ টি বিচ্ছিন্ন চরাঞ্চলে এ শাক-সবজি ব্যাপকভাবে চরবাসীরা চাষাবাদ করে থাকে। নারীরাই এসব শাক-সবজি উৎপাদনে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে । গরু, ছাগল , হাঁস , মুরগি ইত্যাদি গবাদি পশু প্রতিপালনে মেঘনা অববাহিকায় ও চরাঞ্চলে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও অগ্রণীভূমিকা পালন করে আসছে।

চাঁদপুরে ধান, পাট, আলু, সয়াবিন, পেঁয়াজ, রসুন সরিষা, মরিচের পরেই শাক-সবজির স্থান। এটি এখন বেশ লাভজনক। চাঁদপুরের উৎপন্ন শাক-সবজি নৌ-পথে দেশের বিভিন্ন শহরে বন্দরে চলে যায়। এ বছর চাঁদপুরে ৫১ হাজার ৮শ’ ৫০ মে. টন শাক-সবজির উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ, পরিবহনে সুবিধা, কৃষকদের শাক-সবজি চাষে আগ্রহ, কৃষি বিভাগের উৎপাদনের প্রযুক্তি প্রদান, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নত, কৃষিউপকরণ পেতে সহজলভ্যতা, বীজ, সার ও কীটনাশক ব্যবহারে কৃষিবিদদের পরামর্শ, ব্যাংক থেকে কৃষিঋণ প্রদান ইত্যাদি কারণে চাঁদপুরের চাষীরা ব্যাপক হারে শাক-সবজির চাষ করছে।

কৃষিবিদ আবদুল মান্নান বলেন, চরাঞ্চলের উৎপন্ন শাক-সবজি খুবই সতেজ ও তরতাজা। এসব শাক-সবজিতে কোনো রকম ফরমালিন মেশানোর প্রয়োজনীয়তা নেই। কেননা তারা বিক্রির জন্যে দিনের উঠানো গুলো দিনেই বাজারে বসে বিক্রি করে থাকেন। মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম, সবজি কান্দি, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, চাঁদপুর সদরের রাজরাজেস্বর, জাহাজমারা, লগ্নিমারা, বাঁশগাড়ি, চিড়ারচর, ফতেজংপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেব বাজার ও চরভৈরবীর বাবুরচর ইত্যাদি চরাঞ্চলগুলোতে চাষাবাদ হচ্ছে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন