চাঁদপুরে বিস্ফোরণে নিহত আল-আমিন ও মানসুরের বাড়িতে শোকের মাতম

মোরশেদ আলম :
রাজধানী গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার উত্তর ছেংগারচরের মোশাররফ হোসেন মিয়াজীর ছেলে মানসুর এবং পশ্চিম লালপুর গ্রামের মোঃ বিল্লাল হোসেন বেপারীর বড় ছেলে ও ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থী মোঃ আল-আমিন (২৩) এর বাড়িতে শোকের মাতম নেমে এসেছে।

কোন সান্ত্বনাই থামাতে পারছে না নিহতের মা-বাবা ও স্বজনের কান্না। সন্তানকে নিয়েই সাজানো ছিল যে মায়ের পৃথিবী এক নিমিষেই তা যেন এলোমেলো হয়ে গেলো। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্বজনরা। বুধবার সকাল ১০টায় তাদের নিজ গ্রামে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। ওই দুর্ঘটনায় প্রায় ১৮জন নিহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

গত ৮ মার্চ বিকাল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিক বাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। একটি ভবন সাততলা, আরেকটি ভবন পাঁচতলা। এর মধ্যে সাততলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলাও বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়। সেখানে উদ্ধারকাজ চালায় ফায়ার সার্ভিসের ১১টি ইউনিট।

জানা যায়, সাততলা যে ভবনে (ক্যাফে কুইন) বিস্ফোরণ ঘটেছে, তার পাশে ‘চায়না পয়েন্ট’ নামে আরেকটি পাঁচতলা ভবন রয়েছে। এ ভবনে ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা রয়েছে। বিস্ফোরণে পাঁচতলা এ ভবনের সব ফ্লোরই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙে গেছে ভবনের জানালার কাঁচ।

বিস্ফোরণের ভয়াবহতা আঁচ করা যাচ্ছে আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা দেখেও। সব ভেঙেচুরে তছনছ হয়ে গেছে। রাস্তায় চলাচল করা যাত্রাবাহী বাসও বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসের জানালার কাচ ভেঙে গেছে। আহত হয়েছেন বাসে বসে থাকা যাত্রীরাও।

ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, ক্যাফে কুইন ভবনে বেশিরভাগই স্যানিটারি ওয়্যারের দোকান। ভবনের পাশে ব্র্যাক ব্যাংকের ভবন। ক্যাফে কুইন ভবনের বিস্ফোরণে ব্র্যাক ব্যাংক ভবনসহ আশপাশের স্থাপনারও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনে উদ্ধার অভিযান আজকের মতো স্থগিত করা হয়েছে। রাত পৌনে ১১টার দিকে উদ্ধারকাজ স্থগিতের কথা জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগীয় উপ-পরিচালক দিনমনি শর্মা।
এই বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ১৮ জন নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আরও শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। নিহত মানুষের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শেয়ার করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)