লকডাউন মানছে না চাঁদপুরবাসী

আল-ইমরান শোভন :
করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে চাঁদপুরে চলছে লকডাউন। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে লোকজনের আনাগোনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশনা থাকলেও, তা মানা হচ্ছে। অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে, সবকিছু আগেরই মতোই স্বাভাবিক।

সরেজমিন মঙ্গলবার চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ব্যাটারি চালিত অটোরিক্সা ও রিক্সাসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের সংখ্যা বিগত দিনের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব যাত্রীবাহি যানবাহন চলাচলের ব্যাপারে কোনো ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে না। একাধিক যাত্রী একসাথে বসে চলাচল করছে। মানা হচ্ছে না, সামাজিক দূরত্বও।

একই চিত্র দেখা গেছে, চাঁদপুর শহরের কুমিল্লা রোড, পালবাজার, নতুনবাজার, বাসসস্ট্যান্ড, মিশন রোডসহ অন্যান্য এলাকায়।
দিনের বেলায় চাঁদপুর শহরে লোকজনের আনাগোনা লক্ষ্য করা গেলেও, রাতের চিত্র ভিন্ন। সন্ধ্যার পর পুরো শহরজুড়ে সুনসান নীরবতা লক্ষ্য করা গেছে।

চাঁদপুর শহরের বাসিন্দা আবদুল মালেক, জুয়েল আহমেদ বলেন, লকডাউনের ব্যাপারে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের নমনীয়তার কারণে জনসাধারণ লকডাউন মানছে না। এতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধ করার জন্য ‘লকডাউন’ করা হলেও, পুরো জেলাজুড়ে জনসাধারণের মাঝে করোনা ভাইরাস বিপর্যয় নেমে আসবে।

চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম আহসান উল্লাহ ক্ষোভের সাথে বলেন, চাঁদপুর জেলা কাগজে-কলমে ‘লকডাউন’ করা হলেও, বাস্তব চিত্র ভিন্ন। শহরে বের হলেই বিগত দিনের স্বাভাবিক চিত্র দেখা যায়। প্রশাসনের নমনীয়তার কারণে লোকজন অবাধে ঘর থেকে বের হচ্ছে এবং দলবদ্ধ হয়ে চলাচল করছে। কোনো ধরনের সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না। এতে চাঁদপুর জেলায় বড় ধরনের বিপদের আশংকা রয়েছে।
তিনি বলেন, শুধুমাত্র কাগজে-কলমে নয়, লকডাউন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে।

চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান বলেন, করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসাধারণকে বার বার ঘর থেকে বের হতে নিষেধ করা হচ্ছে। যারা অতি জরুরী প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হন, তাদেরকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের জন্য অনুরোধ করছি। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে জনসাধারণ সেই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে রাস্তায় বের হচ্ছে। আমরা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবো।
তিনি জানান, ইতোমধ্যে যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ঘর থেকে বের হয়েছে, এমন অনেক লোকজনকে অর্থদন্ড করা হয়েছে। ভবিষ্যতে জনসমাগম এড়াতে আমরা আরও কঠোরতা অবলম্বন করবো।

চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মো. নাসিম উদ্দিন বলেন, জনসমাগম এড়াতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। কিছু লোকজন বাইরে বের হলেও, তারা প্রয়োজনে বের হচ্ছেন বলে জানান। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে জনসমাগত এড়াতে আমরা আরও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন মো. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, ইতিমধ্যে চাঁদপুর জেলায় মোট ৫ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে মতলব উত্তরে ৩ জন, চাঁদপুর সদরে ১ জন এবং ঢাকায় ১জন রয়েছে। এর মধ্যে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক চিকিৎসকও রয়েছেন।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)