চাঁদপুরের ডাকাতিয়া নদীতে উটতলী ব্রিজ বাস্তবায়ন আরেক ধাপ এগুলো

নিজস্ব প্রতিনিধি :
চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার সীমান্তবর্তী ফরিদগঞ্জ উপজেলার উটতলী এলাকায় ডাকাতিয়া নদীর উপর ব্রিজ নির্মাণ প্রকল্প আরেক ধাপ এগিয়েছে। প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদনের পর সম্প্রতি এর ডিজাইন চূড়ান্ত হয়েছে। এখন টেন্ডার প্রক্রিয়া চলছে। শীঘ্রই ব্রিজের দু’পাশের সংযোগ সড়কের জন্য জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া শুরু হবে।

শত বছরের পুরনো উটতলী গুদারাঘাটে ব্রিজ না থাকায় দুই জেলার চার উপজেলার লাখ লাখ মানুষ যুগ যুগ ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। মাত্র আধাকিলোমিটার নদীপথ নৌকা ও ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে করে পার হতে যেয়ে অনেক সময় অপচয় হয় যাত্রীদের। সরাসরি সড়ক যোগাযোগের সুবিধা থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসী। এ কারণে অনেকেই এই পথে এখন আর পাড়ি জমান না। দূরবর্তী বিকল্প সড়ক হয়ে যাতায়াত করেন তারা।

ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম সুবিদপুর ইউনিয়নের বাজপাড়-উটতলী গুদাড়াঘাটের ডাকাতিয়া নদীর উপর সেতু নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। স্থানটি ভৌগলিকভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় এখানে ব্রিজ নির্মাণ হলে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ এবং লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ ও রায়পুর উপজেলার মধ্যে সহজ ও সংক্ষিপ্ত সড়ক যোগাযোগের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

জনসাধারণের দাবি প্রেক্ষিতে ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অবশেষে সেখানে স্বপ্নের সেতু বাস্তবায়ন হতে চলছে। এখানে ১০৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৫০ মিটার দৈর্ঘ্যর একটি সেতু নির্মাণের প্রকল্প সম্প্রতি একনেকে অনুমোদিত হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সংসদ সদস্যের পাশাপাশি ওই এলাকার কৃতি সন্তান সরকারের সদ্য সাবেক পরিকল্পনা সচিব নুরুল আমিনেরও ভূমিকা ছিল।

সেতুর প্রকল্প পরিচালক মোঃ এবাদত আলী আশা করছেন, ডাকাতিয়া নদীর উপর নির্মিতব্য এই সেতুর কাজ শুরু হবে আগামী জুন-জুলাইর দিকে। ২০২৩ সালের জুন মাসের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন তিনি।

সাবেক পরিকল্পনা সচিব মোঃ নূরুল আমিন জানান, এই সেতু নির্মিত হলে চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার ৪টি উপজেলার মানুষ উপকৃত হবে।

শনিবার সেতু এলাকা পরিদর্শনে আসেন স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, আপনাদের এই স্বপ্নের সেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একনেকে ১০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে পাশ করিয়ে আমাকেসহ আপনাদেরকে ধন্য করেছেন। তাই ফরিদগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাই। তিনি আমার এ দাবি পূরণ করে আপনাদেরকে সম্মানিত করেছেন। সেতুটি বরাদ্দের পেছনে সাবেক পরিকল্পনা সচিব নূরুল আমিন বিশেষভাবে সহযোগিতা করায় তাকেও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি আপনাদের কাছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া চাই। আমার বর্তমান মেয়াদকালে যেন সেতুটির কাজ সম্পন্ন করে জনগণের যাতায়াতের জন্য উদ্বোধন করতে পারি সেই চেষ্টা চলছে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের চাঁদপুরস্থ নির্বাহী প্রকৌশলী ইউনুছ বিশ্বাস, ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ শহিদ হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি খাজে আহমদ মজুমদার, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান, যুগ্ম আহ্বায়ক হেলালউদ্দিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন পাটওয়ারী, পৌর যুবলীগের সভাপতি আব্দুল গাফফার সজিব, সাবেক প্যানেল পৌর মেয়র মোঃ খলিলুর রহমান প্রমুখ।

স্থানীয় জনগণ দ্রুত সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু এবং নির্ধারিত সময়ে তার সমাপ্তি চান। এতে আবারো সচল হবে শত বছরের পুরনো এই সড়ক রুট।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)