Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

হাজীগঞ্জে পূজামন্ডপে হামলার ঘটনায় জামায়াত নেতার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মন্দিরে হামলা ও পুলিশের সাথে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িত থাকার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন জামায়েতে ইসলাম নেতা ও সাবেক হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রশিবির সভাপতি মো. কামাল উদ্দিন আব্বাসী। বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক কামাল উদ্দিনের কাছে এই জবানবন্দী দেন। পরে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ।

এর আগে বুধবার রাতে কামালকে হাজীগঞ্জ থেকে আটক করা হয়। পরে পুলিশের দায়েরকৃত মামলায় গ্রফতার দেখানো হয় তাকে। পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, হাজীগঞ্জে পূজা মন্ডপ ভাংচুর ও পুলিশেরর উপর হামলার ঘটনায় মোট ১০টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এরমধ্যে পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা দায়ের করেছে। বাকী ৮টি মামলা ক্ষতিগ্রস্থ পূজামন্ডপ কর্তৃপক্ষ দায়ের করেছেন। এসব মামলায় এজারভুক্ত ৭জনসহ আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতনামা প্রায় পাঁচ হাজার জনকে।

এই ঘটনায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মোট ২৯জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উস্কানীমূলক কর্মকান্ডের জন্য ৩জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি বলেন, ঘটনার সময় বিভিন্ন স্থানে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে জড়িতদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।

হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারুনুর রশিদ বলেন, ঘটনা সময়ে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে যাচাই-বাছাই করে এবং গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ আরো অনেক অভিযুক্তের নাম পাওয়া গেছে। আমাদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে এই ঘটনায় ১৪ অক্টোবর বৃহস্পতিবার চাঁদপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে গঠিত তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা থাকলেও, সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে আরও সময় চেয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি বলেন, ঘটনার তদন্তে পাঁচ সদস্যের কমিটিকে এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছিল। তবে তারা আরও সময় চেয়েছে। তদন্তের স্বার্থে তাদেরকে আরও সময় দেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১৩ অক্টোবর বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে কুমিল্লায় কুরআন অবমাননার প্রতিবাদে তৌহিদী জনতার ব্যানারে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার একটি মিছিল বের করে। এ সময় সেখান থেকে কে বা কারা মন্দিরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ বেধে যায়।

এ সময় হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার লক্ষ্মী নারায়ণ জিউর আখড়া (ত্রিনয়নী), দি বিবেকানন্দ বিদ্যাপীঠ মন্দির, পৌর মহাশ্মশান, জমিদার বাড়ীসহ কয়েকটি পূজা মন্ডপে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গুলি নিক্ষেপ করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৫ জন নিহত হয়েছে।

ঘটনার পরে শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ জাতীয় সংসদের হুইপ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি, জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনসহ স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

শেয়ার করুন
Exit mobile version