Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

অনৈতিহাসিক : প্রধানমন্ত্রীর কাজ প্রধানমন্ত্রী করছেন ।। আমাদেরও অনেক কাজ

মুহম্মদ শফিকুর রহমান :

সরকারের যা যা কাজ সবই সরকার করছেন।। নাগরিক হিসেবে আমাদেরও অনেক কাজ এবং তা আমাদেরই করতে হবে। ছোট বড়, ধনী-দরিদ্র, ছেলে-মেয়ে, বুড়ো-বুড়ি, ছাত্র-শিক্ষক, ইমাম-মুসল্লি যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। আমাদের কি কি করতে হবে সরকার তথা স্বাস্থ্য ধর্ম প্রভৃতি মন্ত্রণালয় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সব জানিয়ে দিয়েছেন এবং দিচ্ছেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা যেভাবে কোভিড ১৯ বা করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় তার গোটা প্রশাসন সাথে নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন এটি কেবল মুক্তিযুদ্ধকালীন জাতির পিতার কালজয়ী নেতৃত্ব এবং তার নেতৃত্বাধীন মুজিবনগর সরকারের সাথেই তুলনীয় হতে পারে। তিনি কেবল বাঙালি জাতি এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছেন না, তার নেতৃত্ব তাবৎ বিশ্ববাসীর কাছেও উদাহরণ হয়ে থাকবে আরো অনেকের মত। তিনি তার কাজ শতকরা একশভাগ সম্পন্ন করছেন, নাগরিক হিসেবে আমাদেরও আমাদের কাজ করার সময়। একাত্তরে অনেকেই মুক্তিযুদ্ধে গেছেন অনেকে যাবার সুযোগ পাননি, অনেকে সুযোগ পেয়েও যাননি, এবার কিন্তু তাদের প্রায়শ্চিত্য করার সুযোগ এসেছে। ‘এখন যৌবন যার’ তাকে যে সাহায্যের থলি নিয়ে মানুষের দ্বারে দ্বারে যেতে হবে। ছোট-বড়, ধনী-দরিদ্র, ছাত্র-শিক্ষক, ইমাম-মুসল্লি যার যার অবস্থান থেকে কাজ করতে হবে। যারা বয়ঃবৃদ্ধ এবং জটিল রোগে ভুগছেন, ঘর থেকে বের হতে পারছেন না তারাও সামর্থ্য অনুযায়ী অর্থ সাহায্য বা টেলিফোনের মাধ্যমে সেবা দিতে পারেন। এটি মুক্তিযুদ্ধের মত। ব্যতিক্রম হলো এক অদৃশ্য শক্তির বিরুদ্ধে লড়তে হচ্ছে। এমন ব্যাধি যার কোন প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কার হয়নি, স্বাস্থ্যবিভাগের ইনস্ট্রাকশন অনুযায়ী সচেতন ও নিয়ন্ত্রিত জীবন যাপনের মাধ্যমে এই বিপর্যয় থেকে পরিত্রান সম্ভব।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা বাংলাদেশের জনগণ বরাবরের মতো কৃতজ্ঞ এজন্যে এই বিপর্যয়ের মধ্যেও তিনি সাহসের সাথে মোকাবেলা করছেন কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের সমৃদ্ধ অর্থনীতিক যেভাবে অব্যাহত গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, সব শ্রেণী-পেশার মানুষের জীবনমান যেভাবে উন্নত করে চলছিলেন, করোনা বিপর্যয় যাতে সেই গতি থামিয়ে দিতে না পারে সেজন্য আগাম ব্যবস্থা করেছেন। বিশ্ববাসী আগে থেকেই জানেন ও বিশ্বাস করেন তিনি দূরদর্শী স্বপ্নচারী। স্বপ্ন দেখেন অনেক দূর পর্যন্ত, তাও যাতে ব্যাহত না হয় তারও প্রতিরোধক এবং প্রতিশেধক ব্যবস্থা করেছেন।জাতির উদ্দেশ্যে একটার পর একটা প্রেস কনফারেন্স, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার কর্মপরিকল্পনা মানুষকে জানিয়ে দিচ্ছেন। প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছেন।

বস্তত এ বিপর্যয়ের গভীরতা এবং ব্যাপ্তি এত বেদনাদায়ক যে কোন একদেশ বা একটি সমাজের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারছে বা ভবিষ্যতে পারবে। এ যে এক অদৃশ্য দানবের বিরুদ্ধে যুদ্ধ। হাওয়ার বিরুদ্ধে মানুষের সংগ্রাম। কোভিড ১৯ বা করোনা ভাইরাস একটিমাত্র অস্ত্র যার বিরুদ্ধে গোটা বিশ্বের সাতশ কোটি মানুষ যুদ্ধে অবতীর্ণ। বিশ্বের অস্ত্রবাজ দেশ যাদের মোড়লিপনায় গোটা বিশ্বের সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে চুরে খানখান, তাদের শত শত যুদ্ধবিমা্‌ হাজারো সাবমেরিন, দূরপাল্লার মিসাইল এককথায় তারাও সদরঘাটের ছিন্নমূল সখিনা বিবি বা হরিদাসীর মত অসহায়। সচিবালয়ের হরিপদ কেরানি এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে আজ আর কোন তফাত নেই। সব একাকার সব তিন ফুট দূরত্ব সৃষ্টি করে এক সাহায্যের কাতারে দাঁড়িয়ে। তফাত শুধু নেই হরিপদ কেরানির মতো ট্রাম্পের অন্নের অভাব নেই। অথচ আমেরিকা ব্রিটেনসহ বড় বড় দেশ ভয়ঙ্কর সব মারণাস্ত্র চালিয়ে ইরাক,আফগানিস্থান,সিরিয়া, ফিলিস্তিন, ভিয়েতনাম কত মানুষ হত্যা করেছে আমেরিকার সেইসব অস্ত্র পরম পরাক্রমশালী ব্রিটিশরাজের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনগণ করোনায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দশদিন আইসোলেশন থাকার পর আজ থেকে আইসিইউ-তে আছেন। ব্রিটিশ ডাক্তাররা তার যমের বিরুদ্ধে লড়াই করছেন, রোগের ট্রিটমেন্টের-তো কোনো সুযোগই নেই। এটি একটি উদাহরণ মাত্র। খবর বেরিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকোয়েডরের রাস্তায় রাস্তায় লাশের পর লাশ পড়ে আছে। শুনেছি চীনে পেট্রোল ছিটিয়ে করোনা ভিকটিমদের পুড়িয়ে দেওয়া হয়, এখানে কি হয় না হয় সবই আল্লাহ রাব্বুল আলামীন দেখবেন। একটা জিনিস লক্ষ্য করছি সোশ্যাল মিডিয়ার অনেক কুশীলবই এখন অনুপস্থিত। কেবল মাঝে-সাজে একটা নতুন কথা শোনা গেছে, আমৃত্যু কারাভোগী রাজাকার দেলোয়ার হোসেন সাঈদীকে কারাগারে রাখায় এই গজব নেমেছে(?) তারা কিন্তু সাঈদীর নারী নির্যাতন এবং গণহত্যায় পাকিস্তানিদের সহযোগিতার (যা বিচার চলাকালীন সামনে আসে) কথা বলেনা। আরেকটি দিক হলো টক-শো, তাতে যেমন সো-কলও বাম নারী-পুরুষ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আদব বিহীন অধ্যাপক (শিক্ষকতো তা-ই বেআদব বললাম না) এই দুর্যোগের মধ্যেও এমন সব কথা বলেন যেন ওদের কাউকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বানানো গেলে এক ঘণ্টার মধ্যে বাংলাদেশকে করোনা মুক্ত করতে পারবেন। অন্তত তাদের কারো কারো কথা শুনলে এমনি মনে হয়। এক নারী নেত্রীকে বলতে শোনা গেল শতকরা ৮০ ভাগ এমপি টাকার পাহাড়ের ওপর বসে আছেন এবং কথার সারসংক্ষেপ হলো এমপিরা দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার পাহাড় গরে কানাডা অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি করছেন, শ্রমিকের পাওনা দিচ্ছেন না। তবে তার মধ্যেও এমপি হবার একটা প্রচণ্ড মনোবাঞ্ছা কাজ করে। কেবল টাকার জন্য হতে পারছেন না। তারপরও এই দুর্যোগের দিনে এর চেয়ে বেশি বলতে চাই না। বলেও কোন লাভ নেই এদের চরিত্র কোনদিন পাল্টাবেনা।
আগেই বলেছি যারা বাঙালি জাতির ইতিহাসের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠতম ঘটনা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয় অর্থাৎ অস্ত্র হাতে নিয়ে পাকিস্তানি বর্বর মিলিটারি জান্তার বিরুদ্ধে গুলি চালানো এবং যারা যাবো কি যাবো না ভাবতে ভাবতে যুদ্ধই শেষ হলো এবং আমরা বিজয়ের পতাকা উঠালাম। ওরা সাইড লাইনে দাড়িয়ে আফসোস করতে করতে জীবন শেষ করলো অথবা জীবন সায়ান্নে উপনীত। এদের জন্য অর্ধশতাব্দী পর নিজেদের ব্যর্থতার গ্লানি মোছাবার এই সুযোগ এসেছে। এবার তারা করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নিতে পারেন। এ যুদ্ধে অস্ত্র ধরতে হবে না। কেবল এই জাতীয় যারা যুদ্ধে না গিয়েও যুদ্ধের ফসল স্বাধীনতার সুযোগ-সুবিধা ঘরে তুলেছেন, অঢেল বিত্তের মালিক হয়েছেন, এই সুযোগে তারা অর্থের থলি নিয়ে গ্রামে যেতে পারেন অথবা মহানগরীর বস্তি বা ছিন্নমূল মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে পারেন।

আমি স্বাধীনতা বিরোধীদের কথা বলছি না।রাজাকার কিংবা রাজাকারের বাচ্চারা কোন দিন স্বাধীনতার পক্ষে আসবেনা তবে স্বাধীনতার পক্ষের মধ্য থেকে রাজাকার হতে দেখা গেছে। রাজাকাররা বাপকে মেরে ফেলেছে তার সন্তানও এখন টকশোতে বসে জামাত শিবিরের পক্ষে সাফাই গায়।এমনকি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে ফাঁসির দণ্ড কার্যকর হওয়া যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কথা বলছে। এমন কথাও বলছে যে ইসলামকে দেশ থেকে উৎপাটনের লক্ষ্যে তাদের ফাঁসি দেওয়া হয়েছে।

যে কথা বলছিলাম, বিত্তবানরা এগিয়ে এলে অন্তত কিছুটা হলেও মানুষের কষ্ট লাঘব হবে। যারা ছোট ব্যবসায়ী, দোকানদার, দিনমজুর, রিকশাচালক অর্থাৎ এই গরীব মানুষদের এখন কাজ নেই। কাজ নেই গার্মেন্ট শ্রমিকদের যাদের ৯০ ভাগই নারী। এরা সামান্য বেতনে কাজ করে, এ থেকে ঢাকায় নিজে চলে, মা-বাবা কিংবা শ্বশুর-শাশুড়িকে টাকা পাঠায়। গার্মেন্টস মালিকরা বিত্ত-বৈভবের দিক থেকে অনেক এগিয়ে কিন্তু লোক গুলো মনের দিক থেকে খুবই পিছিয়ে। এই ক্রাইসিসে তারা কি করবে তা দেখার বিষয়।আর যারা নিজের থেকে অর্থ খরচের ক্ষমতা রাখেন না তারা অন্তত সামাজিক দায়িত্বটুকু পালন করতে পারেন। মানুষকে বোঝাতে পারেন:
• বারে বারে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। বিশেষ করে তরুণ যুবকরা ছাত্ররা এই কাজটা করতে পারেন। এই কোভিড ১৯ বা করোনা ভাইরাস শতকরা ১০০ ভাগ ছোঁয়াচে রোগ, সহজেই একজনের শরীর থেকে অন্যের শরীরে চলে যাচ্ছে। আজরাইল ফেরেশতা যেমন অদৃশ্যভাবে জীবন নিয়ে যাচ্ছে করোনাও তাই। যে কোন সাবান দিয়ে হাত ধোয়া যাবে।
• বাড়ি থেকে বের হলে অবশ্যই মাক্স ব্যবহার করতে হবে
• হাতে গ্লাভস পরে বেরোতে হবে
• তিন ফুটের ব্যবধান রেখে পথ চলতে হবে কোনভাবেই বাজারে বা চলার পথে গায়ে গা লাগানো যাবে না
• ভিটামিন-সি যেমন লেবু, জাম্বুরা, টমেটো ইত্যাদি খেতে পারলে ভালো
এইসবই মোটিভেশন ওয়ার্ক।তরুণ সমাজ নিজেরা মাক্স গ্লাভস পরে এবং বারেবারে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ এই মোটিভেশন ওয়ার্ক করতে পারেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও প্রথম থেকে এই কাজগুলো করার জন্য জাতির প্রতি বারবার আহবান জানিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলন এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কেবল আহবান জানিয়েই ক্ষান্ত হননি একই সঙ্গে প্রথমবার পাঁচ হাজার কোটি টাকা এরপর গত ৫ তারিখ ৭২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন। একই সঙ্গে এই টাকার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার ওপর জোর দিয়েছেন। ওভার এনভয়েসিং আন্ডার এনভয়েসিং করে কেউ টাকা আত্মসাৎ করতে পারেন তারই সর্তকতা। একই সঙ্গে ডাক্তার নার্সসহ যেসব সরকারি কর্মচারী ঝুঁকি নিয়ে করোনা শনাক্তকরণ ও চিকিৎসা কাজে অবদান রাখছেন তাদের পুরস্কৃত করার কথাও বলেছেন।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটাও বলেছেন এইসব ক্ষেত্রে কোন রকম অবহেলা দুর্নীতি একেবারেই কাম্য নয়।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই এপ্রিল মাসটাকে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। গত মঙ্গলবার ৭ এপ্রিল দেশে ৪১ জন আক্রান্ত হয় এবং ৫ জন মারা যায়। এই নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১৬৪ এবং মৃত ১৭ জন।

এই চিত্র পৃথিবীজুড়ে।আমেরিকা, ব্রিটেন, জার্মানি, ফ্রান্স, চীন, কানাডার মতো শক্তিশালী দেশে আক্রান্ত এবং মৃতের সংখ্যা আরও বেশি। এই কারণেই সামাজিক প্রতিরোধ সবচেয়ে বেশি জরুরি। আমার নির্বাচনী এলাকা ২৬৩ চাঁদপুর-০৪ এভাবেই কাজ হচ্ছে। খাজে আহমদ মজুমদার, মাহফুজুল হক, আবু সুফিয়ান, হেলালউদ্দিনের নেতৃত্বাধীন তরুণ ও যুব নেতা-কর্মীরা প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে ত্রাণ কাজে যেমন নিজেদের নিয়োজিত করেছেন তেমনি ব্যাপকভাবে মোটিভেশন ওয়ার্ক চালিয়ে যাচ্ছেন।

ইনশাআল্লাহ এই বিপদ থেকেও আমরা রক্ষা পাবো বলে আশা করি। রাতের অন্ধকার ভেদ করে দিনে সূর্য উঠবেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও এই আশা ব্যক্ত করে বলেছিলেন ১৮২০, ১৯২০, ২০২০ অর্থাৎ প্রতি ১০০ বছর পর পর এরকম বিপর্যয় এসেছে আবার কেটেও গেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দুর্ভিক্ষেও অনেক মানুষ মারা গেছে। বিশ্বের মানুষ তা থেকেও উঠে দাঁড়িয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কৃপায় আমরাও দাঁড়াতে পারবো।প্রয়োজন শুধু যার যার অবস্থান থেকে সাহায্যের হাত বাড়ানোর।।

ঢাকা- ০৮ এপ্রিল ২০২০
লেখক- এমপি
সদস্য- মুজিববর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটি
সাবেক সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক, জাতীয় প্রেসক্লাব
ই-মেইল- balisshafiq@gmail.com

Exit mobile version