Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

চাঁদপুরে অবৈধভাবে রেললাইন বিক্রি!

কবির হোসেন মিজি
চাঁদপুরে অবৈধভাবে রেলওয়ের ৮ টি রেলবিট (রেললাইন) বিক্রি করেছে ৫নং খেয়াঘাট এলাকার চট্টগ্রাম লোহা বিতানের ব্যবসায়ী মৃদুল কান্তি দাস। মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাঁদপুর শহরের ৫নং খেয়াঘাট এলাকার রেললালাইনের পাশে এ ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চালালে তার সত্যতা পাওয়া যায়।

চাঁদপুর রেলওয়ের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে তার সত্যতা পান। তারা জানান, যেসব রেলবিটগুলো বিক্রয় করা হয়েছে এবং যেটি ওয়ার্কসপে রয়েছে, একই মানের রেলবিট বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের রয়েছে। এই ঘটনায় চাঁদপুর রেলওয়ে থানায় মামলার এজাহার দায়ের করার প্রস্ততি নিয়েছেন রেলওয়ে কৃর্তপক্ষ।

জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে চাঁদপুর শহরের ৫নং খেয়াঘাট এলাকার চট্টগ্রাম লোহা বিতান নামের লোহা ব্যবসায়ী মৃদুল কান্তি দাস চাঁদপুর রেলওয়ের দীর্ঘ দিনের পুরনো ৭টি রেলবিট অবৈধভাবেভাবে এক স’মিল ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৫নং খেয়াঘাট এলাকা থেকে ৭টি রেলবিট দুটি ভ্যানে করে সেখান থেকে ইচলীঘাটের একটি নবনির্মিত স,মিলের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অপর একটি রেলগেট ৫নং ঘাটের একটি ওয়াকর্সপে নিয়ে রাখেন।

স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা ওই রেললবিট গুলো ৫নং ঘাট এলাকার রেললাইনের পাশে পড়ে থাকতে দেখেন। তারা জানেন যে ব্যবসার জন্য সেগুলো স্থানীয় ব্যবসায়ী মৃদুল কান্তি দাস চট্টগ্রাম থেকে ক্রয় করে আনার কারণে সেগুলো তিনি তা এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন। কিন্তু সেগুলো কি রেলওয়ের, নাকি তার ব্যবসার জন্য চট্টগ্রাম থেকে ক্রয় কৃত তারা তা সুস্পষ্ট ভাবে কিছুই জানেন না।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত লোহা ব্যবসায়ী মৃদুল কান্তি দাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে রেলগেটগুলো বিক্রি করা হয়েছে সেগুলো চাঁদপুর রেলওয়ের নয়। সেগুলো টলির রেললাইন। যা দিয়ে বড় বড় জাহাজ উঠা নামা করা হয়। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে চাঁদপুরে লোহা ব্যবসা করে আসছি। রেলবিট গুলো আমি ব্যবসার উদ্দেশ্যে দীর্ঘদিন পূর্বে চট্টগ্রাম থেকে ক্রয় করে এনেছি। যার ক্রয়ের রশিদ ও আমার কাছে রয়েছে। এই বলে তিনি রেল লাইন গুলো বৈধতা প্রমাণ করতে ২০১৫ সাল এবং ২০১৯ সালের দুটি রশিদ উপস্থাপন করেন। যা বিক্রয়কৃত রেললাইন গুলোর সাথে তেমন মিল খুঁজে পাওয়া যায়নি।

অথচ অনুসন্ধান করে জানা গেছে রেলওয়ের রেললাইন বৈধভাবে ক্রয়কৃত লোহা জাতীয় বস্তু তিন মাসের মধ্যে তা বিক্রি করে ফেলা কিংবা সেগুলো আগুনে গলিয়ে বিক্রি করার নিয়ম রয়েছে।

এদিকে খবর নিয়ে জানা গেছে, অবৈধভাবে বিক্রি করা ওইসব রেললাইন গুলো গত কয়েক বছর ধরে ৫নং খেয়াঘাট এলাকায় রেললাইনের পাশেই পড়ে রয়ে ছিলো। আর সেগুলোই তিনি মঙ্গলবার বিকেলে কৃর্তপক্ষের অগোচরে এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেন।

এ বিষয়ে চাঁদপুর রেলওয়ের হাবিলদার খোরশেদ আলম জানান, ওইসব রেললাইন গুলোর বিষয়ে আমি তাদের কাছে গেলে এবং এ নিয়ে জানতে চাইলে তারা সেগুলো টলির লাইন ক্রয় করেছেন বলে আমাকে একই কথা বলেন। এবং সেগুলো ক্রয়ের দুটি কাগজ তারা আমার কাছে জমা দিয়েছেন। সে কাগজে রেলওয়ের কোন চিহ্ন নেই।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের লাকসাম ঊর্ধ্বতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ঘটনার বিষয়টি জানতে পেরে তা যাচাই করার জন্য আমি ঘটনাস্থলে রেলওয়ের লোকজন পাঠিয়েছি। এবং তারা সেখানে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়েছেন। এ বিষয়ে আমরা চাঁদপুর রেলওয়ে (জিআরপি) থানায় মামলার এজহার দাঁড় করিয়ে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে অবৈধভাবে বিক্রিকৃত রেলবিট গুলো জিআরপি থানায় নিয়ে আসা হবে। একই সাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলার মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Exit mobile version