Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

চাঁদপুরে আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে শিশু ও বিয়ের প্রলোভনে গৃহবধূকে ধর্ষণ

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরের কচুয়া ও মতলব উত্তরে পৃথক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে কচুয়ায় আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। ধর্ষক আটক হয়েছে। আর মতলব উত্তরে বিয়ের প্রলোভনে ডেনে এনে এক গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় ধর্ষণের মূল পরিকল্পনাকারীকে আটক করা হয়েছে।

কচুয়া থেকে আমাদের প্রতিনিধি সুজন পোদ্দার জানান, কচুয়ায় আইসক্রিমের লোভ দেখিয়ে ৬ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই ঘটনায় রোববার রাতে অভিযুক্ত ধর্ষক রাসেল (১৮)কে গ্রেপ্তার করেছে কচুয়া থানা পুলিশ।

ধর্ষণের শিকার শিশু উপজেলার কড়ইয়া ইউনিয়নের বড় হায়াতপুর গ্রামের মোঃ জামাল হোসেনের মেয়ে। এই ঘটনায় রোববার শিশুটির বাবা বাদী হয়ে কচুয়া থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। মামলা নং ০৫, তারিখ ০৮/০৬/২০২০ইং।

মামলার এজাহারে মেয়েটির বাবা উল্লেখ করেন গত ৭ জুন দুপুরে বিবাদী রাসেল হোসেন আমার শিশু মেয়ে ও একই বাড়ির আরেক শিশু মেয়েকে আইসক্রিম কিনে দিবে বলে লোভ দেখিয়ে ধইঞ্চা ক্ষেতে নিয়ে যায়। ওই সময় অন্য শিশু মেয়েটিকে ক্ষেতের বাইরে রেখে আমার মেয়েকে ক্ষেতের ভিতর নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

ধর্ষণকালে শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে লোকজন এগিয়ে আসে। তাৎক্ষণিক ধর্ষক রাসেল পালিয়ে যায়। আমার মেয়ে অবুঝ, তার বয়স মাত্র ৬ বছর। তাকে আইসক্রিমের প্রলোভন দেখিয়ে রাসেল আমার এই শিশু বাচ্চাটিকে নির্যাতন করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এ ঘটনায় স্থানীয় মেম্বার মোঃ মানিক মিয়া জানান, ধর্ষণের শিকার শিশুর বাবা এ ব্যাপারে আমাকে অবগত করলে আমি দ্রুত কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জকে জানাই। তাৎক্ষণিকভাবে অফিসার ইনচার্জ ফোর্স পাঠিয়ে ধর্ষক রাসেলকে গ্রেফতার করে।

কচুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালী উল্লাহ (অলি) জানান, এই ঘটনায় শিশুটির বাবা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছে। ধর্ষক রাসেলকে গ্রেপ্তার করে চাঁদপুর আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। শিশুটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

অন্যদিকে মতলব উত্তর থেকে আমাদের নিজস্ব প্রতিনিধি জানান, এক গৃহবধূকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে উঠিয়ে এনে ধর্ষণ করার পর তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে সাত বন্ধু। ধর্ষণের পর ওই গৃহবধূ বিয়ের প্রস্তাব দিলে কেউই রাজি হয়নি। হত্যার পরিকল্পনা টের পেয়ে কৌশলে ওই গৃহবধু বেঁচে আসার পর ঘটনাটি ফাঁস হয়।

ঘটনাটি ঘটেছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার নওদোনা গ্রামে। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চ্যল্যের সৃষ্টি হয়েছে। পরে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনার প্রধান পরিকল্পনাকারী নওদো গ্রামের মতিন বেপারীর ছেলে জনিকে আটক করেছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ওই গৃহবধূ সাবিনা আক্তার তার শ্বশুড় বাড়ি বদরপুর গ্রামে থাকতেই জনির সাথে যোগাযোগ হতো। কিছুদিন আগে সে তার পিতার বাড়ি কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দিতে চলে যায়। গত ৫ জুন দুপুরে জনি তাকে মুঠোফোনে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ডেকে আনে মতলব উত্তরের নওদোনা গ্রামে।

নিশ্চিন্তপুর স্কুলের পশ্চিম পাশের আয়েত আলী বেপারীর পরিত্যক্ত বাড়িতে রেখে তাকে জনি ও তার ৬ বন্ধু নওদোনা গ্রামের নুরু পাঠানের ছেলে শাহাদাত, পাঠানচক গ্রামের নিজাম মীরের ছেলে রাব্বি, ব্রাহ্মনচক গ্রামের জলিল ঢালীর ছেলে বাবু ঢালী, নওদোনা গ্রামের তাজুলের ছেলে এনামুল, ভাইগারচক গ্রামের আমিনুলের ছেলে শুভ ও নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ইব্রাহিম সরকারের ছেলে রায়হান সরকার মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে।

সাবিনা বিয়ের প্রস্তাব করলে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। বিষয়টি সে বুজতে পেরে গত ৬ জুন বিকেলে নিশ্চিন্তপুর স্কুল মাঠে এসে ডাক-চিৎকার দিলে ঘটনাটি ফাঁস হয়। পরে জনির দাদা রহমান বেপারীর জিম্মায় মেয়েটিকে রাখা হয়। পরদিন ৭ জুন সকালে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ও জনিকে আটক করে।

মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নাসির উদ্দিন মৃধা বলেন, মেয়েটিকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে এনে ধর্ষণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় সাবিনা আক্তার বাদী হয়ে ধর্ষণ ও অপহরণ আইনে থানায় মামলা দায়ের করেছে। মামলা নং-০৮, তারিখ ০৮/০৬/২০২০।

Exit mobile version