Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

চাঁদপুরে করোনার উপসর্গে স্বামী-স্ত্রীসহ ৪জনের মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর জেলায় ২ দিনের ব্যবধানের করোনার উপসর্গ নিয়ে ৪জনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হচ্ছেন- চাঁদপুর শহরের চিত্রলেখা এলাকার স্বামী-স্ত্রী, কচুয়ার স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা এবং চাঁদপুর জেলা পরিষদের একজন মহিলা সদস্য। তাদের ২জনের নমুনা মৃত্যুর আগে ও অন্য ২জনের নমুনা মৃত্যুর পর সংগ্রহ করা হয়েছে। রিপোর্ট আসলে জানা যাবে তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। তবে করোনার উপসর্গে মৃত্যুর ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অবশ্য সে তুলনায় রাস্তায় চলাচলকারীদের তেমন সচেতন দেখা যাচ্ছে না।

আমাদের কচুয়া প্রতিনিধি সুজন পোদ্দার জানান, কচুয়া উপজেলার পালগিরি গ্রামের বাসিন্দা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মানিক সরকার (৫০) করোনার উপসর্গ নিয়ে ঢাকা থেকে ফিরে নিজ বাড়ি আসলে তার মৃত্যু হয়। তিনি কয়েকদিন যাবৎ সর্দি, কাশি, জ্বর ও শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। এমনি উপসর্গ নিয়ে গত শুক্রবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে নিজ বাড়ি আসেন তিনি। সোমবার দিবাগত রাতে তার নিজ বাড়িতেই মারা যান তিনি।

এ বিষয়ে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সালাউদ্দিন মাহমুদ বলেন, আমরা মৃত ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছি। মঙ্গলবার সকালে উপজেলা দাফন কমিটি, অফিসার ইনচার্জের প্রতিনিধি এসআই তাজুল ইসলামসহ তার ফোর্স, হাসপাতাল প্রতিনিধিসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়েছে।

এদিকে চাঁদপুর শহরের চিত্রলেখা মোড় এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া বেগম (৭২) করোনার উপসর্গ নিয়ে সোমবার সন্ধ্যা ৭টা ২৫ মিনিটের দিকে মারা গেছেন। রোববার সকালে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল করোনা টেস্টের জন্য। সেই রিপোর্ট এখনো অপেক্ষমান। এ কারণে রাতে তাকে আশিকাটিস্থ তাদের গ্রামের বাড়িতে বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়েছে। রাবেয়া বেগমের মৃত্যুর সাড়ে ৯ ঘন্টা পর এবং দাফনের দেড় ঘন্টা পর মঙ্গলবার ভোর ৫টায় মারা যান তার স্বামী মজিবুর রহমান (৮৭)। তারও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে রোববার। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। তাকেও বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়েছে।

জানা গেছে, ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধার ছেলে ও নাতির করোনা শনাক্ত হয়েছে গত ১৩ এপ্রিল। এ কারণে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে মজিবুর রহমান ও রাবেয়া বেগমেরও নমুনা সংগ্রহ করা হয় রোববার। রিপোর্ট আসার আগেই তারা দু’জন মারা গেলেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, বৃদ্ধ-বৃদ্ধার ছেলে ও নাতির শরীরে ইতিমধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে। বাকীদের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। বৃদ্ধার মধ্যেও করোনার উপসর্গ বিদ্যমান ছিল। তিনি কিছুদিন ধরে জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত ছিলেন। আর সোমবার দিনভর তার প্রচুর পাতলা পায়খানা হয়েছে। মজিবুর রহমানও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন। রিপোর্ট আসলে জানা যাবে তারা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা।

উল্লেখ্য, তাদের ছেলে আনোয়ার হাবিব কাজল ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের সহকারী পরিচালক। পরিবারের পক্ষ থেকে আনোয়ার হাবিব কাজল তার বাবা-মায়ের জন্য দোয়া চেয়েছেন।

এর আগে রোববার রাতে চাঁদপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মরহুম লুৎফুর রহমান পাটওয়ারীর স্ত্রী, চাঁদপুর জেলা পরিষদের সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য খোদেজা রহমান মারা গেছেন। তিনি জ্বর ও ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছিলেন। জ্বর, ঠান্ডা করোনার উপসর্গ হিসেবে বিবেচ্য হওয়ায় সন্দেহভাজন রোগী হিসেবে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এরপর বিশেষ ব্যবস্থায় সোমবার সকালে তাকে দাফন করা হয়েছে।

চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, করোনার উপসর্গ থাকায় মৃত্যুর পর মৃতের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং তাকে বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়েছে। রিপোর্ট আসলে জানা যাবে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা।

Exit mobile version