Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

চাঁদপুরে করোনায় মৃত স্বামীর লাশ তিন দিন ধরে পাহারায় স্ত্রী!

জহিরুল ইসলাম জয় :
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকায় তিন দিন ধরে স্বামীর লাশকে পাহারা দিয়ে রাখেন স্ত্রী। করোনা উপসর্গে মৃত্যু হওয়ায় তিনি মৃত্যুর বিষয়টি গোপন রেখেছেন বলে জানিয়েছন পুলিশ।

মৃত ব্যক্তি হাজীগঞ্জ বাজারের ডিগ্রী কলেজ রোডের জমিদার বাড়িতে বসবাস করতেন। তার নাম সুভাষ চন্দ্র দাস (৬৫)।
তিন দিন ধরে লাশ ঘরে রাখার পর মঙ্গলবার ওই মৃতদেহটি পৌর গোরস্থানে সৎকার করা হয়েছে।

হাজীগঞ্জ পৌর এরাকার ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুমন তপদার জানান, গত শনিবার হাজীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ রোডের একটি বাসায় সুভাষ চন্দ্র দাস মারা যায়। মৃত্যুর পর ঘটনাটি তার স্ত্রী বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় তিন দিন ধরে ঘরের দরজা বন্ধ করে রাখেন।

পরে মঙ্গলবার বিকালে পাশ্ববর্তীরা বিষয়টি টের পেয়ে ঘরের দরজা খুলতে জোর চেষ্টা চালায়। দরজা খুলে দেখেন সুভাষের মৃতদেহ পড়ে আছে আর পাশে স্ত্রী বসে আছেন। তাদের এক ছেলে দুই মেয়ে সবাই ঢাকা থাকেন। কিন্তু এমন ঘটনা সম্পর্কে সন্তানদেরবে মা কিছুই জানায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী রাজন সাহা ও পার্থ সাহা বলেন, তাদের ঘরের দরজা কয়েক দিন ধরে বন্ধ দেখতে পাই। আমরা এগিয়ে দেখি ভিতর থেকে গন্ধ বের হচ্ছে। দরজা খোলার জন্য বললে তেমন কোন সাড়া না পেয়ে আমরা একপ্রকার জোরপূর্বক দরজা ভেঙ্গে ফেলি। ঘরে ঢুকে দেখি কাপড়ে মোড়ানো স্বামীর লাশ পড়ে আছে, পাশে তার স্ত্রী বসে আছেন।

পরে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. হারুনুর রশীদ, ওসি (তদন্ত ) ইব্রাহীম খলিল ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করেন।

এ বিষয়ে স্ত্রী স্বর্ণা রানীর সাথে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি অস্বাভাবিক আচরন ও এলোমেলো বক্তব্যে দেওয়ায় সঠিক কারণ জানা সম্ভব হয়নি।

পুলিশ জানায়, মৃত ব্যক্তি করোনা উপসর্গে মারা যায়। কিন্তু জানাজানি হলে সমস্যা হতে পারে এমন ভয়ে তার স্ত্রী মৃত লাশ নিয়ে তিন দিন ঘরের দরজা আটকে পাশে বসেছিল। তবে ওই নারী মানসিক প্রতিবন্ধি বলেও ধারণা করা হচ্ছে। এদিকে ওই এলাকায় বিভিন্ন বাড়িতে প্রায় অর্ধশত মানুষ করোনায় আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

Exit mobile version