Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

পেটের তাগিদে বেরিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন চাঁন মিয়া

খান মোহাম্মদ কামাল :
পেটের তাগিদে জীবিকা নির্বাহের জন্য রিক্সা নিয়ে বেরিয়ে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন মতলব উত্তর উপজেলার এখলাছপুর ইউনিয়নের হাশিমপুর বেরীবাঁধের আশ্রয়ে থাকা হতদরিদ্র রিক্সা চালক চাঁনমিয়া। বুধবার সকালে এখলাছপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি মোড়ে দেওয়া স্পিডব্রেকার (গতিরোধ আইলেন) পার হতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। মৃত রিক্সাচালক চাঁন মিয়া হাশিমপুর গ্রামের মৃত লালুু বেপারীর ছেলে।

জানা যায়, বিশ^ব্যাপী মহামারি করোনার কারণে সরকারি নিষেধের কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছে না। প্রশাসন যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। ফলে হতদরিদ্র রিক্সাচালক চাঁন মিয়াও এতে দিন তার রিক্সা নিয়ে বের হননি। চারদিকে সরকারি খাদ্যসামগ্রী কর্মহীন পরিবার ও হতদারিদ্ররা সরকারি সাহায্য পেলেও রিক্সা চালক চাঁন মিয়া এখন পর্যন্ত ১০ দিন আগে এখলাছপুরের অ্যাড. জসিম উদ্দিন স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. নুরুল আমিন রুহুলের ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি তেল, ২ কেজি পেয়াজ, ২ কেজি আলু, ১ কেজি লবন দিয়েছেন।

এছাড়া কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি সাহায্য পাননি। স্ত্রী ও ২ মেয়ে নিয়ে তার অভাবের সংসার। সংসারের আহার জোগাতে পেটের তাগিদে বুধবার সকাল ১০টায় রিক্সা নিয়ে বেড়িয়ে যান হতদরিদ্র রিক্সাচালক চাঁন মিয়া। তিনি সকাল সাড়ে ১০টায় এখলাছপুর থেকে যাত্রী নিয়ে মোহনপুরের উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে এখলাছপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি মোড়ে দেওয়া স্পিডব্রেকার (গতিরোধ আইলেন) পার হতে গিয়ে বেরীবাঁধের গাছের সাথে গিয়ে ধাক্কা লাগে। এতে তার মাথা ও বুকে আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। অপর যাত্রী আহত হন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার এএম জহির”ল হায়াত বলেন, এখলাছপুর ইউনিয়নের নয়াকান্দি মোড়ে দেওয়া স্পিডবেকার (গতিরোধ আইলেন) পার হতে গিয়ে এ দুর্ঘটনার ঘটনাটি দুঃখজনক। রিক্সাচালক চাঁন মিয়া এখন পর্যন্ত খাদ্যসামগ্রী অবস্যই পাওয়ার কথা। কি কারণে সে পায়নি। ঘটনাটি সত্যতা আমি যাছাই করে বলতে পারবো। আমি বিষয়টি জেনে ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবকে নির্দেশ দিয়েূছি ইউনিয়ন ভিত্তিক যে কর্মহীনদের যে তালিকা করা হয়েছে সে তালিকায় তার নাম অর্ন্তভূক্ত হয়েছে কিনা তা যাছাই করার জন্য। নিহত রিক্সাচালকের বাড়িতে খাদ্যসামগ্রী নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান ও সচিবকে বলা হয়েছে। তাছাড়া আমরা উপজেলা প্রশাসন প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি যাতে করোনা ভাইরাসের কারণে কোনো কর্মহীন অসহায় বা হতদারিদ্ররা না খেয়ে কষ্টে দিনযাপন না করতে হয়। এ জন্য সবাইকে আমাদের নাম্বারও দেওয়া হয়েছে। এই নাম্বারে ফোন করলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী ঘরে ঘরে পৌছে যাবে। ইতিমধ্যে আমারা থাদ্যসামগ্রী পৌছেও দিচ্ছি। রিক্সাচালকের ঘরে খাবার শেষ বা নেই এটি ইউিপি চেয়ারম্যান, মেম্বারকে জানাতে হবে। তার মৃত্যুতে তিনি ওই পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান।

এখলাছপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন মুরাদ মুঠোফোনে বলেন, ইউনিয়ন ভিত্তিক যে কর্মহীনদের তালিকা হেেয়ছে সে তালিকায় তার নাম আছে। আমার ইউনিয়নে ১ হাজার ২৯ জন কর্মহীন দরিদ্র পরিবার। ইউনিয়নে ১ হাজার ২৯জন কর্মহীনদের জন্য ৩ মেট্রিক টন খাদ্য সহায়তা পেয়েছি। এখন জেলেদের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এরপরেই কর্মহীনদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হবে।

Exit mobile version