Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

করোনাকালে প্লাস্টিক কাপের ব্যাপক ব্যবহার : বেড়েছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

কবির হোসেন মিজি :
করোনা সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে চাঁদপুরে প্লাস্টিকের (ওয়ান টাইম) চায়ের কাপের ব্যবহার অনেক বেড়েছে। কিন্তু এই কাপের স্বাস্থের নিরাপদের চেয়ে এই প্লাস্টিক কাপে স্বাস্থ্যঝুঁকি বেশি রয়েছে।

তাই এই কাপই এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হচ্ছে। করোনা সংক্রমনের প্রথম থেকে শুরু করে এখনো পর্যন্ত সারা বাংলাদেশের সাথে চাঁদপুরেও এর ব্যবহার অনেক গুণ বেড়ে গেছে। এ জন্য স্বাস্থ্যঝুঁকিও রয়েছে বহুগুণ।

করোনাকালীন সময়ে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, যেসব চায়ের দোকানে প্রতিদিন শত শত কাপ চা বিক্রি হচ্ছে। তার ক্ষেত্রে অধিকাংশ কাপই ব্যবহার করা হচ্ছে প্লাস্টিকের (ওয়ান টাইম) কাপ।

আর এসব কাপগুলো দোকানীরা কোন প্রকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন না করে এবং পানিতে না ধুয়েই তার মধ্যে চা ঢেলে ক্রেতাদেরকে খেতে দিচ্ছেন। এতে করে করোনা সংকমণ প্রতিরোধের চেয়ে সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যায়।

এছাড়া ধুলি-বালি’সহ অন্যন্য অদৃশ্য জীবাণুর চা পান করার সাথে শরীরের প্রবেশের ঝুঁকি থেকে যায়। আবার কিছু দোকানী একবার ব্যবহৃত প্লাস্টিকের কাপ পানি দিয়ে কোনোমতে ধুয়ে আবার ব্যবহার করছেন। এতেও জীবাণুর সংক্রমণের আশঙ্কা আছে।

গবেষকদের মতে, প্লাস্টিকের মধ্যে থাকা বিসফেনল-এ নামের টক্সিক এ ক্ষেত্রে বড় ঘাতক। গরম খাবার বা পানীয় প্লাস্টিকের সংস্পর্শে এলে ওই রাসায়নিক খাবারের সঙ্গে মেশে।

এটি নিয়মিত শরীরে ঢুকলে মহিলাদের ইস্ট্রোজেন হরমোনের কাজের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হয়। পুরুষদের ক্ষেত্রে শুক্রাণু কমে যায়। হার্ট, কিডনি, লিভার, ফুসফুস এবং ত্বকও মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এমনকি স্তন ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।

গবেষণায় জানা গেছে, প্লাস্টিকের কাপ বানাতে সাধারণত যে যে উপাদান ব্যবহার করা হয়, সেগুলি বেশি মাত্রায় শরীরে প্রবেশ করলে ক্লান্তি হরমোনের ভারসাম্যতা হারানো, মস্তিষ্কের ক্ষমতা কমে যাওয়াসহ একাধিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। যেমন- বোতল বা পাত্র তৈরিতে ব্যবহৃত পলিভিনাইল ক্লোরাইডকে (পিভিসি) নরম করা হয় থ্যালেট ব্যবহার করে।

শুধু মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিই নয় এর পাশাপাশি এই প্লাস্টিকের কাপ ব্যবহারে পরিবেশের ভয়াবহ ক্ষতির অন্যতম প্রধান কারণ হয়ে উঠছে অপচনশীল এ কাপ। প্রতিদিন লাখ লাখ প্লাস্টিকের চায়ের কাপ ব্যবহার শেষে যেখানে-সেখানে ফেলা হচ্ছে।

মুখে ও নাকের সংস্পর্শে আশা এসব প্লাস্টিকের কাপ যেখানে-সেখানে পড়ে থাকায় এগুলোর মাধ্যমেও করোনাসহ অন্যান্য জীবাণু সংক্রমিত হতে পারে।

ক্রেতারা চা খেয়ে এসব কাপ ড্রেন’সহ যেখানে-সেখানে ছুড়ে ফেলছেন। এতে করে একদিকে যেমন ড্রেনে পানি আটকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ।

Exit mobile version