Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

করোনার প্রভাব : চাঁদপুরে কামার শিল্পীদের হাসি নেই

তালহা জুবায়ের :
মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রভাব পড়েছে চাঁদপুরের কামার শিল্পীদের মাঝে। আর কিছুদিন পরে পালিত হবে পবিত্র ঈদুল আযহা। কিন্তু এখনো ক্রেতা ভিড়ছে না দোকানে। ভাইরাস সংক্রমণের ভয় আর আর্থিক সংকটের কারণে এ বছর ব্যবসা মন্দা যাচ্ছে বলে দাবি কামার শিল্পীদের।

চাঁদপুরে প্রায় ৭শ’ দোকানে নিয়োজিত রয়েছে ৪ সহ¯্রাধিক কামার শিল্পী। কুরবানীর ঈদকে সামনে রেখে হাতুড়ি আর লোহার টুং টাং শব্দে মুখরিত কামার পল্লীগুলো। কিন্তু মলিন মুখে হাসি নেই কামার শিল্পীদের ঠোঁটে। করোনা ভাইরাসের কারণে এবার অনেক মানুষ হারিয়েছে পশু কুরবানী দেওয়ার সামর্থ। এর প্রভাবে ক্রেতাদের সংখ্যা কমেছে দোকানে।

শুক্রবার দুপুরে শহরের তালতলা, নতুনবাজার, বাসস্টেশন এলাকা, পুরানবাজারসহ বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, কামার শিল্পীরা ধারালো জিনিস বানাতে কাজ করে যাচ্ছেন। অন্যান্য বছরের তুলনায় দোকানে ক্রেতাদের ভিড় কিছুটা কম। প্রতিবছর কোরবানি ঈদ উপলক্ষ্যে বেচাঁকেনা বেশি হলেও এবারের চিত্রটা অন্য রকম। পশু কুরবানীর ধারালো অস্ত্র তৈরি করে ক্রেতাদের আসায় কামারীরা।

ঈদকে সামনে রেখে অনেকেই কামার শিল্পীদের কাছে পশু কাটার ছুরি, চাপাতি, দা, বটিসহ নানা জিনিস ক্রয় করছেন। আবার কেউ কেউ আসছেন ঘরে থাকা পুরনো দা, ছুরি ধারালো করতে। প্রতিবছর কোরবানি ঈদকে কেন্দ্র করে কামার শিল্পীদের ব্যস্ততা বাড়তো কয়েক গুন বেশি। প্রতিক্ষিত সময়টাতে ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে তাদের।

শহরের তালতলা এলাকার কামার বিনয় কর্মকার ও গোপাল কর্মকার বলেন, সারা বছর আমরা দা, ছুরি তৈরি করলেও কুরবানির ঈদের অপেক্ষায় থাকি। এই সময়টাতেই আমাদের সবচেয়ে বেশি বেঁচা কেনা হয়ে থাকে। কিন্তু এবছর করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আমাদের বিক্রি ভালো হচ্ছে না। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার ক্রেতাদের সংখ্যা অনেক কম। আশাকরি ঈদের আগেই ক্রেতারা আমাদের নিকট আসবেন ধারালো জিনিসপত্র ক্রয় করতে।

তারা জানান, বর্তমানে কোরবানির কাজে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রের মধ্যে প্রতি পিস বটি প্রকার ভেদে ৩শ’ থেকে ৭শ’, দা সাড়ে ৩শ’ থেকে ৮শ’, বড় আকৃতির ছুরি ৪শ’ থেকে ১ হাজার, ছোট আকৃতির ছুরি ৫০ থেকে ২শ’ এবং চাপাতি বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ থেকে ১২শ’ টাকায়।

শহরের মাদ্রাসা রোড এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, আর কিছু দিন পরেই অনুষ্ঠিত হবে ঈদুল আযহা। তাই আগে থেকে কোরবানী দেওয়ার জন্য ছুরি, দা কিনতে এসেছি। পাশাপাশি পুরনোগুলোও সান দেওয়ার জন্য নিয়ে এলাম। অন্যান্য সময়ের তুলনায় দা, ছুরির দাম অনেক বেশি রাখছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা বলেন, কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে কেউ যাতে ধারানো অস্ত্র অপরাধমূলক কাজে ব্যবহার না করতে পারে সে ব্যাপারে আমরা সজাগ রয়েছি।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহেদ পারভেজ চৌধুরী বলেন, ঈদকে কেন্দ্র করে ছিনতাই, মলমপার্টি ও জাল নোটের কারবারীরা যেন মাথাচারা দিয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে আমরা কঠোর নজরদারী করছি। গরুর হাটসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে পুলিশের হটলবৃদ্ধি করা হয়েছে।

Exit mobile version