Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

কর্মস্থলে অনুপস্থিত সেই স্বাস্থ্যকর্মীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক :
টানা ছয় মাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা স্বাস্থ্য সহকারী মো. শাহজালালের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ তদন্তে বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অভিযুক্ত মো. শাহজালাল চাঁদপুরে মতলব উত্তর উপজেলার বড় মরাদোন কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সহকারী। তিনি দীর্ঘদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে ঠিকাদারী ব্যবসায় নিয়োজিত থাকার বিষয়ে অতি সম্প্রতি চাঁদপুর প্রবাহসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর তোলপাড় লেগে যায় সারা জেলায়।

মতলব উত্তর উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের লবাইকান্দি গ্রামের মৃত গোলাম মাওলা প্রকাশ মালুম মোল্লার ছেলে মো. শাহজালাল। বিগত ১২ বছর আগে স্বাস্থ্য সহকারী পদে যোগ দেন। তার বর্তমান কর্মস্থল পাশের বড় মরাদোন কমিউনিটি ক্লিনিকে। পেশায় স্বাস্থ্য সহকারী হলেও সহকর্মীদের অনেকেই তাকে চেনেন না। কারণ কর্মস্থলে গড়হাজির থাকেন। আর এসময় তার মূল কাজ হচ্ছে ব্যক্তিগত ঠিকাদারি। স্ত্রী গৃহবধূ সুমি আক্তারের নামে রিজভিআপ নামে ঠিকাদারি লাইসেন্স আছে। তবে কৌশল করে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী ঠিকাদারদের সঙ্গে যৌথভাবে সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কাজ করাচ্ছেন তিনি। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ অধিদপ্তর এসব সরকারি দপ্তরের তালিকাভুক্ত ঠিকাদার মো. শাহজালাল।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত একযুগে ৩০ কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ বাগিয়েছেন স্বাস্থ্যকর্মী মো. শাহজালাল। এই চাকুরির মধ্যে দীর্ঘদিন এলাকার সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী পদে দায়িত্ব পালন করেন। এই নিয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা বিভিন্ন সময়ে তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে তাদেরকে চরমভাবে হয়রানি করেন মো. শাহজালাল। তার অনিয়ম নিয়ে লেখালেখি করায় গত কয়েকদিন আগে দৈনিক ইত্তেফাকের মতলব উত্তর প্রতিনিধি শামছুজ্জামান ডলারকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়ে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখান মো. শাহজালাল।

মতলব উত্তর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) সাইফুল ইসলাম বলেন, মো. শাহজালালের দু’টি কাজ চলমান রয়েছে। একটি হলো কালিপুর বাজারে অন্যটি দাসের বাজারে। এই দুটি কাজের মূল্য তিনকোটি টাকা। এই বিষয় মো. শাহজালালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনকোটি টাকার কাজের কথা স্বীকার করেন। কর্মস্থলে হাজিরা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে তা এড়িয়ে যান তিনি।

এসব অভিযোগ সম্পর্কে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নুশরাত জাহান মিথেন বলেন, মো. শাহজালালের অনিয়ম নিয়ে জেলা সিভিল সার্জনকে অবগত করা হয়েছে। তিনি স্বীকার করেন, তাকে কিছু বলা হলেই স্থানীয় নেতাদের নিয়ে তদবির শুরু হয়।

বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করা হলে সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, সরকারি চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে কেউ যদি অনৈতিক কাজ করে তবে তার বিরুদ্ধে সুর্র্নিদিষ্ট অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর মধ্যে মো. শাহজালালের অনিয়ম খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও জানান জেলা সিভিল সার্জন।

ছবি ২ কলাম। ক্যাপশন-
ঠিকাদারি কাজ তদারকি করছেন স্বাস্থ্য সহকারী মো. শাহজালাল।

Exit mobile version