Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

চাঁদপুরের সবুজ ১৭ বছর পর বাবা-মায়ের সন্ধান পেল

শরীফুল ইসলাম :
জনপ্রিয় রেডিও উপস্থাপক আর জে কিবরিয়ার ‘আপন ঠিকানা’ অনুষ্ঠানে শিশুকালে হারিয়ে যাওয়া সবুজকে নিয়ে আসেন বেসরকারি এনজিও ‘ফ্যামিলিজ ফর চিল্ড্রেন’ এর পরিচালক শিখা বিশ্বাস। আর সেখানে তাকে নিয়ে গত ২০ এপ্রিল প্রচারিত হয় একটি ভিডিও প্রতিবেদন। সেই প্রতিবেদনের পর পরিচয় মেলে সবুজ ও তার স্বজনদের। অবশেষে দীর্ঘ ১৭ বছর পর বাবা-মায়ের সন্ধান পেলো সবুজ।

বর্তমানে সবুজ সিরাজগঞ্জ খাজা ইউনুস আলী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করছেন। লকডাউন শেষে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন সবুজের মামা রাশেদ আলম।

হারিয়ে যাওয়া সুবজ চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার সূচিপড়া গ্রামের খলিল মেম্বার বাড়ির বাসু মিয়ার ছেলে। ২০০৪ সালে ঢাকায় খালুর বাড়িতে বেড়ানো শেষে চাঁদপুর আসার পথে ডেমরা এলাকা থেকে হারিয়ে যায় সবুজ। এরপর দীর্ঘদিন খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পায়নি স্বজনরা।

সবুজের মামা রাশেদ আলম বলেন, সবুজের দেয়া সকল তথ্য আমাদের সাথে মিলে গেছে। তাই কোন সন্দেহ নেই। বিষয়টি আমার বোন এবং ভগ্নিপতিও নিশ্চিত হয়েছেন। তারা হারিয়ে যাওয়া ছেলের সন্ধান পেয়ে আবেগে আপ্লুত।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে সবুজ তার দাদা লাল মিয়ার সাথে ঢাকাতে ফুফু এবং খালুর বাসায় বেড়াতে যান। খালুর বাসায় কয়েকদিন বেড়ানোর পর বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেয় দাদা-নাতি। পথিমধ্যে সবুজ খেলনার দোকান দেখে দাদাকে ফুটবল কিনে দিতে বলে। কিন্তু দাদা লাল মিয়া তাকে বাড়ি গিয়ে ফুটবল কিনে দিবে বললেও সবুজ বায়না ধরে বসে কিনে দিতেই হবে। আর এতে দাদা রাগ করে সবুজকে হাত থেকে ছেড়ে দিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যায়। পরক্ষণেই তাকে খুঁজতে গিয়ে আর খুঁজে পায়নি দাদা লাল মিয়া। এভাবেই প্রচন্ড ভিড়ের মাঝে দাদা-নাতীর বিচ্ছেদ হয়ে যায়।

এদিকে একা হয়ে গিয়ে সবুজ বসে বসে কাঁদতে থাকেন। তখনি এক মুদি দোকানদার সবুজকে বাসায় নিয়ে যান। পরদিন তিনি ডেমরা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে তাকে পুলিশের কাছে দিয়ে আসেন। অবশেষে সবুজের পরিবারের কোন সন্ধান না পেয়ে পুলিশ ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ নামের একটি এনজিওর কাছে সবুজকে হস্তান্তর করে। ওই এনজিওটি কয়েক মাস তাদের কাছে রেখে সবুজের পরিবারের সন্ধান না পেয়ে ২০০৫ সালে আরেকটি বেসরকারি এনজিও ‘ফ্যামিলিজ ফর চিল্ড্রেন’ এর কাছে হস্তান্তর করে।

ফ্যামিলিজ ফর চিল্ড্রেনের পরিচালক শিখা বিশ্বাস জানান, সবুজ অনেক মেধাবী ছাত্র। তাই স্থানীয় স্পন্সরের সহযোগিতায় আমরা তাকে লেখাপড়ার সুযোগ করে দিয়েছি। বর্তমানে সে সিরাজগঞ্জ খাজা আলী ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়ন করছে।

Exit mobile version