Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

চাঁদপুরে পদ্মার ভাঙনে পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি বিলীন

শরীফুল ইসলাম :
প্রমত্তা পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাঁদপুরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের কয়েকটি চরের বাসিন্দা। ভিটেবাড়ি হারিয়ে কোথায় যাবে, এমনি অনিশ্চয়তার মধ্যে তাদের এখন দিন কাটছে।

গত দু’দিনে আরো কয়েকশ’ পরিবারের শেষ সম্বল বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ নিয়ে গত কয়েক দিনের ভয়াবহ ভাঙনে ইতোমধ্যে প্রায় ৫ শতাধিক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এতে বাদ পড়েনি ফসলি জমি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং ছোট বাজারও।

এদিকে চারপাশে নদীগ্রাস করলেও এখনও ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে তিনতলা বিশিষ্ট নব-নির্মিত রাজরাজেশ্বর ওমর আলী হাই স্কুল কাম সাইক্লোন সেন্টারটি। তবে যে কোন সময় সেটি বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন চরাঞ্চলবাসী।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গত কয়েকদিন ধরে চাঁদপুরের দূর্গম চর রাজরাজেশ্বরের বিস্তীর্ণ এলাকা প্রমত্তা পদ্মার ভয়াল থাবায় বিলীন হতে চলেছে। উজানের তীব্র পানির চাপ দক্ষিণের সাগরে নামতে গিয়ে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে পদ্মা নদীর চাঁদপুর অংশটি।

এতে নদীপাড়ের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের মান্দেরবাজার, ঢালিকান্দি, রাজারচর, মজিদকান্দি, লগ্নীমারার চরসহ আরো কয়েকটি চর ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে।

রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী জানান, প্রতিবর্ষাই চরে ভাঙন দেখা দেয়। কিন্তু এবারের ভাঙন ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। ইতোমধ্যে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তরা তাদের বসতবাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা হারিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে।

তাই সহায় সম্বল হারানো ওইসব মানুষগুলোর পাশে দাঁড়ানোর জন্য প্রশাসনসহ বিত্তবানদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন এই জনপ্রতিনিধি।

অপরদিকে সহায় সম্বল হারানো মজিদকান্দি এলাকার জেলে রহমান মিয়া, কাজল গাজী ও খালেক বকাউল জানান, নদীতে আমাদেও সব শেষ হয়ে গেছে। এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আপাতত কোনো এক আত্মীয়ের বাড়ি আশ্রয় নেব।

কিন্তু পরে কোথাও যাব কি করবো তা বলতে পারছি না। তারা আক্ষেপ করে বলেন, আর কোনদিন পিতৃভিটায় পেরা হবে কিনা জানি না।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা বলেন, প্রতি বছরই চরাঞ্চলে কম বেশি ভাংগে। কিন্তু এবারের ভাঙ্গনে শত শত পরিবার ভিটেমাটি হারা হয়ে পড়েছেন। আমরা সরকারের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে দেখবো ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কিছু করা যায় কিনা।

তবে চরাঞ্চলে ভবিষ্যতে বহুতল ভবন না করে ভাসমান বা টিনসেড ভবন করা হবে বলে তিনি জানান।

Exit mobile version