Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

চাঁদপুরে রোটা ভাইরাস : আইসিডিডিআরবিতে এক সপ্তাহে ১৩ শতাধিক রোগী ভর্তি

তালহা জুবায়ের :
চাঁদপুরে তীব্র শীত আর হিমেল হাওয়ায় কাবু হয়ে পড়ছে শিশুরা। এতে শীতজনিত রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালগুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে স্বাভাবিকের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি। গত এক সপ্তাহে শুধু মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৩ শতাধিক রোগী। এসব রোগীর অধিকাংশই শিশু। রোটা ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে শিশুদের গরম কাপড় পরিধানের পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।

চলছে শীতের মৌসুম। মাঘের শুরু থেকে চাঁদপুরে বেড়েছে শীতের তীব্রতা। তীব্র শীত আর হিমেল হাওয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছে মানুষ। বছরের অন্যান্য সময়ের তুলনায় শীতের এই সময়টিতে শীতজনিত রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশেষ করে শিশুরাই আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।

চাঁদপুরের মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় হাসপাতালের বেড ভর্তি রোগী। এদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু রোগী। শীতে কাবু হয়ে রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে শিশুরা সর্দি, কাশি, ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে।

হাসপাতালে শিশুদের চিকিৎসা নিতে অভিভাবকরা জানান, বেশ কয়েক দিন যাবত শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় শিশুরা ঠান্ডায় আক্রান্ত হচ্ছে। এতে করে জ¦র, সর্দি, পাতলা পায়খানা আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ্য হয়ে পড়ছে।

জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে ১৩১২ জন শিশু রোগী মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। যার মধ্যে শুধুমাত্র চাঁদপুর জেলারই নয়, পাশর্^বর্তী কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, শরীয়তপুর জেলার রোগীরাও রয়েছেন।

মতলব আইসিডিডিআরবি হাসপাতারের মেডিকেল অফিসার ডা. দিদারুল হক জর্জ বলেন, গত এক সপ্তাহে শীতজনিত রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন ১৩ শতাধিক রোগী। যা স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। চিকিৎসা দেওয়া রোগীদের মধ্যে ৯০ শতাংশই শিশু।

তিনি বলেন, রোগী আসলে আমরা ৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করি। বাচ্চাদের স্বল্পমাত্রার পানি শূন্যতা থাকলে আমরা তা স্যালাইন এর মাধ্যমে পূরণের চেষ্টা করি। অতি অতিরিক্ত পানি শূণ্যতা দেখা দেয়, তাহলে শিরা পথে স্যালাইন দিয়ে পূরণের চেষ্টা করি। বাচ্চারা ডায়েরীয়ায় আক্রান্ত হলে অভিভাবকদের উদ্বিগ্ন না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ খাওয়ানো কথা বলেন তিনি।

আইসিডিডিআরবির দেওয়া তথ্য মতে, গত জানুয়ারি মাসে ৭৩৯০জন রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে কুমিল্লার ৩৯২০জন, চাঁদপুর ২২০৮জন, লক্ষ্মীপুর ৯২৩জন, নোয়াখালী ২২২জন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ৫২জন, শরীয়তপুর ৪৫জন এবং বিভিন্ন স্থান থেকে ২০জন রোগী।

মতলব স্বাস্থ্য ও গবেষণা কেন্দ্র আইসিডিডিআরবি’র প্রধান ডা. মো. আল ফজল খান বলেন, শীতের কারণে রোটাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। এতে করে পাতলাপায়খানা ও জ¦র ও বমি হচ্ছে শিশুদের। স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি রোগি আসছে হাসপাতালে। এই তীব্র শীতে শিশুদের বেশি করে যত্ন নিতে হবে। রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ভালো হতে ৪-৫ দিন সময় লাগতে পারে। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কোন কারণ নেই। খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি মায়েদের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। তাছাড়া ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের প্রতিদিন একটি করে ১০ দিন বেবী জিংক ট্যাবলেট খাওয়াতে হবে। শীত থেকে বেঁচে থাকতে সকল বয়সী মানুষকে গরম কাপড় পরিধানের পাশাপাশি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

Exit mobile version