Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

ঢাকায় ৮ম ড্যাফোডিল ক্যাপ্টেন কাপ গলফ টুর্নামেন্টে দেশীয় প্রযুক্তি ও গর্বের সহযাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশীয় প্রযুক্তি, উদ্ভাবন ও আত্মনির্ভরতার এক অনুপ্রেরণামূলক প্রতিচ্ছবি হয়ে ঢাকার কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের সবুজ মাঠে এবারের ‘৮ম ড্যাফোডিল ক্যাপ্টেন কাপ গলফ টুর্নামেন্ট ২০২৫’ আয়োজনটি ছিল ব্যতিক্রমী। সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে আয়োজিত এই টুর্নামেন্টটি শুধু একটি প্রতিযোগিতা নয়, বরং বন্ধুত্ব, শৃঙ্খলা ও মানসিক প্রশান্তির এক মহামিলনমেলা।

খেলাধুলা ও সুস্থ জীবনধারার প্রসারে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসা ড্যাফোডিল গ্রুপ এ বছরও সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ছিল গর্বিত অংশীদার। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান ও কুর্মিটোলা গলফ ক্লাবের প্রেসিডেন্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, এসবিপি, ওএসপি, এসজিপি, পিএসসি। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ড্যাফোডিল গ্রুপ ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির চেয়ারম্যান ড. মো. সবুর খান এবং ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের কমান্ড্যান্ট ও কেজিসি ভাইস প্রেসিডেন্ট লেফটেন্যান্ট জেনারেল মোহাম্মদ শাহীনুল হক। এছাড়া দেশ-বিদেশের গলফার, সামরিক ও বেসামরিক অতিথিবৃন্দ এবং বিভিন্ন পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করেন।

তিন দিনব্যাপী এ আয়োজনে অংশ নেন দেশের বিভিন্ন গলফ ক্লাবের প্রায় ৬৫২ জন গলফার। টুর্নামেন্ট শেষে কর্ণেল মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন চ্যাম্পিয়ন, কর্নেল মুহাম্মদ শরীফুল ইসলাম রানার আপ এবং মিসেস জিন সুক ইউন লেডিস উইনার হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।

এই বছরের টুর্নামেন্টে ব্যবহৃত গলফ ছাতাটি ছিল সম্পূর্ণ দেশীয় উদ্যোগে তৈরি, যা বাংলাদেশের ব্যবসা ও উদ্যোগের জগতে এক নতুন অধ্যায়। এটি প্রমাণ করে, বাংলাদেশেও স্পোর্টস সামগ্রী দেশীয়ভাবে তৈরি ও রপ্তানি করা সম্ভব। এ নিয়ে ড. মো. সবুর খান বলেন, ‘এই ধরনের সব খেলার সামগ্রী আমাদের সাধারণত বাইরে থেকে আমদানি করতে হয়। তবে আমরা চাইলে খেলার সামগ্রীগুলোর ক্ষেত্রে আমদানীমুখী না হয়ে, নিজেদের উদ্যোক্তাদের ব্যবহার করে বাইরের দেশে উল্টো রপ্তানি বাড়াতে পারি। এই ছাতার মান হয়তো প্রথমবারেই শতভাগ আন্তর্জাতিক নয়, কিন্তু এই সামান্য ছাতাই আমাদের সাহসের প্রতীক, দেশীয় উদ্যোক্তাদের এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা।’

ড. মো. সবুর খান তার বক্তব্যে ড্যাফোডিলের তিন দশকের প্রযুক্তি অভিযাত্রা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ড্যাফোডিল দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করে। বাংলাদেশের প্রথম সুপারস্টোর হিসেবে প্রথম দেশীয় পিসি ব্র্যান্ড (ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেড) এবং প্রথম লোকাল পিসি (১৯৯১-১৯৯২) বাজারে এনে ইতিহাস গড়ে ড্যাফোডিল গ্রæপ। এছাড়া বাংলাদেশের মানুষ নিজের উদ্ভাবন শক্তিতেই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে পারে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।

ড্যাফোডিল কম্পিউটারস লিমিটেড (ডিসিএল) ১৯৯৮ সাল থেকে দেশীয় ব্র্যান্ড হিসেবে নিজস্ব উৎপাদন, ডিজাইন ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের হার্ডওয়্যার শিল্পে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। ড. খান বলেন, ‘আমরা কখনো বিদেশি নামের আড়ালে আত্মবিশ্বাস হারাইনি। ড্যাফোডিল প্রমাণ করেছে, বাংলাদেশি ব্র্যান্ডও বিশ্বমানের হতে পারে।’

যখন বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রভাব বিস্তার শুরু হয়েছিল, তখনই ড্যাফোডিল গড়ে তোলে ড্যাফোডিল ইন্সটিটিউট অফ আইটি (ডিআইআইটি), যার সাহসী যাত্রাই পরবর্তীতে জন্ম দেয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ)। আজ এ বিশ্ববিদ্যালয় গর্বের সঙ্গে টাইমস হায়ার এডুকেশন ও কিউএস ওয়ার্ল্ড ইউসিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিংস এ জায়গা করে নিয়েছে- যা বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ইতিহাসে এক অনন্য অর্জন।

এই আয়োজনে গলফ মাঠে প্রতিটি শটের সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয়েছে বন্ধুত্ব, ক্রীড়াসত্তা ও আনন্দের সুর। ড্যাফোডিল গ্রুপ বিশ্বাস করে, খেলাধুলা শুধু বিনোদন নয়, এটি নেতৃত্ব, মনোবল ও ইতিবাচক জীবনের প্রশিক্ষণ।

Exit mobile version