Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

পরকীয়া প্রেম ও পূর্ব বিরোধের সোহেল রানাকে খুন : স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরে মতলব উত্তর উপজেলার পূর্ব ষাটনল গ্রামের সোহেল রানা খুনের আসামী মোঃ সিদ্দিক বকাউলকে ১০ এপ্রিল আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। গত ৯ এপ্রিল অভিযান পরিচালনা করিয়া মুন্সিগঞ্জ হইতে আসামি মো. সিদ্দিক বকাউলকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

গত ২ এপ্রিল মতলব উত্তর থানাধীন পূর্ব ষাটনল (মেহারুল্লাহ প্রধানিয়া কান্দি, পাঠানবাড়ী) গ্রামের জনৈক রোকেয়া বেগমের বসত বাড়ির পশ্চিম পার্শ্বে খাল পাড়ে কবরস্থান সংলগ্ন পূর্ব পার্শ্বে ধান ক্ষেতে উক্ত গ্রামের সোহেল রানা (২৮) এর মৃতদেহ চোখে ও মাথায় জখমসহ পড়িয়া আছে মর্মে সংবাদ প্রাপ্ত হয়ে দ্রুত থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে মৃতদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ চাঁদপুর সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।

তৎপ্রেক্ষিতে মৃত সোহেল রানার মাতা রোকেয়া বেগম থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করলে মতলব উত্তর থানার মামলা নং-০২, তাং-০২/০৪/২০২২ইং, ধারা-৩০২/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু করা হয়।

মামলা রুজু হওয়ার পর পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) সুদীপ্ত রায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন) মঈনুল হোসেন, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) মো. ইয়াসির আরাফাত, মতলব উত্তর থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাসুদ ও তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই/মো. মোবারক আলী উক্ত খুনের মামলার রহস্য উদঘাটন, আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেফতারের নিমিত্তে তদন্তে নামেন।

পুলিশ প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারে যে, উক্ত হত্যাকান্ডটি পরকীয়া প্রেম ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে বিরোধের কারণে সংঘঠিত হয়। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ আসামি মো. মাসুদ রানা ও তার স্ত্রী মোসা. সুফিয়াকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে।

পরবর্তীতে ৯ এপ্রিল অভিযান পরিচালনা করে মুন্সিগঞ্জ হতে আসামী মোঃ সিদ্দিক বকাউলকে গ্রেফতার করে। উক্ত আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামী ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে যে, ভিকটিম মৃত সোহেল ও গ্রেফতারকৃত আসামী মাসুদ পরস্পর ফুফাতো-মামাতো ভাই ।

ভিকটিম সোহেলের সাথে মাসুদের স্ত্রী মোসা. সুফিয়ার পরকীয়া সম্পর্ক ছিল এবং আসামী সিদ্দিকের সাথে জায়গা-জমি বায়না টাকা নিয়েও পূর্ব হতে বিরোধ চলে আসছিল। এই দুই বিরোধের জের ধরিয়া আসামী মাসুদ, তার স্ত্রী সুফিয়া ও আসামী সিদ্দিক ভাড়াটিয়া খুনীর মাধ্যমে সোহেলকে খুন করে লাশ গুম করিবার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা মোতাবেক মামলার ঘটনার দিন আসামী মাসুদ, তার স্ত্রী সুফিয়া ভিকটিম সোহেল রানাকে ঘটনাস্থলে ডেকে এনে এবং আসামী সিদ্দিক বকাউল কর্তৃক ভাড়াটে ৩জন খুনির সহায়তায় ভিকটিম সোহেলকে সিদ্দিক বকাউল ভিকটিমের গামছা দিয়া মুখ বাঁধে এবং হাত চাপিয়া ধরে।

আসামি মাসুদ লোহার রড দিয়া মাথার পিছনে আঘাত করিয়া খুন করে। তার লাশ শিয়ালে খেয়ে বিনষ্ট করেছে মর্মে প্রচার পাওয়ার লক্ষ্যে আসামি সুফিয়ার পরিকল্পনা মোতাবেক সকল আসামীরা ভিকটিমের চোখ ব্লেড দিয়ে উপড়ে ফেলে এবং গুম করার উদ্দেশ্যে মামলার ঘটনাস্থলে তথা ভিকটিমের পারিবারিক কবরস্থানের পাশে ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে।

Exit mobile version