Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

স্ত্রী প্রবাসে, শ্বশুর বাড়িতে স্বামীর মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর মতলব উত্তর উপজেলায় শ্বশুর বাড়িতে জামাতার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের কামালদি মাথাভাঙ্গা বেপারীর বাড়ির।

মৃতের নাম লাল মিয়া হাওলাদার (৫২)। তিনি ওই বাড়ির মৃতু সিটু বেপারীর মেয়ের জামাই ও বরিশালের বাসিন্দা মোঃ হাওলাদারের ছেলে। লামিয়া আক্তার (১৫) নামের একটি মেয়ে আছে তাদের।

মৃতের শ্বশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (২০ মে) মধ্যরাতের দিকে সে তার শ্বশুরের ঘরের পাশে ঢেউয়া গাছের সাথে গলায় গামছা ও ওড়না বেঁধে আত্মহত্যা করে। যদিও আত্মহত্যার নির্দিষ্ট কোন কারণ এখনো জানা যায়নি। মৃত লাল মিয়ার স্ত্রী সালেহা বেগম জর্দানে কর্মরত আছেন।

লাল মিয়া হাওলাদারের শাশুরী লিলু বেগম জানান, বরিশালের মো. হাওলাদারের ছেলে মো. লাল মিয়া হাওলাদার ১৭ বছর আগে আমার মেয়ে সালেহা বেগমকে কোর্টের মাধ্যমে ঢাকায় বিয়ে করেন।

সে সময় ২-৩ বছর ঘর সংসার করার পর সে হঠাৎ নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। আমার মেয়ে সালেহা বেগম অনেক খোঁজাখুঁজি করে স্বামীর খোঁজ না পেয়ে জর্ডানে চাকুরির উদ্দেশ্যে পারি জমায়।

১৪ বছর পর মেয়ে লামিয়া আক্তারের সাথে তার পিতা লাল মিয়া হাওলাদারের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ হলে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে লাল মিয়া তার শ্বশুর বাড়িতে আসেন। কয়েক দিন থাকার পর ঢাকায় ব্যবসায়িক কাজে চলে যান। পুনরায় ২ রমজানে শ্বশুর বাড়ি এসে ১৪ রমজানে ঢাকায় চলে যান। পরে ১৬ রমজানে আবারও শ্বশুর বাড়িতে আসেন।

ঈদের পরদিন বিকেলে মো. লাল মিয়া হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলে তাকে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে হাসপাতালের কর্ত্যরত ডাক্তার তাকে ঢাকা প্রেরন করেন। সেখানে শেরেবাংলা নগর হাসপাতালে চিকিৎসা করে ১ দিন পরেই তাকে রিলিজ দিয়ে দিলে পুনরায় তার শ্বশুর বাড়িতে চলে আসে সে। বৃহস্পতিবার তার মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

প্রতিবেশি বাবুল মিয়ার স্ত্রী জোসনা বেগম আম কুড়াতে গিয়ে ঢেউয়া গাছের সাথে লাল মিয়ার লাশ জুলতে দেখেন। এ সময় তার ডাক-চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসে। পরে পুলিশকে খবর দিলে মতলব উত্তর থানা পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে সুরোতহাল রিপোর্ট তৈরী করে দুপুরে মৃতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

লাল মিয়া হাওলাদারের মেয়ে লামিয়া আক্তার জানান, আমার জন্মের দীর্ঘ ১৪ বছর পর আমি আমার বাবাকে দেখেছি। তিনি কেনো এমনটি করেছেন তা জানি না। আমার বাবা ঢাকায় ফলের ব্যবসা করতো এবং আমার বাবা আরো ২টি বিয়ে করেছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।

মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ শাহজাহান কামাল জানান, এ বিষয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মৃতের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Exit mobile version