Site icon Chandpur Probaha | চাঁদপুর প্রবাহ

হাইমচরে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, অভিযুক্ত স্বামী আটক

বিশেষ প্রতিনিধি :
হাইমচরের পশ্চিম চরকৃষ্ণপুরে ঝুলন্ত অবস্থায় স্থানীয় মিয়া নেপালের স্ত্রী ৩ সন্তানের জননী পারুলের ঝুলন্ত মৃতদেহ নিজ ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল হতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর মর্গে প্রেরণ করেছে। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে স্বামী মিয়া নেপালকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয়রা সন্দেহ করছেন, আত্মহত্যা নয়, পারুলকে হত্যা করে তার লাশ ঝুলিয়ে রাখা হতে পারে। পারুল আত্মহত্যা করেছে না তাকে হত্যা করা হয়েছে- এ নিয়ে এলাকায় বিরাজ করছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সন্দেহের কারণ, তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ লেগেই থাকতো।

জানা যায়, ২০০৮ সালে নিজেদের পছন্দ মতো মিয়া নেপালের সাথে পারুল বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। তাদের সংসার জীবনে ৪টি সন্তান রয়েছে। স্থানীয়রা জানায়, পারুল ও তার স্বামীর মধ্যে প্রায়ই কলহ লেগে থাকতো। স্বামী মিয়া নেপাল পারুলকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো।

পারুলের ছেলে শাহাদাত (১১) জানায়, সে প্রতিদিনের মতো মায়ের সাথে ঘুমায় কিন্তু গতরাতে তাকে দাদীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ছেলে জানায়, তার বাবা তাকে দাদীর কাছে চলে যেতে বলে। সকালে শুনে তার মায়ের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে।

পারুল বেগম (২৬) উপজেলার পশ্চিম চরকৃষ্ণপুর গ্রামের আ. সাত্তার আখনের (৫৬) ছোট মেয়ে। একই গ্রামের ডিগ্রি কলেজ সংলগ্ন মোফাজ্জল হোসেনের বাড়িতে ভাড়া থাকে। পারুলের চারটি সন্তান শাহাদাত (১০), সুমাইয়া (৭), আশ্রাফ (৪) ও মুসা (৪ মাস)।

জানা যায়, শুক্রবার রাত ২টার দিকে পারুলের ছোট মেয়ে সুমাইয়া চিৎকার করলে মৃত আবুল হোসেন পাটওয়ারীর স্ত্রী মারুফা খাতুন ঝুলন্ত পারুলকে দেখতে পেয়ে তাকে নিচে নামিয়ে আনেন। তিনি জানান, আমি এসে দেখি ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে পারুল। তিনি আরও জানান, পারুল বেগম কিভাবে মারা যায় সেটা জানি না। তবে গতপরশু পারুলের স্বামী মিয়া নেপালকে আমরা বাড়িতে দেখেছি। তাদের দু’জনের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। এমনকি মিয়া নেপাল পারুলকে মারধরও করে।

এ ব্যাপারে মিয়া নেপালের কাছে মুঠোফোনে জানতে চাইলে সে জানায় পারুলের মৃত্যুর ব্যপারে সে কিছু জানে না। সে নারায়ণগঞ্জ থেকে আসতেও নারাজ। স্ত্রীর মৃত্যুতে তার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে সে হাইমচর থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে। তিনি বলেন, আমি দীর্ঘদিন স্ত্রীকে কোনো ভরণপোষণ পাঠাই না, তার চলা সে কোনোভাবে চলত।

হাইমচর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জহিরুল ইসলাম খান জানান, স্বামীর অত্যাচারে ভিকটিম আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। বাদীপক্ষের মামলা ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Exit mobile version