নিজস্ব প্রতিবেদক :
প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে আবারো মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ছাত্ররা। এক মাস অপেক্ষার পর আবারো বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রোববার বেলা ১২টায় বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির শতাধিক শিক্ষার্থী প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।
সরকারি চাকুরীজীবী হয়েও প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ছাত্রদের অংশগ্রহণে বাধা দেওয়াসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগের দাবি করে। দুপুর ১টায় পরিস্থিতি শান্ত করতে বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনায় বসেন। শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের অভিযোগগুলো শুনেন। এ সময় তারা শ্রেণি শিক্ষা কার্যক্রম যাতে ভিন্ন না ঘটে সেদিকে দৃষ্টি রাখতে শিক্ষার্থীদের অনুরোধ জানান।
এসময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেনের পদত্যাগের দাবিতে লিখিত আকারে ২০টি কারণ তুলে ধরেন। কারণ গুলো হচ্ছে, ১. বিদ্যালয়কে দলীয় কার্যালয়ে বানানো (নানা সময়ে বিদ্যালয়ে রাজনৈতিক কর্মী এনে বৈঠক করা), ২. দলীয় এজেন্ট (অভিভাবক সমাবেশে জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান দেওয়া), ৩. বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বাধা প্রদান, ৪. আইনি ব্যবস্থার ভয়, টিসি দেওয়ার ভয় দেখানো, ৫. পেশাজীবী সংগঠনের মানববন্ধনে ছাত্রদের বিরুদ্ধে ২জন শিক্ষককে পাঠানো, ৬. শিক্ষার্থীদের বাসায় মেসেজ দিয়ে ছাত্র আন্দোলনে বাধা প্রদান, ৭. শ্রেণি শিক্ষকদের বাধ্য করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে যেতে বাধা দেয়া, টিফিনে রাজনৈতিক কার্যকলাপ (বিএনপি নেতা দিয়ে হুমকি প্রদান), ৯. স্কুলে অবৈধ ভর্তি বাণিজ্য করে পালিয়ে বেড়ানো, ১০. নির্বাচনের আগের দিন বিদ্যালয় থেকে ৩ ট্রাক মালামাল সরিয়ে নেওয়া, ১১. বিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রম স্থবির রাখা, ১২. বিদ্যালয়ের কারোর সম্মতি না নিয়ে মাস্টার রোলের শিক্ষক-কর্মচারীদের ছাটাই করা, ১৩. বিদ্যালয়ের কর্মচারীদের সঠিক সম্মানি প্রদান না করা, ১৪. কারো সম্মতি না দিয়ে বিদ্যালয়কে নিজের মতো করে পরিচালনা করা, ১৫. টেন্ডার বাণিজ্য, ১৬. অভিভাবক ও শিক্ষকদের সাথে বাজে ব্যবহার করা, ১৭. বিদ্যায়ের সহ-শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনায় বাধা প্রদান, ১৮. রাজনৈতিক কার্যক্রলাপে বাধা দেয়ায় নেতাদের দিয়ে শিক্ষকদেরকে হুমকি দেওয়া, ১৯. বিদ্যালয়ে নির্বাচনী জনসভা আয়োজন করা, ২০. বিদ্যালয়ের যে কোনো কাজে রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো।
আন্দোলনরত বিদ্যালয় শিক্ষার্থী অম্লান সাহা, মুশফিক করিম লাবিব, মোসাদ্দেক হোসেন রোকন, আবির আদনান হোসাইন, তাহমিদ মুনতাসিম সাহিল, চয়ন বিশ্বাস, সেজানুর রহমান, জাস্টিন সরকার জয়, আকমার আনজুম আবিদ, ওয়াইছসহ অনেকে বলেন, আমাদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক এক মাসের সময় চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন একমাস পরে নিজ থেকেই অন্যত্র বদলি হয়ে যাবেন। কিন্তু সেটি না করে তিনি প্রথমে ছুটি এবং বর্তমানে পালাতক রয়েছেন। আমরা তার পদত্যাগের দাবিতে এবার জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিব। আমাদের দাবি মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।