- মমিনুল ইসলাম
দেশের প্রথম প্রকৃত কেবল স্টেইড সেতু হিসেবে নির্মিত হচ্ছে মতলব-গজারিয়া সেতু। চাঁদপুরের মতলব উত্তর ও মুন্সিগঞ্জের গজারিয়াকে সংযুক্ত করতে মেঘনা নদীর ওপর নির্মিত এই সেতুটি হবে আধুনিক প্রকৌশলের এক অনন্য নিদর্শন। সেতুর নকশা, পরিবেশ ও নদীর প্রবাহমানতা রক্ষার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে সেতু বিভাগ।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে সেতুর নির্মাণ ও সংযোগ সড়ক প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শনে আসেন সেতু বিভাগের সচিব ও বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
তিনি জানান, প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণ ও বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন প্রায় শেষ পর্যায়ে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আগামী বছরের প্রথমার্ধেই নির্মাণকাজ শুরু করা সম্ভব হবে। এই সেতু নির্মিত হলে মেঘনা-ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের বেড়িবাঁধে ফোর লেন রাস্তা নির্মাণের কাজও শুরু হবে, যা চাঁদপুর হয়ে ফেনী ও চট্টগ্রাম পর্যন্ত দ্রুত যোগাযোগের বিকল্প রুট হিসেবে গড়ে উঠবে। এটি হবে এন-১ জাতীয় মহাসড়কের বিকল্প পথ।
মোহাম্মদ আবদুর রউফ আরও জানান, দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনৈতিক সহযোগিতা তহবিল (EDCF)-এর আওতায় প্রকল্পের অর্থায়নে ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে এবং প্রাথমিক চুক্তির কাঠামোও চূড়ান্ত হয়েছে। অর্থ ছাড়ের পরপরই টেন্ডার আহ্বান ও নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।
সেতু মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ভিখারোদ্দৌলা ভুলু চৌধুরী জানান, ১.৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই দৃষ্টিনন্দন সেতুটি হবে সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। নদীর নাব্যতা ও প্রবাহ বজায় রাখতে ২৫ মিটার উঁচু ভার্টিক্যাল ক্লিয়ারেন্স রাখা হয়েছে। সেতুর সঙ্গে থাকবে ৬ লেনের সংযোগ সড়ক—যার মধ্যে ফোর লেন মূল রাস্তা ও দুই পাশে সার্ভিস লেন থাকবে।
তিনি আরও বলেন, প্রকল্পের আওতায় আড়াই কিলোমিটার নদী শাসনের কাজ করা হবে যাতে নদীভাঙন রোধ হয় এবং সেতুটি দীর্ঘস্থায়ী হয়। পাশাপাশি মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের ৬২ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ প্রশস্ত করে উন্নত মানের রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
পরিদর্শনকালে সেতু বিভাগের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, প্রকল্প পরিচালক মো. আবুল হোসেন, মতলব উত্তর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা কুলসুম মনি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।