মতলব উত্তরে করোনার উপসর্গ নিয়ে ১জনের মৃত্যু, ৫টি বাড়ি লকডাউন

খান মো. কামাল :
মতলব উত্তরে করোনার উপর্গ নিয়ে এক নারীর মৃত্যুতে আশপাশের ৫টি বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের মুন্সিকান্দি গ্রামে জ্বর, বমি ও পাতলা পায়খানাজনিত সমস্যায় ৫৫ বছর বয়সী ওই নারী শুক্রবার রাতে মারা যান। এই ঘটনায় শনিবার সকালে স্থানীয় প্রশাসন আশপাশের ৫টি বাড়ি লকডাউন করেছে। পরবর্তী নির্দেশ দেয়া না পর্যন্ত এই নির্দেশ বলবত থাকবে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানিয়েছেন।

ইউএনও জহিরুল হায়াত জানান, মারা যাওয়া নারীর নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে করোনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য। ওই বাড়ির আশপাশের লোকজন যাতে ঘর থেকে বের না হয়, সেজন্য স্থানীয় লোকজনকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, ওই মহিলা মানসিকভাবে কিছুটা ভারসাম্যহীন ছিলেন। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। তিনি গত ৩ দিন আগে নারায়নগঞ্জ থেকে মতলব উত্তরে আসেন।

শুক্রবার মধ্যরাতে তিনি মারা যান। এ ঘটনার পর শনিবার সকাল থেকে মহিলার বাড়িসহ আশপাশের ৫টি বাড়িতে লকডাউন ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। দুপুরে তাকে প্রশাসনের মাধ্যমে বিশেষ ব্যবস্থায় দাফন করা হয়েছে। দাফনের দায়িত্বে ছিলেন মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারীর স্বজনরা।

এদিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে ওই নারী মারা যাওয়ার খবর শুনে মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ডা. নুশরাত জাহান মিথেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের (এমওডিসি) ডা. মো. আল-আমিন, নমুনা সংগ্রকারী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এমটিইপিআই) ভাষান চন্দ্র কীর্তনীয়া ঘটনাস্থলে গিয়ে মারা যাওয়া নারীর নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠানোর জন্য সিভিল সার্জন অফিসে জমা দেন। এ সময় দূর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান দেওয়ান আবুল খায়ের, দুর্গাপুর ইউনিয়নের সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক নার্গিস আক্তার স্থানীয় প্রশাসন উপস্থিত ছিলেন।

ওই নারীর স্বজনরা জানায়, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতেন। গত ৩ দিন আগে নারায়নগঞ্জ থেকে বাড়িতে আসেন। তিনি হাঁস-মুরগি রাখার ঘরে এসে থাকেন। শনিবার রাত সাড়ে ১২টায় তিনি কিছুটা জ্বর, বমি, অস্বাভাবিক শব্দ করেন। রাতে আমরা দেখে ঘুমিয়ে পড়ি। সকালে উঠে দেখি তিনি মারা গেছেন। তারপর ইউপি চেয়ারম্যানকে খবর দিলে তিনি বিষয়টি প্রশাসনকে জানায়। পরে দুপুরের দিকে হাসপাতাল থেকে ডাক্তারা এসে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে করোনা টেস্টের জন্য। এ সময় আমাদের বাড়িসহ আশপাশের ৫-৭টি বাড়ি লাল নিশানা দিয়ে লকডাউন ঘোষণা করে। তারা এ সময় আমাদেরকে ৪টি পিপিই ড্রেস দেয় ফুফুকে দাফনের জন্য। আমার ফুফুকে দুপুরে দাফন করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এএম জহিরুল হায়াত বলেন, করোনা শনাক্তে মরদেহ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে আইইডিসিআর-এ পাঠানো হয়েছে করোনা টেস্টের জন্য। এ পরীক্ষার রিপোর্ট আসার পরে জানা যাবে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা। রিপোর্টে বৃদ্ধা করোনায় আক্রান্ত ছিলেন প্রমাণ হলে ওই এলাকা লকডাউন করা হবে। আপাতত ৫-৭টি ঘর লকডাউন করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে খাদ্য সরবরাহ করা হবে।

এদিকে সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, মৃত বৃদ্ধার নমুনা সনাক্ত করা হয়েছে। রোববার সকালে এই নমুনা ঢাকায় পাঠানো হবে করোনা টেস্টের জন্য। ওই মহিলা এলাকায় নিয়মিত না থাকায় এবং তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বিধায় তার কেস স্টাডি জানা অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। সিভিল সার্জন জানান, আপাতত শুধু ওই বাড়িটি লকডাউন করা হয়েছে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)