সুজন পোদ্দার :
চাঁদপুরের কচুয়ায় পৌর বাজারে অবস্থিত ইকরা ভ্যারাইটিজ স্টোরের স্বত্বাধীকারী আবুল বাশার (৩৮) হত্যাকান্ডের প্রধান আসামি ছালেহ মুসাকে (২০) গ্রেফতার করেছে কচুয়া থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃত মুসা কচুয়া পৌরসভাধীন কড়ইয়া গ্রামের ইব্রাহীমের ছেলে ।
কচুয়া থানার ওসি মো. মহিউদ্দিন জানায়, গত রোববার রাতে কচুয়া থানা পুলিশ ছালেহ মুসাকে পাশ^বর্তী কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী থানার আলেখারচর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাসা থেকে গ্রেফতার করে কচুয়া থানায় নিয়ে আসে। পরে গতকাল সোমবার চাঁদপুরের কচুয়া আমলী আদালতের বিজ্ঞ ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট হাজির করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। জবানবন্দি রেকর্ড শেষে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করার মধ্য দিয়ে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে ছালেহ মুসা আরো কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আবুল বাশারকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেছে।
গত শনিবার দুপুরে আবুল বাশার দোকানে আসার জন্য নিজ বাড়ি কচুয়া পৌরসভাধীন কোয়া চাঁদপুর হাজী বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসে। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত সে দোকানে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন তাকে খোঁজাখুজি শুরু করে। রাত ১০টার দিকে তার নিখোঁজের বিষয়ে কচুয়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।
অভিযোগ দায়েরের পর পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে যাওয়ার এক পর্যায়ে শনিবার রাত ৩টার দিকে কচুয়া বিশ^রোডে অবস্থিত মুসার মাছের আড়তে আবুল বাশারের রক্তভেজা লুঙ্গি, গামছা ও একটি বিছানার চাদরসহ দেওয়ালের বিভিন্ন স্থানে রক্তের চিহ্ন দেখতে পায়। পরে কচুয়া থানা পুলিশ রবিবার বিকেল ৩টায় দাউদকান্দি উপজেলার রায়পুর গ্রামে একটি বস্তাবন্দী গলাকাটা লাশের সন্ধ্যান পায়। এঘটনায় আবুল বাশারের স্ত্রী বাদী হয়ে ছালেহ মুসাকে প্রধান আসামী ও ৬জনকে অজ্ঞাত আসামী করে কচুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এদিকে সোমবার আবুল বাশারের নিজ গ্রাম এলাকার লোকজনরা আবুল বাশারের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি কোয়া চাঁদপুর গ্রাম থেকে শুরু হয়ে কোয়া, উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গন, কচুয়া বিশ্বরোড, পৌর বাজার ও কচুয়া থানা এলাকা প্রদিক্ষণ করে।
ওই দিন দুপুরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে আবুল বাশারের লাশ তার নিজ গ্রামে নিয়ে আসা হলে তার আত্মীয় স্বজন ও এলাকাবাসী মধ্যে গগনবিদারী কান্নার রোল শুরু হয়। পরে বাদ জোহর কোয়া চাঁদপুর হাজী বাড়ি জামে মসজিদ প্রাঙ্গনে শতশত ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।