চাঁদপুরে ইটের আঘাতে স্ত্রীর মৃত্যু, স্বামী পলাতক

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরে পারিবারিক কলহে স্বামী শরীফ হোসেন খান ইট দিয়ে আঘাত করে ও গলাটিপে তার স্ত্রী সাথী আক্তার (২৪) কে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। মৃত সাথী আক্তার এক সন্তানের জননী।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধ্যায় চাঁদপুর সদর উপজেলার ল²ীপুর মডেল ইউনিয়নের বহরিয়া এলাকার মোখলেছ খান নামক বড় খান বাড়িতে। এ ঘটনায় বুধবার রাতে গৃহবধূর পিতা মিজানুর রহমান পাটওয়ারী বাদী হয়ে হত্যার অভিযোগ এনে চাঁদপুর সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে। অভিযুক্ত স্বামী ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন।

চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদের নির্দেশে থানার উপ-পরিদর্শক মোঃ মোস্তফা কামাল রাত ১টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে সুরতহাল শেষে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।

জানা যায়, নিহত সাথী আক্তারের স্বামী শরীফ খান এর পূর্বে বিয়ে করে পশ্চিম রামদাসদী দোকানঘর এলাকার রফিক মল্লিকের মেয়ে রোকেয়া বেগমকে। সে সংসারে তার দু’টি সন্তান রয়েছে। শরীফের নির্যাতনের শিকার হয়ে জীবন বাঁচাতে দুই সন্তান নিয়ে প্রথম স্ত্রী তাকে তালাক দিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যায়। গত তিন বছর পূর্বে শরীফ খান চান্দ্রা এলাকার বাখরপুর পাটওয়ারী বাড়ির মিজানুর রহমানের মেয়ে সাথী আক্তারকে বিয়ে করে। সাথীর সংসারে দুই বছর বছরের সুমনা নামে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

নিহত সাথীর পিতা মিজানুর রহমান জানান, বিয়ের সময় শরীফকে ব্যবসা করার জন্য দুই লাখ টাকা দেওয়া হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকে শরীফ সাথীর কাছে যৌতুক দাবি করে এবং তাকে নির্যাতন করতে থাকে। বিয়ের পর থেকে ৭ বারে যৌতুক বাবদ শরীফকে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যবসা করার জন্য দেওয়া হয়। এরপরও শরীফ পুনরায় যৌতুক দাবি করে যাচ্ছিল। গত মঙ্গলবার যৌতুকের জন্য সাথীকে শরীফ মাথায় এবং শরীরে ইট দিয়ে বহু আঘাত করেছে। আঘাত করার পর সাথী বিষয়টি ফোন করে তার বাবাকে জানিয়েছে।

ঘটনার দিন বুধবার বিকেলে শরীফ দোকান থেকে এসে যৌতুকের টাকা বাবার কাছ থেকে এনে দেওয়ার জন্য সাথীর সাথে শরীফের পারিবারিক কলোহ হয় বলে সাথী তার পিতা-মাতাকে জানান।

বড় বাড়ির শরীফের আত্মীয়স্বজনরা জানান, এক পর্যায়ে শরীফ সাথীকে গলাটিপে ধরে ও ইটদিয়ে মাথায় আঘাত করলে সে খাটের উপর অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক শরীফ তাকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরক্ষণে শরীফ জোরপূর্বক সাথীর লাশ আটোবাইকে উঠিয়ে তার বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে নিহত সাথীর বাবা তার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে বলে চাঁদপুর মডেল থানায় অভিযোগ দিলে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে ময়নাতদন্তের জন্য।

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আসিবুল হাসান চৌধুরী জানান, মরদেহের মাথায় ও শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।

এ ব্যাপারে চাঁদপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, ঘটনা জানান পর ঘটনাস্থলে থানার অফিসারকে পাঠাই। আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। এ ব্যাপারে নিহতের পিতা বাদী হয়ে অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন