আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষ্য চাঁদপুর জেলার ঈদ প্রস্তুতিমূলক সভা ( ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে) অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১৫ জুলাই বৃহস্পতিবার সকাল সড়ে ১০ টায় চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে ঈদের জামাত বিষয়ে স্বাস্থ্যবিধি বজায় নিশ্চিতকল্পে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত হয়। কুরবানির পশুর হাট, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং চামড়া সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ে নির্দেশনা দেন জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, পবিত্র ঈদের দিন আইন -শৃঙ্খলা রক্ষায় ও সার্বিক কার্যক্রম তদারকির জন্য জেলা সদরে ৩টি ও উপজেলাতে ২টি করে মোবাইল কোর্ট চলমান থাকবে। এ সভায় সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক চাঁদপুর জনাব ইমতিয়াজ হোসেন৷
সভাপতি তার বক্তব্যে আরো বলেন, মসজিদে ঈদের নামাজ আদায়ে কোররকম কার্পেট বিছানো যাবে না। তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের স্থানীয় পরিস্থিতি ও মুসল্লিদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এবারের ঈদ জামাত মসজিদ, ঈদগাহ, বা খোলা জায়গায় পড়ানোর নির্দেশনা রয়েছে।
তবে এ সভায় জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় গণ্যমান্যদের আলোচনায় বলা হয়, যেহেতু বৃষ্টির দিন সেহেতু জেলা শহরে খোলা মাঠ বা ঈদগাহ নামাজ আদায় করা এবারও সম্ভব না। বিস্তারিত আলোচনায় বৃষ্টির কারণে বেশির ভাগ জামাতই মসজিদে আদায় করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়।
জেলা প্রশাসক বলেন, মুসল্লীদের নামজে নিজেদের জায়নামাজ নিয়ে আসতে হবে। এক কাতার অন্তর অন্তর কাতার করতে হবে। নামাজ শেষে কোলাকুলি বা নামাজের শেষে বা আগে হাত মিলানো যাবে না। সবার মাস্ক পরিধান অবশ্যই করতে হবে।
তিনি বলেন, ঈমামগণ খোতবায়, মোনাজাতে অতিমারি করোনা মহামারী সম্পর্কে সচেতনতামূলক বয়ান দেবেন। যত্রতত্র পশু কোরবানি করা যাবে না। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। জেলা প্রশাসক বলেন, চামড়া প্রক্রিয়ায় লবনের মজুদ, চামড়ার মূল্য নির্ধারন এবং চামড়ার যথাযথ দাম পেতে ও চামড়া যেন কোনভাবে নষ্ট না হয় সেদিকে দৃষ্টি রাখতে হবে। আর এটির বিষয়ে চেম্বার অব কমার্স ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট যারা আছেন তাদের দৃষ্টি দিতে হবে।
তিনি বলেন, ঈদের দিনগুলোতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ঠিক রাখার জন্য পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎকে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন ঈদ উপলক্ষে শুক্রবার থেকে একটি কন্ট্রোল রুম চালু থাকবে। জেলা প্রশাসক বলেন, গ্রামে শহরে ঈদ উপলক্ষসহ যে কোনভাবেই গ্রাম বা শহরে করোনা রোগী শনাক্ত হলে তাকে কোয়ারান্টাইনে দিতে হবে। তাদের বাড়িঘর পতাকা দিয়ে চিন্তিত করতে হবে। তবে কোনভাবেই ঐসব রোগীগন যেন হয়রানির শিকার না হন।
পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ বলেন, এ জেলায় আমাদের হিসাবে জেলায় এবার ২ হাজার ৭ শ’ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থাকবে। তবে জামাতগুলোর এন্তেজামিয়া কমিটি, লোকাল প্রশাসন জামাত অনুষ্ঠানে নিজেরাও শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নিজেদের মধ্য স্থানীয় ব্যবস্থা রাখবেন।
তিনি বলেন ঈদের সময়ে বা ঈদের আগে পরে কিশোর গ্যাংদের ধরার জন্য আমার পুলিশ টিম আজ থেকেই কাজ শুরু করবে। তাদের ধরলে তদবীর আসে কোন কোন জায়গা থেকে। বলে এটা ভালো ছেলে, ওটা অমূকের ছেলে। এবার কোন তদবীর কাজে আসবে না। কিশোর গ্যাংদের ডাটাবেজ আমার কাছে আছে। তাদের কোন ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, এই বিষয়কে এবং ঈদকে গুরুত্ব দিয়ে আমাদের এই 01320116898 এবং 084163015
মোবাইল নাম্বার আপনাকে সাহায্য করবে। এবার গরুর বাজারগুলোতে আমাদের কন্ট্রোল রুম থাকবে।
সভায় সকল উপজেলা নির্বাহী অফিসারগণ, জেলার সকল দফতরের প্রধানগণ যুক্ত ছিলেন।বক্তব্য রাখেন, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মোঃ জিল্লুর রহমান, সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ, ডিডি এনএসআই শেখ আরমান আহমেদ, চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকবাল হোসেন পাটোয়ারী প্রমুখ।
এছাড়াও সভায় ঈদের দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন, নিরবিচ্ছিন্ন বিভিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, লঞ্চঘাট,বাস স্টেশনে নিরাপত্তা জোরদার, হাসপাতাল শিশু পরিবার ও জেলখানায় উন্নত খাবার বিতরণ, মাদক ব্যবহার ও নির্মূলসহ ২৩টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।