চাঁদপুরে ক্যান্সার আক্রান্ত শিশুর হারনিয়া অপারেশন!

কবির হোসেন মিজি :
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়নপুর বাজারস্থ নারায়ণপুর টাওয়ার হাসপাতালে তিন বছর বয়সী এক শিশুকে ভুল চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ক্যান্সারে আক্রান্ত ওই শিশুর কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই হারনিয়া অপারেশন করা হয়! বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকায় তোলপাড় চলছে।

প্রায় ১ মাস পূর্বে কুদ্দুছ হোসেন নামের এক ব্যক্তি তার তিন বছরের শিশুকে নারায়ণপুর টাওয়ার হাসপাতালের চিকিৎসক মহিবুল ইসলাম সাহাতকে দেখান। এ সময় ডাক্তার সাহাত শিশুটির হারনিয়া রোগ হয়েছে বলে জানান এবং দ্রæত তাকে অপারেশন করাতে বলেন। ডাক্তার সাহাতের মাধ্যমেই শিশুটিকে অপারেশন করানোর কথা হয়। নেয়া হয় অপারেশন থিয়েটারে। প্রায় ৩ ঘন্টা পর রোগীকে বের করে ডাক্তার জানান রোগীর হারনিয়া রোগ নেই।

পরে শিশুটির রোগ নির্ণয়ের জন্য তার শরীর থেকে মাংস রেখে ঢাকায় পাঠানোর কথা বলেন। কিন্তু তাও পাঠায়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে শিশুটির স্বজনরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যায়। সেখানে ডাক্তাররা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেন শিশুটির ক্যান্সার। বর্তমানে শিশুটি ঢাকায় চিকিৎসাধীন রয়েছে। পুরো ঘটনাটি ঠিক এভাবে সাংবাদিকদের জানান শিশুর পিতা কুদ্দুছ হোসেন।

এদিকে এই বিষয়ে জানতে চাইলে টাওয়ার হাসপাতালের পরিচালক নজরুল ইসলাম জানান, রোগীর পক্ষ থেকে অভিযোগ দিয়ে থাকলে আপনারা নিউজ করেন।

ডা. মহিবুল ইসলাম সাহাত জানান, আমি আমার দায়িত্ব ঠিক মতোই পালন করেছি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরীক্ষার জন্য নমুনা না পাঠালে তো আমার কিছু করার নাই।

জানা যায়, এই হাসপাতালের বিরুদ্ধে এর আগেও একাধিক বার এ ধরণের অভিযোগ উঠেছে। এই হাসপাতালটির কোন অনুমোদনও নেই।

মূলত এই ধরনের মানহীন অনুমোদনহীন সাইনবোর্ডধারী হাসপাতালগুলোতে নামে-বেনামে ডাক্তার এনে রোগীদের সাথে রীতিমতো প্রতারণা করা হয়। ডাক্তাররা ভিজিটিং কার্ডে যেসব পদবী ব্যবহার করেন তা আদৌ কতটুকু সত্য তাও প্রশ্নবিদ্ধ। এসব হাসপাতাল ও ডাক্তারদের বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের তেমন কোন মনিটরিং দেখা যায় না।

অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য বিভাগের অসাধু কর্মকর্তার সাথে যোগসাজোশে এসব হাসপাতাল দীর্ঘদিন ধরে এভাবে চলে আসছে। এসব হাসপাতালে মূলত দালালের মাধ্যমে কমিশন দিয়ে রোগী আনা হয়। আর ডাক্তাররা যেখানে রোগীদের চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কথা সেখানে তারা কোন রোগী থেকে কত টাকা বেশি বিল করবে সেই চিন্তায় মগ্ন থাকেন। যার ফলে সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয় কুদ্দুছ মিয়ার ছোট্ট শিশুটির মতো অনেক শিশু।

শেয়ার করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)