শরীফুল ইসলাম :
চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পলাশপুরে সম্পত্তিগত বিরোধে গৌরাঙ্গ দেবনাথ (৬০) নামে ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে জীবন দেবনাথ (৪৩) ও হারাধন দেবনাথ (৩৮) নামে দুই ব্যাক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চাঁদপুরের জেলা ও দায়রা জজ এস এম জিয়াউর রহমান এই রায় দেন। হত্যার শিকার গৌরাঙ্গ দেবনাথ কচুয়া উপজেলার পলাশপুর গ্রামের দেবনাথ বাড়ির বাসিন্দা। যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত জীবন দেবনাথ ও হারাধন দেবনাথ একই বাড়ির জগদিশ দেবনাথের ছেলে।
মামলার বিবরণ থেকে জানাযায়, ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট দুপুর দেড়টার দিকে দেবনাথ বাড়ীতে জীবন দেবনাথ, হারাধন দেবনাথসহ তাদের পরিবারের লোকজন চলাচলের রাস্তায় বেড়া দিতে যায়। এ সময় হত্যার শিকার গৌরাঙ্গ দেবনাথ, সংকর দেবনাথ ও জোসনা বাধা দিতে গেলে তাদের সাথে তর্ক বিতর্ক হয়।
এক পর্যায়ে প্রতিপক্ষ জীবন দেবনাথ ও হারাধন দেবনাথ তাদের হাতে থাকা লোহার শাবল ও বাঁশের লাঠি দিয়ে গৌরাঙ্গ দেবনাথসহ ৩জনকে আক্রমন করে। ৩জনই গুরুতর আহত হন। এর মধ্যে মাথায় আঘাত প্রাপ্ত ও রক্তাক্ত জখম হন গৌরাঙ্গ দেবনাথ। তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে প্রথমে কচুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে চিকিৎসক ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। এরপর ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথে রাত ৮টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
এই ঘটনায় ওই দিন রাতেই গৌরাঙ্গ দেবনাথের ছেলে দুলাল দেবনাথ কচুয়া থানায় জীবন দেবনাথ, হারাধন দেবনাথ, শীতল দেবনাথ, জগদিশ দেবনাথ, পুতুল, শিখা রানী দেবনাথকে আসামী করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. ছাদেকুর রহমান মামলাটি তদন্ত শেষে ওই বছরের ৫ নভেম্বর আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। মামলায় আসামী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন মো. শফিকুর রহমান শফিক।
সরকার পক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. রনজিত রায় চৌধুরী বলেন, মামলাটি প্রায় ৮ বছর চলাকালীন সময়ে ১৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩জনের সাক্ষ্য গ্রহন করে আদালত। সাক্ষ্য গ্রহন ও মামলার নথিপত্র পর্যালোচনা করে আসামী জীবন ও হারাধনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড একই সাথে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরো ৬ মাসের কারাদন্ড দিয়েছেন। বাকী ৪ আসামী শীতল দেবনাথ, জগদিশ দেবনাথ, পুতুল, শিখা রানী দেবনাথ এর অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। রায়ের সময় আসামী জীবন দেবনাথ পলাতক ও হারাধন উপস্থিত ছিলেন।