তালহা জুবায়ের :
দুর্গম চরাঞ্চলে সম্পন্ন হয়েছিল দৃষ্টিনন্দন বিদ্যালয় ভবনের কাজ। কিন্তু একদিনের জন্যও পাঠ গ্রহণের সুযোগ পায়নি শিক্ষার্থীরা! প্রমত্তা পদ্মা চোখের সামনেই গ্রাস করে নিয়েছে কোটি টাকার বিদ্যালয় ভবনটি।
এখন সেই ভবনই গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে চরাঞ্চলবাসীর কাছে। নৌ-দুর্ঘটনার ফাঁদে পরিণত হয়েছে ডুবে যাওয়া বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি। তিন তলা বিশিষ্ট ভবনটি পানির নিচে ডুবে থাকায় যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
নৌ-দুর্ঘটনারোধে ডুবে থাকা ভবনটি চিহ্নিত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দা ও নৌযান চালকরা।
গত কয়েক দিন আগে পদ্মা নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ওমর আলী উচ্চ বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি।
কয়েক দিন নদীতে দাঁড়ানো অবস্থায় থাকলেও গত বৃহস্পতিবার সকালে নদীতে ডুবে যায় তিন তলা ভবনটি। ভাটার সময় ভবনের কিছু অংশ দেখা গেলেও নদীতে জোয়ার এলে ডুবে যায় তা।
এতে করে দুর্ঘটনার শঙ্কায় রয়েছে ওই অঞ্চল দিয়ে চলাচলকারী নৌ-যানবাহনের চালকরা। বিশেষ করে রাতের অন্ধকারে চরম ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে নৌ-যান চালকদের।
রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হযরত আলী বেপারী বলেন, ভাঙনের কারণে স্কুল কাম সাইক্লোন শেল্টারটি জোয়ারের সময় পানির নিচে তলিয়ে থাকে। আর ভাটার সময় ভবনের ওপরের কিছু অংশ দেখা যায়। এখন কোনও জাহাজ যদি এর ওপর দিয়ে যায় তাহলে তো দুর্ঘটনা ঘটে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও নৌযানের চালকরা জানায়, পদ্মা নদীর এই রুট ব্যবহার করে ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে মালবাহী কার্গো জাহাজসহ বিভিন্ন নৌযান।
জোয়ারের সময় পানিতে ডুবে থাকে ভবনটি। তাছাড়া রাতের অন্ধকারে নদীতে কিছুই বুঝা যায় না। এতে করে যে কোন সময় নৌ-দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটতে পারে।
এ রকম দুর্গম অঞ্চলে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে উদ্ধার করাও অবম্ভব হয়ে পড়বে। মাঝ নদীতে ভবনটি চিহ্নিত করতে বয়া বা বিকন বাতির ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন চরবাসীরা মানুষরা।
চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ’র যুগ্ম পরিচালক মো. মাহমুদুল হাসান, মূলত ওই অঞ্চল দিয়ে বড় ধরনের কোন নৌযান চলাচল করে না। তারপরেও আমরা ডুবে যাওয়া ভবনের স্থানটি পরিদর্শন শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য, পদ্মা-মেঘনা নদী বেষ্টিত রাজরাজেশ্বর চরে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল বিদ্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি। উদ্বোধনের অপেক্ষায় থাক বিদ্যালয়টি গত দুই মাস আগে কর্তৃপক্ষের নিকট হস্তান্তর করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। গত কয়েক দিনের ভাঙনে ওই এলাকার ৪ শতাধিক মানুষ বসতভিটা হারিয়েছে।