শরীফুল ইসলাম :
চাঁদপুরের মেঘনা নদীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চালানোর সময় নৌ-পুলিশের উপর হামলা করেছে জেলেরা। হামলায় নৌ-পুলিশের এক সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। সোমবার সন্ধ্যার পর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের সফরমালী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
জেলেদের নিক্ষিপ্ত ইটের টুকরোর আঘাতে মুখমন্ডলে মারাত্মক জখম হয় পুলিশের নায়েক হাসান মিয়ার (২৬)। গুরুতর আহত হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে।
চাঁদপুর নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান জানান, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে নৌ-পুলিশের অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় আমাদের উপস্থিতি টের পেয়ে জেলেরা জালের ইটের চাক্কি মারা শুরু করে। এতে আহত হন হাসান মিয়া। প্রথমে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এ ঘটনায় অজ্ঞাত ৫০জনকে আসামী করে নিয়মিত মামলা করেছে পুলিশ।
চাঁদপুর নৌ-পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শারমিন আক্তার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসানের নেতৃত্বে এবং মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে নৌ-পুলিশ চাঁদপুরের মেঘনা নদীর সফরমালি এলাকায় মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান চালায়। এ সময় একদল বেপরোয়া জেলে দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অভিযানকারী দলের স্পিডবোটের ওপর হামলা করে। এতে জেলেদের ছোড়া ইটের টুকরোর আঘাতে মুখমন্ডলে মারাত্মক জখম হন নায়েক হাসান মিয়া।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আরো জানান, এই অভিযান অংশ নেওয়া আরো কয়েকজন পুলিশ সামান্য আহত হন। আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান জানান, আমাদের সবার শরীরে জ্যাকেট এবং মাথায় হেলমেট ছিল। তারমধ্যেও জেলেদের নিক্ষেপ করা ইটের টুকরো পুলিশ সদস্য হাসান মিয়ার হেলমেট ভেদ করে মুখে আঘাত হানে।
এদিকে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানে নৌ-পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় সোমবার রাতে নৌ-পুলিশ বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় অজ্ঞাত অর্ধশত জেলেকে আসামি করে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছে। গত ৭ থেকে শুরু হয়ে আগামী ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন ব্যাপি মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান চলছে। এসময় ইলিশ ধরা, পরিবহন, মজুত ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সরকার।