কবির হোসেন মিজি :
সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে কঠোর অবস্থান নিয়ে তৎপর রয়েছে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। প্রতিদিনই নিয়মিত মাঠে কাজ করছেন চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন, পুলিশ বিভাগ এবং উপজেলা প্রশাসন। তাদের সহযোগিতা করতে মাঠে রয়েছেন সেনাবাহিনী, বিজিবি, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার ব্যাটেলিয়ন সদস্যরা। কঠোর লকডাউন’ বাস্তবায়ন ও স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করণে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে আসছে।
চাঁদপুরে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে এবং ঝুঁকি কমানোর লক্ষ্যে প্রতিদিনই শহরের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে বিনা প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া মানুষকে মামলা দিয়ে অর্থদÐ আদায় করা হচ্ছে। গত ১ জুলাই থেকে ৭ জুলাই পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী লকডাউনে জেলা প্রশাসন প্রায় ১শ’টির উপরে মোবাইল কোর্টে সর্বমোট ৮৮১টি মামলায় ৭ লাখ ৮০০ টাকা অর্থদন্ড আদায় করা হয়েছে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুন্নাহার এ তথ্য জানিয়েছেন। প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, লকডাউনের প্রথম দিনে স্বাস্থবিধি না মানা ও ভোক্তা অধিকার আইনে ৫৬ মামলায় ৫৬জনকে ৩৯ হাজার ৫০ টাকা অর্থদন্ড দিয়েছে পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত।
লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে ১০৬ মামলায় ১০৬জনকে ৬৯ হাজার ৬শ’ টাকা অর্থদন্ড দিয়েছে পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই দিনে রাতের অভিযানে ৯ মামলায় ২৯জনকে ১৭ হাজার ৯শ’ টাকা অর্থদন্ড দেয়া হয়।
লকডাউনের তৃতীয় দিনে ১৬৭ মামলায় ১ লাখ ২৯ হাজার ১৫০ টাকা জরিমানা করা হয়। এসব জরিমানা আদায়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে ২২টি।
চতুর্থ দিনে ১৬০ মামলায় ১ লাখ ৫৭ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা করা হয়। এতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে ১১টি।
লকডাউনের পঞ্চম দিনে জেলায় ১৪৩ মামলায় ১লাখ ৩১ হাজার ৯২০ টাকা জরিমানা করেছে জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়ে পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে ১৭টি।
ষষ্ঠ দিনে ১২৩ মামলায় ৮২ হাজার ৩৫০ টাকা জরিমানা করেছে জেলা সদর ও উপজেলা পর্যায়ে পৃথক ভ্রাম্যমাণ আদালত। এতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে ১৭টি।
লকডাউনের সপ্তম দিন ৭ জুলাই বুধবার একই ভাবে পৃথকভাবে ১৬টি মোবাইল কোর্টে ৯৭টি মামলায় ৭৩ হাজার ৮শ’ টাকা জরিমানা আদায় করেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসন।
আর এসব মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করেন, চাঁদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট অমিত চক্রবর্তী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ ছামিউল ইসলাম ও মোঃ মেহেদী হাসান মানিকসহ অন্যান্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ।
এর পাশাপাশি লকডাউনে কর্মহীন হয়ে পড়া চালক ও অসহায় দুস্থ মানুষের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন চাঁদপুর জেলা প্রশাসন। খবর নিয়ে জানা গেছে লকডাউনে গত এক সপ্তাহে প্রায় দেড় হাজার অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, চাঁদপুরে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের জেলা প্রশাসনের লোকজন নিয়মিত মাঠে রয়েছে। প্রতিদিনই চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটবৃন্দ। সরকার ঘোষিত এই লকডাউন বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের এই তৎপরতা ও মোবাইল কোর্ট অব্যাহত থাকবে।