শাওন পাটওয়ারী :
চাঁদপুর শহরে আবারো বেড়েছে কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য। প্রতি বছর রমজানে বেপরোয়া হয়ে ওঠে শহরের ১৩ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিশোররা। সম্প্রতি বেপরোয়া হয়ে ওঠা কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে মাঠে নেমেছে চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশ।
সোমবার শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযান চালিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের ১৫ সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে আটককৃতদের মুচলেকা রেখে অভিভাবকদের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয়।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ আবদুর রশিদের নির্দেশে এসআই জাকির হোসেন, তওহীদ, চাঁদপুর নতুনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই ইসমাইল হোসেন ও পুরাণবাজার পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আমিরুল ইসলাম সোমবার বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত শহরের মিশন রোড, বাসস্ট্যান্ড ফয়সাল মার্কেটের সামনে থেকে অভিযান করে তাদেরকে আটক করা হয়।
এদিকে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ছাত্র সংগঠনের উঠতি কিছু নব্য নেতারা নিজেদের আধিপত্য প্রমাণ দিতে হাইস্কুলপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের টার্গেট করে নিজেদের দলে ভেড়ায়। মিছিল মিটিং শোডাউন দেখাতে কাজে লাগায় তাদের। এদিকে এ কিশোররা অমুক ভাই, তমুক ভাইয়ের লোক পরিচয়ে সহপাঠী এমনকি বড় ভাইদের সাথে সিনিয়র-জুনিয়র প্রেম-ভালোবাসা ও নেশার টাকা জোগাড়ে ঝামেলায় জড়ায়। শুরু হয় কোপাকুপি, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা। আর এই ঘটনাগুলো ঘটাতে দরকার হয় অস্ত্রের। সেই অস্ত্র পাওয়া যায় সহজলভ্য স্থানে। শহরের ১ থেকে ৯৯ টাকা ও ১ থেকে ২৯৯ টাকার দোকানগুলোতে মিলছে চকচকে চাপাতি, চায়না ছুড়ি আরো কতকি।
বিশেষজ্ঞরা বলছে, কিশোরগ্যাংদের রুখতে না পারলে সমাজে চরম অবক্ষয় দেখা দিবে। হানাহানি, মারামারি কোপাকুপি ও কিশোর অপরাধ বৃদ্ধি পাবে জোরেসরে। প্রশাসনের পাশাপাশি অভিভাবকদের এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ জানান, অভিভাবকদের দায়িত্বহীনতা, খারাপ সংঙ্গসহ নানা কারণে এই কিশোর গ্যাংয়ের সৃষ্টি। মাহে রমজানে ইফতারের পর উঠতি বয়সের কিশোরদের আড্ডারত অবস্থায় পেলেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারা রমজান মাসে নামাজের নাম করে বাসা থেকে বের হয়ে নানা অপরাধে লিপ্ত হয়। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনার সন্তান কোথায় যায়, কি করে সেদিকে নজর রাখতে হবে। সন্ধ্যার পর স্কুল কলেজ পড়ুয়া সন্তানদের বাসার বাইরে অকারণে যেতে দিবেন না।