নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সদর উপজেলার মৈশাদী ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডে জনগুরুত্বপূর্ণ ১১৬৫ মিটার সড়ক নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের ইট। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কাজের মান খারাপ এবং রাস্তা নির্মাণ কাজেও করা হয়েছে অনিয়ম- এমন অভিযোগ এলাকাবাসীর।
জানা গেছে, গুরুত্বপূর্ণ পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প-৩ এর আওতায় মধ্য মৈশাদী ২নং ওয়ার্ড দিঘির পূর্ব পাড়ের সড়কটির পাকাকরণ কাজ শুরু হয়। ১১৬৫ মিটার সড়কটি এই প্রথমই পাড়াকরণ হচ্ছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের মাধ্যমে প্রায় ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে ইটের সলিং কাজ শুরু হয় ৩ মাস পূর্বে। সড়কের কাজে এক নম্বর ইট দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার নিম্নমানের ইট ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানান, দিঘিরপাড়ের এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। এখন যাই সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে, এরমধ্যে আবার দুর্নীতি। রাস্তা নির্মাণ ইটের সলিং শুরু হলেও ঠিকাদার নিম্নমানের ইট দিয়ে কাজ করছে। ফলে সড়কটি দ্রুত দেবে নষ্ট হচ্ছে। তারা প্রভাব খাটিয়ে এসব অনিয়ম করে আসছে। রাস্তারে পাশের দোকানীরাও ভয়ে কিছু বলে না। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এখানে পাকা সকড় করা। এখন পাকা সড়ক হচ্ছে, সেটি যেন শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত কাজ হয়।
শ্রমিক ঠিকাদার জাবেদ বলেন, সড়কটিতে ইটের সলিং কাজে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক কাজ করে। এখানে যে মানের ইট-বালু ব্যবহার হচ্ছে, তা খারাপ হওয়ার কথা না। ব্রিকফিল্ড থেকে যখন ইট আনা হয়, তখন ভালো ইটের সাথে কিছু খারাপ ইট ঢুকিয়ে দেয়। যার জন্য কাজ করার সময় মানুষের নজরে খারাপ ইটের দৃশ্য চোখে পড়ে। মূলত আমরা এক নাম্বার ইট দিয়েই কাজ করছি।
এ বিষয়ে ঠিকাদার আলমগীর হোসেন বলেন, মূলত আমি এই কাজের ঠিকাদার না। আমার এক ভাই ফরিদঞ্জের টিপু ভাইয়ের কাজ। আমার বাড়ি কাছে হওয়ায় তিনি আমাকে এই কাজের দায়িত্ব দেন। কতটাকা ব্যয়ে কাজ হচ্ছে আমার জানা নেই। আমি সাব ঠিকাদার হিসেবে কাজ করছি। মানুষের চোখে শুধু খারাপ দিক নজরে পড়ে। আমরা যে মানের কাজ করছি, তা লুকিয়ে রাখার মতো না। এখানকার ইট-বালু ল্যাবে পরীক্ষা করেই কাজ করা হচ্ছে। কিছু কিছু জায়গায় সমস্যা হতে পারে, তাই বলে নিম্নমানের কোন কাজ হয়নি।
মৈশাদী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মানিক বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে মানুষের দাবি ছিল যেন এই সড়কটি পাকা করা হয়। আমাদের স্থানীয় এমপি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ আমরা এই সড়কটি পাকাকরণের জন্য চেষ্টা করি। প্রায় কোটি টাকা ব্যয়ে এ রাস্তার কাজ শুরু হয়। কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষ আমার কাছে নিম্নমনের কাজ প্রসঙ্গে অভিযোগ করেছে। আমি তাদের বলেছি, নিম্নমানের ইট চোখে পড়লেই দিঘিতে ফেলে দেওয়ার জন্য। আমি এলাকার মানুষদের ঠিকাদের সাথে কথা বলতে বলেছি। আমরা চাই ঠিকাদের সাথে সমন্বয় করে এখানে ভালো একটি কাজ হোক। যদিও এখন পর্যন্ত ঠিকাদারের কেউ আমার সাথে সড়কের কাজ নিয়ে যোগাযোগ কিংবা সমন্বয় করেনি। এখন পর্যন্ত যে কাজ হয়েছে, সন্তোষজনক নয় বললেই চলে।