শরীফুল ইসলাম :
পড়াশোনায় মন বসতো না অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার শামীম হোসেন পাটোয়ারী। এই কিশোর স্কুল ফাঁকি দিয়ে পড়ে থাকতেন খেলার মাঠে। এ জন্য মারও খেতেন বাবার হাতে। প্রথমবারের মতো চাঁদপুর জেলার প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন শামীম পাটোয়ারী। এমন সুযোগ পাওয়ায় শামীমের পরিবার, বন্ধু, স্বজন, কোচসহ পুরো ক্রীড়াঙ্গনে বইছে আনন্দের বন্যা।
শামীম হোসেন পাটোয়ারী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ধানুয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ পাটোয়ারীর ছেলে। ক্লেমন একাডেমিতে অনূর্ধ্ব-১৪ থেকে অনূর্ধ্ব-১৬ পর্যন্ত খেলেছিলেন শামীম। বিকেএসপিতে ভর্তি হন ২০১৫ সালে। এরপর অনূর্ধ্ব-১৭, অনূর্ধ্ব-১৮ হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে জায়গা করে নেন তিনি। ২০১৮ যুব বিশ্বকাপের জন্য বাংলাদেশের ক্যাম্পে ডাক পেলেও সেবার মূল দলে ঠাঁই হয়নি তার। সে আক্ষপে মিটে তার হাতে উঠেছে বিশ্বসেরার ট্রফিও। এবার জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ পেলেন শামীম পাটোয়ারী।
শামীম হোসেন পাটোয়ারীর বাবা আব্দুল হামিদ পাটোয়ারী বলেন, আজ আমি অনেক খুব খুশি। তার মা নামাজ পড়ে দোয়া করছে। ছোটবেলায় স্কুলে না গিয়ে খেলার মাঠে পড়ে থাকার জন্য ওকে অনেক মেরেছি। তবু স্কুলে ফেরাতে পারিনি। আজ আমার ছেলে জিম্বাবুয়ে সফরের জন্য বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছে। আমার এবং আমার স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে সবাই শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।
শামীমের মা রিনা বেগম বলেন, শামীম ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেট পছন্দ করতো। পড়াশুোনা করতো না বলে তাকে অনেক বোকা দিতাম। তারপরও সে খেলোত পরে ওর চাচা আনোয়ার তাকে চাঁদপুরের ক্লেমন ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করে দেন। আজকের শামীমের পিছনে তার চাচার অনেক অবদান আছে।
ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন চাঁদপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক পলাশ কুমার সোম বলেন, শামীম এক সময় চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমিত খেলতো। তখন তার খেলা দেখে মনে হয়েছে সে একদিন জাতীয় দলে খেলার সুযোগ পাবে। যা তাই সত্যি হলো। তার জন্য আমাদের দোয়া রইল। সে আরো এগিয়ে গিয়ে চাঁদপুরের সুনাম বয়ে আনবে।
ক্লেমন চাঁদপুর ক্রিকেট একাডেমির কোচ শামীম ফারুকী বলেন, শামীম-জয় আমার ছাত্র। শামীম ন্যাচারালি ট্যালেন্টেড ক্রিকেটার। বাংলাদেশ জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ায় আমি অত্যান্ত খুশি হয়েছি। আমি আশাবাদী শামীম জাতীয় দলেও ভালো খেলবে এবং চাঁদপুরের সম্মান বাড়াবে।
জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা বলেন, শামীম চাঁদপুরের গর্ব। এই সুযোগ তাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাবে। শামীম চাঁদপুরের সুনাম ছড়িয়েছেন। আমি জেলা ক্রীড়াঙ্গণের পক্ষ থেকে তার জন্য শুভকামনা জানাই।