নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীর পাড়ে গড়ে ওঠা মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে এসে অরক্ষিত নদীতীরে সাঁতার কাটতে গিয়ে পানিতে ডুবে আবির আহাম্মেদ (১২) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। একই সময় ঘুরতে আসা আরো দুই শিশু পানিতে তলিয়ে গেলেও তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে রাত সাড়ে ৭টার দিকে চাঁদপুর নৌ-ফায়ার স্টেশনের ডুবুরি রাজিব হোসেন ও সহকর্মীরা আবির আহাম্মেদের মৃতদেহ উদ্ধার করেন। আবির চাঁদপুর শহরের প্রফেসারপাড়া এলাকার মো. সুমন মিয়ার ছেলে।
শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মতল উত্তর উপজেলার মোহনপুর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ পরিদর্শক মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, বিকেলে অনেক লোকজন ঘুরতে আসে মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে। পর্যটন কেন্দ্রের পাশেই মেঘনা নদীতে সাঁতার দেয়ার জন্য একটি জোন তৈরী করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে স্থানটি নিরাপদ নয়। সেখানে অনেক শিশু-কিশোর পানিতে নেমেছে। এর মধ্যে ৩জন পানিতে তলিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ২ শিশুকে উদ্ধার করলেত পারলেও আবির নামে শিশুকে উদ্ধার করতে পারেনি। পরে চাঁদপুর থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি এসে উদ্ধার করে।
তিনি আরো বলেন, নিহত শিশুর পিতা মো. সুমন মিয়া রাতেই অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের (এডিএম) কাছে ময়নাতদন্ত ছাড়া মরদেহ নেয়ার জন্য আবেদন করেন। পরে আমরা পিতা-মাতার কাছে মরদেহ হস্তান্তর করি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, গতবছর ঢাকা ডেমরা থেকে পরিবারের সাথে ঘুরতে আসা এক শিশু একই স্থানে ডুবে মৃত্যু হয়। কিন্তু পর্যটন কেন্দ্র কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কোন সতর্কতা অবলম্বন করেনি। সাঁতার না জানা শিশুদের নামতে দেয়া কোনভাবে ঠিক হচ্ছে না। এখানে এই ধরণের ঘটনা ঘটলে গণমাধ্যমকেও জানানো হয় না।
চাঁদপুর নৌ-ফায়ার স্টেশনের ফায়ার পাইটার নুর মোহাম্মদ ভুঁইয়া জানান, নিহত শিশুর মা কোহিনুর আক্তার ৩ সন্তানকে নিয়ে মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে ঘুরতে যান। এর মধ্যে আবির পানিতে সাঁতার কাটতে গিয়ে আনুমানিক বিকেল ৩টা ২০ মিনিটের দিকে নিখোঁজ হয়। সংবাদ পেয়ে আমরা সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। সাড়ে ৭টার দিকে আবিরকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। পরে মোহনপুর পুলিশ ফাঁড়িতে শিশুর মরদেহ হস্তান্তর করে চলে আসি।
এ বিষয়ে বক্তব্যের জন্য মোহনপুর পর্যটন লিমিটেড এর মালিক পক্ষ কাজী মিজানুর রহমানের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে কল দেয়া হয়। তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন বলেন, মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্রে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু হয়েছে এমন কোন তথ্যই আমার কাছে নেই, আমাকে কেউ জানায়নি।