অনৈতিহাসিক : আগস্টের দিনরাত্রির কথা

মুহম্মদ শফিকুর রহমান :
আমাদের বাঙালি জীবনে ৩৬৫ দিনই গুরুত্বপূর্ণ। অর্থাৎ ১২ মাস ৩৬৫ দিন, ৮৭৬০ ঘন্টা, ৫,২৫,৬০০ মিনিট এবং ৩,১৫,৩৬,০০০ সেকেন্ড সবই গুরুত্বপূর্ণ। খুব পেছনে না গেলেও চর্যাপদের যুগ থেকে এমন একটি দিন একটি ক্ষণ পাওয়া যাবেনা যেদিন যে ক্ষণ কোথাও না কোথাও রক্ত ঝরেনি।চর্যাপদের কবিরা শেষপর্যন্ত জীবন বাঁচাতে তিব্বতে গিয়ে গোয়ালঘরে পালিয়ে ছিলেন। তার মধ্যেও কালোরাত্রির দিনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে শোকাবহ সবচেয়ে দুঃখজনক সবচেয়ে অমানবিক সবচেয়ে অধার্মিক দিন ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ড, যার নজির বিশ্বে খুঁজে পাওয়া যাবে না:
• ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোর চারটায় যখন মসজিদের মুয়াজ্জিন ফজরের আযান দিচ্ছিলেন “হাইউ আলাস সালাহ, হাইউ আলাল ফালাহ” [নামাজের জন্য জাগো ওঠো মুক্তির জন্য জাগো ওঠো দৌড়াও] ঠিক সেই মুহুর্তে একদল খুনি মসজিদে না যেয়ে ধানমন্ডির ঐতিহাসিক ৩২ নম্বরের বাসভবনে ঢুকে পড়ে এবং একে একে বাড়ির সবাইকে হত্যা করল। হত্যা করল বাংলার হৃদয়:
১. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-বাঙালির জাতি-রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা পিতা, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী মহাকালের ইতিহাসের মহানায়ক, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাংলাদেশের প্রেসিডেন্টকে হত্যা করল।
২. জাতির পিতার আমরণ সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম শেখ ফজিলাতুন্নিসা মুজিব, যিনি নেপথ্য থেকে এবং বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে কারাগারে নিয়ে গেলে আওয়ামী লীগ ছাত্রলীগ পরিচালনা করতেন। এমনকি কঠিন সময় গুলোতে বঙ্গবন্ধুকে সঠিক পথ দেখাতেন। একই সঙ্গে সংসার চালানো সন্তানদের উপযুক্ত শিক্ষা ও মানবিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি আমাদের বেগম রোকেয়া। পাষণ্ডরা তাঁকে হত্যা করল।
৩. শেখ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী এবং ছাত্রনেতা, স্বাধীনতা উত্তর আধুনিক ফুটবল ও ক্রিকেটের জনক, আধুনিক নাটক বিনির্মানে কার্যকর নেতৃত্বদান, একই সঙ্গে নিজে সঙ্গীত চর্চা করতেন এবং সঙ্গীতের দল গড়ে তোলেন। ঘাতকরা প্রথম গুলিটি তার বুকে বিদ্ধ করে।
৪. শেখ সুলতানা কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ক্রীড়াবিদ ও শেখ কামালের নবপরিণীতা সহধর্মিনী, মাত্র এক মাস আগে তাঁদের বিয়ে হয়। স্বামীর সাথে তাকেও হত্যা করল।
৫. লেঃ শেখ জামাল, ইংল্যান্ডের সন্ট হাস্ট-এর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তরুণ আর্মি অফিসার
৬. শেখ রোজী জামাল, লেঃ শেখ জামালের নবপরিণীতা বধু। মাত্র ১ সপ্তাহ আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল। তাকেও স্বামীর সাথে হত্যা করল।
৭. সবার ছোট এবং আদরের শেখ রাসেল, তখন বয়স মাত্র নয় বছর। খুনিদের কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল (প্রথমে) আমাকে মায়ের কাছে নিয়ে যাও (এরপর) আমাকে ছেড়ে দাও আমি দূরে চলে যাব, আর এ বাড়িতে আসবোনা। এই শিশুর বুকে গুলি চালাতে ওদের হাত কাপেনি।
৮. বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ছোট ভাই শেখ নাসের
৯. অন্য বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, অসম্ভব মেধাবী, দূরদৃষ্টি সম্পন্ন যুবনেতা, প্রখ্যাত সাংবাদিক ও সংগঠক।
১০. শেখ আরজু মনি, তখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। খুনিরা স্বামী শেখ মনির দিকে বন্দুক তাক করলে তিনি সামনে গিয়ে ঢাল হয়ে দাঁড়ান এবং একসঙ্গে জীবন উৎসর্গ করেন।
১১. অন্য বাড়িতে বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি ও মন্ত্রী আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ও তার পরিবারের ৪ বছরের শিশু সুকান্ত বাবু এবং আরও ২ জন কিশোর-কিশোরীসহ কয়েক জনকে হত্যা করে।
১২. কর্নেল জামিল, বঙ্গবন্ধুর সামরিক সচিব যিনি খুনিদের সতর্কবাণী উপেক্ষা করে বঙ্গবন্ধুকে বাঁচাতে চেয়েছিলেন।

নামগুলো এভাবে উপস্থাপনের পেছনে আমার একটা লক্ষ্য আছে। বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার পরিজনকে হত্যা করা হয়েছে ৪৫ বছর পার হয়ে গেছে। আজও বাংলার অনেক স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীকে প্রশ্ন করা হলে সবার নাম বলতে পারবেনা। এই বলতে না পারাটা দীনতা এবং সেই ছেলে বা মেয়ে বাংলাদেশের সুনাগরিক হতে পারেনা। একইসঙ্গে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হল কারা হত্যাকাণ্ডটি ঘটাল নেপথ্যে কারা ছিল অর্থাৎ আগস্ট ট্রাজেডি সম্পর্কে অজ্ঞ তাদের কি বলবো কুনাগরিক এবং বিশ্বাসঘাতক।

সমবেত জনতার পক্ষে আমাদের প্রশ্ন
অতি সাধারণ প্রশ্ন
১৫ আগস্ট যারা গুলি চালিয়েছিলে
১৫ আগস্ট যারা ম্যাগাজিনে বুলেট ভরেছিলে
১৫ আগস্ট যারা বন্দুকের যোগান দিয়েছিলে
১৫ আগস্ট যারা গুলি সরবরাহ করেছিলে
১৫ আগস্ট যারা ক্যান্টনমেন্ট থেকে ট্যাং নিয়ে বেরিয়েছিলে
তারা কি বঙ্গসন্তান নাকি বঙ্গসন্তানের চেহারায় অন্য কারো জন্ম
সমবেত জনতার প্রশ্ন।।
আমরা সবাইকে চিনিনা
যাদের আমরা চিনি তাদের কাছে তো বটেই
যাদের আমরা চিনিনা তাদের কাছেও
সমবেত জনতার প্রশ্ন।।
আমরা কেবল জানি
ফারুক-রশীদ হুদা মোসলেমদের
যারা সরাসরি গুলি চালিয়েছিলে
মিলিটারি জিয়া মুস্তাকদের
চাষী ঠাকুরদের
যারা ম্যাগাজিনে বুলেট ভরেছিল
যারা বন্দুকের যোগান দিয়েছিলে
যারা গ্রেনেড ট্যাংক সরবরাহ করেছিল
তাদের পেছনে কারা ছিল
তাদের আমরা চিনিনা।।
এই চেনা-অচেনা সবার কাছে সমবেত জনতার প্রশ্ন
শেখ রাসেলের বুকে গুলি চালাবার মুহূর্তে
ও কেঁদেছিল কি?
কিছু বলেছিল কি?
তার চোখে-মুখে ভীতি ছিল কি?
চোখে জল ছিল কি?
খুব জানতে ইচ্ছে করে
কত রক্ত ঝরেছিল ওঁর বুক থেকে
তোমাদের ভয় কি খুনিরা
তোমাদেরতো ফাঁসি হয়ে গেছে
তোমরাতো মরে গেছো
শুনেছি মৃত্যুর সময় মানুষ সত্য বলে যায়
তোমাদের আত্মাতো ঘুরে বেড়াচ্ছে
দাওনা বলে সেই দিনরাত্রির কথা।।
বঙ্গবন্ধুর বুকে গুলি চালাবার মুহূর্তে তার চেহারায় ভীতি ছিল কি?
আমরা জানি ছিলনা
থাকার কথা নয়
ভীতি নামক কোনো শব্দ তাঁর অভিধানে নেই
কোন দিনও ছিলনা
তোমরা কেবল বলে দাও ঐ মুহূর্তে তিনি কি বলেছিলেন
সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে কি বলেছিলেন
তার প্রিয় বাংলার গরীব দুঃখী মানুষের উদ্দেশে কি বলেছিলেন
তার অবর্তমানে কন্যা শেখ হাসিনার উদ্দেশে কি বলেছিলেন
জয় পুতুল শেখ রেহানা টিউলিপের উদ্দেশে কি বলেছিলেন?
‘হাইউ আলাস সালাহ
হাইউ আলাল ফালাহ’
[নামাজের জন্য জাগো ওঠো
পরকালের মুক্তির জন্য জাগো ওঠো, দৌড়াও]
সমবেত জনতার প্রশ্ন
তোমরা কি নামাজ পড়েছিলে
তোমরা কি মুক্তির জন্য দৌড়ে ছিলে
এ প্রশ্নের উত্তর আরো বেশি জরুরি।।
ফজরের আযানের সেই সুললিত বাণীকেও
তোমরা গুলিতে ক্ষতবিক্ষত করেছিলে
যখন ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নামাজে দাঁড়াবার কথা ছিল।।
আমরা জানি যে মানুষ নামাজ পড়ে
সে মানুষ খুন করতে পারেনা
যে মানুষ আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের বিশ্বাস লালন করে
সে নামাজ ছাড়া থাকতে পারেনা
যে মানুষ প্রিয় নবী মুহাম্মদ (স:) কে জানে মানে
সে অমানবিক হতে পারেনা
সে মানুষ হত্যা করতে পারেনা
সে মানুষ নারী ও শিশু হত্যা করতে পারেনা
সে মানুষ চারা গাছ ধ্বংস করতে পারেনা।।
খুনি ফারুক-রশিদ
তোমাদেরতো চাকরি থাকার কথা ছিলনা
প্রমোশন পাওয়ার কথা ছিলনা
তবু তোমরা সব পেয়েছো
জিয়া তোমারতো DCS হবার কথা ছিলনা
তবু তুমি বঙ্গবন্ধুর কাছ থেকে বাগিয়েছিলে
মুস্তাক তোমারতো মন্ত্রী হবার কথা ছিলনা
বিষন্ন চেহারা নিয়ে বসেছিলে
ভেতরে ভেতরে শেয়ালের মতো বদ মতলব
মন্ত্রিত্ব ভাগিয়ে নিয়েছিলে
তোমরা দুজন অন্তত বলে দাও
বঙ্গমাতার কোল থেকে রাসেলকে কে কেড়ে নিয়েছিল?
বলে দাও কামাল জামালের
নবপরিণীতা বধু সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল-এর
হাতের মেহেদির রং
রক্তে ভিজে গড়িয়ে পড়েছিল কি?
৩২-এর পাশের লেকের পানি লাল হয়েছিল কি?
তাদের চোখে জল ছিল কি?
এইটুকু অন্তত বলে দাও।।
কিন্তু তোমরা না বললেও
আমরা বনের পাখির চোখে জল দেখেছি
৩২-এর সামনে হিজল গাছে শালিখের চোখে জল দেখেছি
কোকিলের চোখের জল দেখেছি
৩২-এর দেয়ালে বসা কাকের চোখে জল দেখেছি
আমরা দেখেছি রাস্তার কুকুর দল বেঁধে কেঁদেছে
দল বেঁধে ঘেউ ঘেউ করে প্রতিবাদ করেছে
আমরা দেখেছি মাঠের কৃষক কাস্তে পেলে দাঁড়িয়েছিল
আমরা দেখেছি কিষাণী মাথার ধানের আঁটি ফেলে দিয়েছিল
আমরা দেখেছি ডাস্টবিনের উচ্ছিষ্ট খাবারও খায়নি লাওয়ারিশ কুকুর
আমরা দেখেছি কাঁদছিল তারই গার্লফ্রেন্ড
রাস্তার চলমান যান দাঁড়িয়ে ছিল
পথিক থমকে দাঁড়িয়ে ছিল
অফিসের তালা খোলেনি
দপ্তরি স্কুলের ঘন্টা বাজায়নি
রাস্তায় কেবল ২/৪ খানা মিলিটারি গাড়ি চলছিল
লাল পিঁপড়ার দল রাজপথে নেমে এসেছিল
লাইন ধরে
নামেনি কেবল ভদ্রজন
আগের দিনও যারা দাবড়ে বেরিয়েছেন
বাকশালের বিকল্প কিছু নেই
সবাই এখন হোম কোয়ারেন্টাইনে
বাঙালির প্রিয় বঙ্গবন্ধু
এদের জন্যই আপনি বাংলাদেশ স্বাধীন করে দিয়েছেন
এদের জন্যই আপনি ১৩ বছর কারাবন্দী ছিলেন
এদের জন্যই আপনি ফাঁসির মঞ্চে গিয়েও জীবনের জয়গান গেয়েছেন
এদের জন্যই আপনি জীবন উৎসর্গ করলেন।।
আমিন।।

২১ আগস্ট :
সমবেত জনতার পক্ষে আমাদের আরো প্রশ্ন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলা চালিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেত্রী এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী মিসেস আইভি রহমানসহ ঘটনাস্থলেই ২৩ জন নেতাকর্মী সাধারন মানুষ নিহত হন এবং আহত হন আরো তিন শতাধিক। আহতদের মধ্যে আব্দুর রাজ্জাক মোহাম্মদ হানিফ সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত গ্রেনেডের ইসপ্লিন্টার বয়ে বয়ে যন্ত্রণায় কাতরাতে কাতরাতে ইন্তেকাল করেছেন। এখনো নারীসহ বহুজন যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাদের দেখাশোনা করছেন। ঐ গ্রেনেড হামলায় মাননীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এক কানের শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখনো তাকে চিকিৎসা করাতে হচ্ছে:
সমবেত জনতার পক্ষে আমাদের প্রশ্ন
কেন এই বর্বর হামলা চালানো হলো
এরই মধ্যে কিছুটা পরিষ্কার হয়েছে
তারেক রহমানের হাওয়া ভবনে বসে
তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
যার নাম Looking for শত্রুজ
লুৎফুজ্জামান বাবর
জনৈক মাওলানা তাজউদ্দিন (সম্ভবত)
উপস্থিত আরেক ষড়যন্ত্রকারী খুনি
মুফতি হান্নান
ধরা পড়ে সব বলে দিয়েছে
যা ভয়ংকর
খুনি মিলিটারি জিয়া খালেদা তময়
তারেক রহমান এই হামলার প্রধান
কুশীলব পরিকল্পনাকারী
বাপ বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে
স্ত্রী-ছেলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে
হত্যা করতে চেয়েছে
মহান আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন
রাখে আল্লাহ মারে কে?

২০০৪ সাল তখন খালেদা জিয়া অর্থাৎ মিলিটারি জিয়া পত্নী খালেদা জিয়া রাষ্ট্রক্ষমতায়। নির্বাচনটি হয়েছিল ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবর। সেদিন মিলিটারি দিয়ে গোটা নির্বাচন লুট করে নিয়ে যায়। তাতেও মন ভরেনি। নির্বাচনের রেজাল্ট আউট হবার আগে বিকেল থেকে নৌকার ভোটার, আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় বিশেষ করে হিন্দুদের ওপর শুরু হয় জঘন্য সাম্প্রদায়িক হামলা। হিন্দুদের বাড়িঘর লুট হিন্দু নারীদের ধর্ষণ পুকুরের মাছ গোয়ালের গরু বনের গাছ কেটে নিয়ে যায়।বিএনপি ছাত্রদল এবং জামাত শিবির এই জঘন্য হামলায় সরাসরি অংশগ্রহণ করে।

এইভাবে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হন এবং তার ছেলে তারেক লেখাপড়ায় লবডঙ্গ তাই লুটপাটকেই ডিগ্রী এবং রাজনীতি হিসেবে বেছে নেয়। লুটপাটের কেন্দ্র হিসেবে হাওয়া ভবন বানায় যার নাম তখন মানুষ দিয়েছে খাওয়া ভবন। এজন্যে যে, যে কোন ব্যবসা তারেককে না জানিয়ে হতোনা এবং বিরাট অংকের কমিশন দিয়ে আসতে হতো। খালেদার দুই ছেলে তারেক ও আরাফাত রাতারাতি বিলিয়নিয়ার হয়ে ওঠে। একই সঙ্গে খোয়াব ভবন নামে এক প্রমোদ ভবন বানায়। ক্লান্তি দূর করতে সেখানে যেত। রাত কাটাতো। তখন একটা কথা চালু ছিল যে তারেকের জন্য মুম্বাইয়ের সুন্দরী নায়িকাদের আনা হতো। একটু আনন্দের জন্য। যেদিন খালেদা জিয়ার পতন হলো সেদিন তার বেডরুমের ফ্রিজে মদের বোতল। কেউ কেউ বলে ওখানে পর্নো সিডিও পাওয়া গেছে।

এই খালেদা জিয়া প্রথমে এক বিচারপতিকে দিয়ে একটি তদন্ত কমিশন করেন। শুনেছি বিচারপতি নাকি বলেছেন ভারত থেকে এসে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। তারপর জজ মিয়া নাটক সাজানো হয়। খালেদা জিয়া নিজে পার্লামেন্টে বলেছেন শেখ হাসিনা ভ্যানিটি ব্যাগে করে গ্রেনেড নিয়ে গিয়েছিলেন তাই বিস্ফোরিত হয়েছে। এত বড় মিথ্যা আর কেউ কখনও বলেছে কিনা আমার জানা নেই।।
[এই কলামে যা লেখা হলো সবই জানা ঘটনা। তারপরও অনেকেই জেনেও না জানার ভান করে। ছেলেমেয়েদের জানতে না দিয়ে এক বিকৃত প্রজন্ম গড়ার চেষ্টা করে, তাদের জন্যে]

ঢাকা – ১৯ আগস্ট ২০২০
লেখক – এমপি ও সিনিয়র সাংবাদিক
সাবেক – সভাপতি, জাতীয় প্রেসক্লাব
ই-মেইল – balisshafiq@gmail.com

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)