করোনার নমুনা সংগ্রহে প্রস্তুত চাঁদপুরের ৮ হাসপাতাল

রহিম বাদশা :
সন্দেহভাজন রোগী/ব্যক্তির করোনা টেস্টের নমুনা (সেম্পল) সংগ্রহের জন্য প্রস্তুত চাঁদপুরের ৮টি সরকারি হাসপাতাল। হাসপাতালগুলোর মধ্যে রয়েছে জেলা সদরে অবস্থিত ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতাল এবং জেলা সদরের বাইরে অবস্থিত ৭টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এর বাইরে চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়েও এই নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার চাঁদপুর জেলার ৫টি উপজেলা থেকে ১০জনের নমুনা সংগ্রহ করার মধ্য দিয়ে চাঁদপুরে এই কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু সন্দেহভাজন রোগী না পাওয়ায় শুক্রবার চাঁদপুর জেলায় কোনো নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। আর সন্দেহভাজন রোগী না পাওয়ায় এখন পর্যন্ত চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালে নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়নি।

হাসপাতালগুলো এখন মূলত বিকল্প পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করছে। নমুনা সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় মিডিয়া (সিরিঞ্জ, বক্স ও অন্যান্য সরঞ্জাম) এখন পর্যন্ত চাঁদপুর জেলায় সরবরাহ করা হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই মিডিয়া সরবরাহ করার কথা।

গত বৃহস্পতিবার হঠাৎ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জরুরী নোটিশে চাঁদপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে ১০জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। দেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী সনাক্তের পর এটাই চাঁদপুরে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক লোকের একযোগে করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহের ঘটনা। বিশেষ ব্যবস্থায় শুক্রবার সকালে এসব নমুনা কুমিল্লার সিভিল সার্জন অফিস হয়ে ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকায় আইইডিসিআর’র পরীক্ষা কেন্দ্রে এসব নমুনা টেস্ট করা হবে। আজ শনিবার এসব নমুনা টেস্টের রিপোর্ট জানানোর কথা রয়েছে।

বৃহস্পতিবার করোনার নমুনা সংগ্রহ করা উপজেলার মধ্যে রয়েছে- চাঁদপুর সদর, হাইমচর, মতলব দক্ষিণ, ফরিদগঞ্জ ও হাজীগঞ্জ। স্ব স্ব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত টেকনোলজিস্টের মাধ্যমে এসব নমুনা সংগ্রহ করা হয়। এসব টেকনোলজিস্টকে ইতোপূর্বে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল।

চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ জানান, সাসপেক্টেড (সন্দেহভাজন) রোগী না পাওয়ায় শুক্রবার চাঁদপুর জেলার কোনো উপজেলায়’ই কোনো রোগী নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। তবে যখনি সাসপেক্টেড রোগী পাওয়া যাবে তখনি নমুনা সংগ্রহের জন্য প্রস্তত প্রতিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স/স্বাস্থ্য বিভাগ।

তিনি আরো জানান, বৃহস্পতিবার জরুরী নোটিশ পাওয়ার পর টার্গেট ফিলাপ করতে রেনডমলি মোটামুটি/সামান্য সন্দেহভাজন লোকেরও নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু শুক্রবার বিকেলে মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা আসে, এখন থেকে শুধুমাত্র সাসপেক্টেড রোগী/লোকের নমুনা সংগ্রহ করতে হবে। শুক্রবার সারা জেলায় কোনো সাসপেক্টেড রোগী/লোক পাওয়া যায়নি।

সিভিল সার্জন বলেন, মূলত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রেরিত বিশেষ মিডিয়ার মাধ্যমে করোনার নমুনা সংগ্রহ করার কথা। কিন্তু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনো আমাদের সেই মিডিয়া না দেওয়ায় আমরা সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক আপাতত বিকল্প পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করছি। মিডিয়া আসা মাত্র সেগুলোর ব্যবহার শুরু হবে। তিনি জানান, বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধি সরাসরি এসব মিডিয়া সিভিল সার্জন অফিসে পৌঁছে দেওয়ার কথা।

অন্যদিকে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল (সদর) হাসপাতালের আরএমও ও করোনা বিষয়ক ফোকালপার্সন ডা. সুজাউদ্দৌলা রুবেল শুক্রবার রাতে চাঁদপুর প্রবাহকে জানান, সাসপেক্টেড রোগী না পাওয়ায় তারা এখনো করোনা টেস্টের নমুনা সংগ্রহ শুরু করতে পারেননি। জ্বর/সর্দি, কাশি, গলাব্যাথার সাথে শ্বাসকষ্ট থাকলে করোনা টেস্ট করা জরুরী বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ ধরনের উপসর্গ থাকা লোককে জেলা সদর হাসপাতাল কিংবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসা/যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

উল্লেখ্য, উপজেলা পর্যায়ে একমাত্র চাঁদপুর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কোনো হাসপাতাল নেই। তবে হাসপাতাল না থাকলেও সদর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অফিসে করোনার নমুনা সংগ্রহের ব্যবস্থা রয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজেদা বেগম পলিন বলেন, শুক্রবার আমরা কোনো করোনা সাসপেক্টেড রোগীর তথ্য/অভিযোগ পাইনি।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)