চাঁদপুরের হাইমচরে ১৫ হাজার পরিবারে ত্রাণ পৌঁছালেন নূর হোসেন পাটোয়ারী

নিজস্ব প্রতিনিধি :
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির পক্ষে হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নূর হোসেন পাটওয়ারীর উদ্যোগে ১৫ সহস্রাধিক পরিবারে খাদ্য সহায়তা পৌঁছানো হয়েছে।

কলসেন্টার স্থাপন করে হটলাইনের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে এই সহায়তা। এমনকি বিশেষ ব্যবস্থায় দুর্গম চরাঞ্চলেও পৌঁছানো হচ্ছে খাবার। এই কার্যক্রমে এ যাবৎ কোটি টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। এই কার্যক্রম অব্যাহত রাখার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।

হাইমচরে গত ৫ এপ্রিল থেকে ২টি হটলাইনের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবীরা কলরিসিভ করে নির্ধারিত ঠিকানায় খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছেন। এ জন্য ২৫টি মোটরসাইকেল দিয়ে এসব খাদ্য পৌঁছানোর কাজে নিয়োজিত আছেন ৫০জন তরুণ স্বেচ্ছাসেবী। শুক্রবার (১৫ মে) পর্যন্ত গত ৪১ দিনে ১২ হাজার ৩শ’ পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে ৭০ লাখ ৭২ হাজার ৫শ’ টাকা।

এর আগে ১৫ থেকে ৩০ মার্চ পর্যন্ত ২ হাজার ৭৫০ পরিবারের মাঝে খাবার পৌঁছে দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হয় ৩২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। সর্বমোট ১৫ হাজার ৫০টি পরিবারে এ যাবৎ খাদ্য সহায়তা বাবদ ব্যয় হয়েছে ১ কোটি ৩ লাখ ৬ হাজার ৫শ’ টাকা।

কলসেন্টারের দায়িত্বে থাকা দীপু পাটওয়ারী বলেন, প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত অন্তত ৩০০ থেকে ৪০০জন আমাদের কল সেন্টারে ফোন দিয়ে থাকেন। আমরা তাদের নাম ঠিকানা ও মোবাইলের মাধ্যমে প্রতিদিন ৩০০টি পরিবারের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এর মধ্যে বিপুল সংখ্যক জেলেপরিবারও রয়েছে।

হাইমচরের ছোট লক্ষ্মীপুর গ্রামের কর্মহীন হয়ে পড়া দিনমজুর সফিকুল ইসলাম বলেন, করোনা ভয়ে ঘর থেকে বের না হয়ে খেয়ে না খেয়ে ছিলাম। তবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী হটলাইনের মাধ্যমে খাদ্য সহায়তা প্রদান করায় আমাদের অনেক সুবিধা হয়েছে।

হাইমচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূর হোসেন পাটওয়ারী বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপির পক্ষ থেকে আমি গত মার্চ মাসে প্রথম ধাপে হাইমচর উপজেলার ৬ ইউনিয়নের কর্মহীন হয়ে পড়া ২ হাজার ৭৫০ পরিবারে ৩২ লাখ ৩৪ হাজার টাকার খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছি।

প্রতিটি পরিবারকে ১০ কেজি চাল, ২ ডাল, ২ কেজি আলু, ২ কেজি পেঁয়াজ, ২ কেজি আটা, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবণ, ১ কেজি তেলসহ অন্যান্য সামগ্রী প্রদান করি।

কিন্তু এভাবে খাদ্য সহায়তা দিতে গিয়ে লোকজনের সমাগম ঘটায় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা কষ্টকর হয়। এ জন্য পরবর্তীতে গত ৫ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় ধাপে ২টি হটলাইনের মাধ্যমে ৫০জন স্বেচ্ছাসেবীর সহযোগিতায় বাড়ি বাড়ি খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করি।

তিনি আরো বলেন, আমরা হটলাইনে যোগাযোগকারী প্রতি পরিবারে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ২ কেজি আলু ও ১ কেজি পেঁয়াজ দিচ্ছি। যা এখনো চলমান রয়েছে। দ্বিতীয় ধাপে এ যাবৎ ১২ হাজার ৩শ’ পরিবারের মাঝে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছানো হয়েছে। এতে ব্যয় হয়েছে আরো ৭০ লাখ ৭২ হাজার ৫শ’ টাকা।

সব মিলিয়ে কোটি টাকার বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে এই কার্যক্রমে। আমরা করোনা মহামারির শেষে সময় পর্যন্ত হাইমচরে এ খাদ্য সহায়তা অব্যাহত রাখবো।

তিনি জানান, নিজের কষ্টার্জিত অর্থ, স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্য, আত্মীয়স্বজন, ব্যবসায়িক পার্টনার ও বন্ধু-শুভাকাঙ্খীদের কাছ থেকে পর্যন্ত অর্থ সহায়তা নিয়ে হাইমচরের মানুষের খাদ্য সহায়তা বিতরণ করে চলেছি।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)