চাঁদপুরে করোনা : ১৫ মাসে আক্রান্ত শনাক্ত ৬০০১, ১ মাসে ৬২৫৭

এক মাসে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও শনাক্ত বেশি হওয়ায় শতকরা হারে মৃত্যুর হার কমেছে।

রহিম বাদশা :
চাঁদপুর জেলায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত শুরুর পর বিগত ১৫ মাসে (৯ এপ্রিল ২০২০-৮ জুলাই ২০২১) মোট শনাক্ত হয়েছে ৬ হাজার ১জন। অথচ গত এক মাসে (৯ জুলাই-৮ আগস্ট) করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ২৫৭জন। ১৫ মাসে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৭৪জনের নমুনা সংগ্রহ ও ১৩জন করে আক্রান্ত হলেও গত এক মাসে প্রতিদিন নমুনা দিয়েছেন প্রায় ৪৮১জন, আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন প্রায় ২০২জন করে।

এছাড়া পনের মাসে গড়ে নমুনা অনুপাতে আক্রান্তের হার ছিল ১৭.৭৭%। আর গত এক মাসে আক্রান্তের গড় হার ৪১.৯৭%। তবে আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার কমেছে গত এক মাসে। আগের ১৫ মাসে যেখানে আক্রান্ত অনুপাড়ে গড় মৃত্যুর হার ছিল ২.১৪% সেখানে গত এক মাসে গড় মৃত্যুর হার ১.০৭%। অবশ্য গত ১৬ মাসে জেলায় মোট গড় আক্রান্তের হার ২৫.১৮% এবং গড় মৃত্যুর হার ১.৫৯%।

এদিকে পূর্বের ১৫ মাসে জেলায় মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১২৯জন। এক মাসে ৬৭জন বেড়ে বর্তমানে মোট মৃতের সংখ্যা ১৯৬জন। এক মাসে এটি সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা হলেও শনাক্ত বেশি হওয়ায় শতকরা হারে মৃত্যুর হার কমেছে। চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিসের করোনাকালীন দৈনিক তথ্যবিবরণী পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করে এই তথ্য জানা গেছে।

চাঁদপুর সিভিল সার্জন অফিসের গত ৮ আগস্টের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় গত ১৬ মাসে মোট ৪৮ হাজার ৬৬৬জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে করোনায় আক্রান্ত শনাক্ত হয়েছেন ১২ হাজার ২৫৮জন। মৃতের সংখ্যা ১৯৬জন। এ পর্যন্ত সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে ৭ হাজার ৮২২জনকে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন রোগীর সংখ্যা ৪ হাজার ২৪০জন।

এর আগে ৮ জুলাই-২০২১ তারিখ পর্যন্ত মোট ৩৩ হাজার ৭৫৯জনের নমুনা পরীক্ষায় ৬০০১জনের করোনা শনাক্ত হয়েছিল। মারা গিয়েছিলেন ১২৯জন। সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছিল ৫ হাজার ৪০জনকে। চিকিৎসাধীন ছিলেন ৮২৫জন। সে হিসেবে, গত এক মাসে ২ হাজার ৭৮২জনকে সুস্থ ঘোষণা করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন রোগী বেড়েছে ৩ হাজার ৪১৫জন।

বাংলাদেশে ৮ মার্চ প্রথম করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হলেও চাঁদপুরে সন্দেহভাজন লোকদের নুমনা সংগ্রহ শুরু হয় ২৭ মার্চ। চাঁদপুরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ৯ এপ্রিল। চাঁদপুরে করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে ১১ এপ্রিল।

এ বিষয়ে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ সোমবার রাতে চাঁদপুর প্রবাহকে বলেন, সারাদেশের সাথে চাঁদপুরেও সাম্প্রতিক সময়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বেড়েছে। ডেল্টা ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় দ্রুত একজন থেকে পুরো পরিবার আক্রান্তের ঘটনা ঘটছে। আগে গ্রামে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল খুব কম। এখন গ্রামে করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণ হয়েছে। সব মিলিয়ে রোগী বেড়ে গেছে। তাছাড়া লোকজনের মধ্যে সচেতনতা বাড়ায় মানুষ নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছে বেশি। এতেও শনাক্তের সংখ্যা বাড়ছে।

তিনি আরো বলেন, আশার কথা হচ্ছে গত কয়েক দিন ধরে জেলায় শনাক্তের হার কমছে। এখন দৈনিক শনাক্তের হার ২শ’র কাছাকাছি। যা কিছুদিন আগেও ৫শ’র কাছাকাছি ছিল। টিকাগ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে আক্রান্তের হার আরো কমে আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন জেলার এই শীর্ষ স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন