চাঁদপুরে নিবন্ধিত জেলে তালিকায় অনিয়মের সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি

তালহা জুবায়ের :
চাঁদপুরে প্রকৃত জেলেদের নাম সহায়তা তালিকায় না রেখে অন্য পেশার লোকদের নাম রাখার অভিযোগের আংশিক সত্যতা পেয়েছে তদন্ত কমিটি। ত্রুটিপূর্ণ এই তালিকা বাতিল করে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন করে তালিকা করে পেশাদার জেলেদের মাঝে ভ্যান গাড়ি বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

গত বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জাটকা সংরক্ষণ সপ্তাহ উপলক্ষে নিবন্ধিত জেলেদের মাঝে বিকল্প কর্মসংস্থানের সহায়তা হিসেবে ভ্যান গাড়ি বিতরণের আয়োজন করা হয়। জেলা মৎস্য অধিদপ্তরের উদ্যোগে অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ ৩-৪জন জেলেকে ভ্যান বিতরণ করেন।

এ সময় ভ্যানগাড়িগুলো প্রকৃত জেলেদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে না বলে বঞ্চিত জেলে ও উপস্থিত সাংবাদিকরা অভিযোগ তুললে তাৎক্ষণিক কার্যক্রমটি স্থগিত করার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক। একই সাথে বিতরণকৃত ভ্যান গাড়ি ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দেন তিনি। অনুষ্ঠানে ২০জন জেলের মাঝে ভ্যান গাড়ি বিতরণের কথা ছিল।

এই ঘটনায় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন- সদস্য সচিব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইমরান মাহমুদ ডালিম ও সদস্য সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জামাল উদ্দিন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, বুধবার রাতে তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্ট জমা দিয়েছে। রিপোর্টে অভিযোগের আংশিক সত্যতা পাওয়া গিয়েছে। তালিকায় নিবন্ধনকৃত প্রান্তিক জেলেদের পাশাপাশি পেশা পরিবর্তনকারী জেলের নামও পাওয়া গেছে। এর প্রেক্ষিতে ওই তালিকা বাতিল করে নতুন তালিকা করার জন্য নির্দেশ দিবো। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন প্রকৃত জেলেদের মাঝে ভ্যান সহায়তা কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে। ত্রুটিপূর্ণ তালিকা প্রণয়নের সাথে জড়িত সকলের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ আরো বলেন, দীর্ঘদিন যাবত জেলেদের তালিকা হালনাগাদ করা হয়নি। এর ফলে অনেকেই জেলেদের তালিকায় রয়ে গিয়েছে যারা এখন আর এই পেশায় নেই। আবার নতুন করে অনেকে জেলে পেশায় এসেছেন যাদের নিবন্ধন করা হয়নি। জেলেদের তালিকার হালনাগাদ আরো আগেই করা উচিত ছিল। ইতিমধ্যে আমি উদ্যোগ নিয়েছি জেলে তালিকার হালনাগাদ কার্যক্রমের। অচিরেই তা বাস্তবায়ন করা হবে।

তিনি বলেন, আমি চাইনা আমার মাধ্যমে কোন মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হউক। মানুষের কল্যাণে আমি কাজ করে যেতে চাই। এ কাজে সাংবাদিকরা বরাবরই আমাকে সহায়তা করেছে। আমাগীতেও আমি আপনাদের সহায়তা কামনা করছি।

উল্লেখ্য, চাঁদপুরে ৫১ হাজার ১শ’ ৯০জন জেলের মধ্যে ৪০ হাজার ৫জনকে মাছ ধরা নিষিদ্ধকালীন সময়ে ৪ মাস ৪০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা হিসেবে চাল প্রদান করা হয়।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন