চাঁদপুরে বন্যার পদধ্বনি : ঝুঁকিতে শহর রক্ষা বাঁধ

তালহা জুবায়ের :
অবশেষে বন্যাক্রান্ত হলো চাঁদপুর জেলা। বুধবার বিকেল থেকে মাত্র কয়েক ঘন্টার ব্যবধানে জেলার চরাঞ্চল, নিম্নাঞ্চল, নদী তীরবর্তী এলাকা এবং চাঁদপুর জেলা শহর বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে।

তবে এই পানি বৃদ্ধি কিংবা কমার উপর নির্ভর করছে চাঁদপুরের বন্যা পরিস্থিতি কোন্ দিকে যাবে। বুধবার বিকেলে বিপদসীমার ৭৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি প্রবাহিত হয়েছে।

তবে বৃহস্পতিবার সকালে পানি অনেকটাই কমেছে। অনেক রাস্তা ও বাসা-বাড়ি থেকে পানি নেমেছে। আজ সকালে চাঁদপুরের নদ-নদীর পানি বিপদসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। তবে আজ বিকেলের জোয়ারে পানি কতটা বাড়বে তা নিয়ে চিন্তিত সবাই।

চাঁদপুরে বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে শহরের বিভিন্ন পাড়া-মহল্লাসহ নিম্নাঞ্চলের হাজারো মানুষ। বুধবার বিকেল থেকে হঠাৎ করে মেঘনা নদীর জোয়ারের পানিতে বৃদ্ধি পেয়ে চাঁদপুরে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন পাড়া মহল্লাসহ হাইমচর উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ বন্যার পানিতে আক্রান্ত হয়েছে। মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পেয়ে শহরের আদালত পাড়া, রহমতপুর কলোনী, প্রফেসরপাড়াসহ পুরানবাজারের বিভিন্ন এলাকা পানিতে প্লাবিত হয়।

এছাড়া রাস্তার উপর দিয়ে পানি উঠে প্লাবিত হয়েছে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী, হাইমচর সদর ও নীলকমল ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষের বসতঘর। তাছাড়া উপজেলার মহজমপুর, চরভাঙ্গা এলাকায়, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে সেচ প্রকল্প এলাকা পানিতে তলিয়েছে। বেড়িবাঁধের বাইরে থাকা ঘরবাড়ি, ফসলী জমি, ঝিল, পুকুর, সড়ক প্লাবিত হয়েছে। ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।

চাঁদপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ বাবুল আখতার বলেন, দক্ষিণের বাতাস, পূর্ণিমার প্রভাব ও উজানের পানি বৃদ্ধির ফলে মেঘনা নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এতে করে চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন এলাকাসহ হাইমচর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়ে বন্যার দেখা দেয়।

তিনি আরো বলেন, এই পরিস্থিতিতে চাঁদপুর শহররক্ষা বাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। আশা করি ভাটার সময় পানি নেমে যাবে। তবে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পরিস্থিতি বুঝে যেকোন পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো. মাজেদুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পেয়ে শহরে বন্যা দেখা দেয়। বিগত কয়েক দিন যাবত জেলার চরাঞ্চলগুলোতে বন্যা থাকলেও শহরে পানি উঠেনি।

তিনি আরো বলেন, বুধবারের পানিতে শহরের বিভিন্ন মহল্লার বাসিন্দারা পানিতে প্লাবিত হয়েছে। আশা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। পরিস্থিতি যাই ধারণ করুক না কেন জেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে তা মোকাবেলায়।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন