চাঁদপুরে মাদ্রাসাছাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় মসজিদের ইমাম আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক :
চাঁদপুর সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রোডস্থ রাশেদিয়া জামে মসজিদের ইমাম ফয়সাল আহমেদ খানকে মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আটক করেছে পিবিআই।

মসজিদের সাথের একটি কক্ষে মাদ্রাসাছাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করার ঘটনায় ধর্ষিতার মা বাদী হয়ে ইমাম ফয়সাল আহম্মেদকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলাটি প্রথমে চাঁদপুর মডেল থানার পুলিশ তদন্ত করলেও আসামীকে গ্রেফতার করতে না পারায় অবশেষে আদালত মামলাটি পিবিআইর কাছে হস্তান্তর করেন।

পিবিআই’র চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা এসআই ফারুক হোসেন আধুনিক প্রযুক্তি অবলম্বন করে ঢাকার টিকাটলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করতে সক্ষম হয়। আটক ইমাম ফয়সাল ধর্ষণের ঘটনাটি স্বীকার করেন এবং মেয়েকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।

শনিবার তাকে আটক করে চাঁদপুরে নিয়ে আসার পর তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। ধর্ষণ মামলার আসামি ফয়সালের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেন। ধর্ষণের ঘটনায় পিবিআইর তদন্তকারী কর্মকর্তা মামলার প্রধান আসামি ফয়সাল খানের বিরুদ্ধে আদালতে রিমান্ড আবেদন করবেন বলে জানা যায়।

ধর্ষিতা কিশোরী সদর উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়নের ফাজিল ডিগ্রী দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইমামকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে এলাকাবাসী বিক্ষোভ করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ফারুক হোসেন জানায়, মাদ্রাসাছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ইমাম ফয়সাল আহম্মেদের নামে মামলা দায়ের করা হলে আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেন। অবশেষে পিবিআই’র ইনচার্জ মাহবুবের নির্দেশে আধুনিক প্রযুক্তি অবলম্বন করে ঢাকার টিকাটলি এলাকায় অভিযান চালিয়ে ইমাম ফয়সালকে আটক করতে সক্ষম হই।

এই ঘটনাটি সমঝোতা করতে ফয়সাল মাদ্রাসাছাত্রীর পরিবারের সাথে মোবাইলে ফোন করে ঘটনাটি ঘটেছে বলে স্বীকার ও বিয়ে করবে বলে স্বীকার করেন। সেই কল রেকর্ড আমাদের কাছে রক্ষিত রয়েছে। এছাড়া এই ধর্ষণের সহযোগিতা ও ঘটনা ধামাচাপা দিতে যারা জড়িত রয়েছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা হবে।

স্থানীয়রা জানায়, রাশেদিয়া জামে মসজিদের ইমাম ফয়সাল মসজিদে থেকে এই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে তা খুবই ন্যাক্কারজনক ঘটনা। মাদ্রাসাছাত্রী মসজিদে পড়তে এসে এই ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আমরা এই ধর্ষক ফয়সালের উপযুক্ত বিচার দাবি করছি।

ধর্ষিতার মা জানায়, রাশেদিয়া জামে মসজিদের ইমাম ফয়সালের কাছে প্রতিদিন সকাল ছয়টায় মেয়ে কোরআন শরীফ তেলাওয়াতের জন্য মসজিদে যায়। এ সময় লম্পট ফয়সাল মসজিদের অন্যান্য ছাত্র-ছাত্রীদের ছুটি দেওয়ার পর মসজিদের সাথে তার রুম পরিষ্কার করার জন্য বলে।

এ সময় ইমাম ফয়সাল সুযোগ বুঝে তার রুমে ঢুকে দরজা আটকে জোরপূর্বক মেয়েকে ধর্ষণ করে ও মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখে। মেয়েকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ও তার নগ্ন ছবি মানুষকে দেখাবে বলে হুমকি দিয়ে প্রতিদিন তার সাথে অবৈধ মেলামেশা করতো। আমরা লম্পট ইমাম ফয়সাল আহমেদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও তার ফাঁসি চাই।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন

০১৭১৬৫১৯৫৪১ (বার্তা বিভাগ)