চাঁদপুরে রিকশাচালকের সততার দৃষ্টান্ত…

নিজস্ব প্রতিবেদক :
নয়ন শেখ (৩০), পিতা কুদ্দুস শেখ, সাং শেখ বাড়ি, ৬নং ওয়ার্ড, ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন, চাঁদপুর সদর, চাঁদপুর। পেশায় রিকশাচালক। বৃহস্পতিবার সকালে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ শহরের আদালতপাড়াস্থ বাসা থেকে তার রিকশার যাত্রী হয়ে প্রেসক্লাবে আসেন।

রিকশা থেকে নেমে তিনি ভাড়া দেয়ার সময় তার হাতে থাকা মোবাইল সেটটি রিকশার সিটের উপর রেখে ভাড়া পরিশোধ করে তিনি প্রেসক্লাবের উপরে চলে যান। তখন মোবাইলটি মনের ভুলে রিকশার সিটের উপরই থেকে যায়। ১০ মিনিট পর তার মোবাইলের খোঁজ হয়। তখন তার স্মরণ হয় মোবাইল তো তিনি রিকশার সিটের উপর ফেলে রেখে এসেছেন।

পরক্ষণেই তিনি নিচে নেমে রিকশা চালককে আর পাননি। তখন তিনিসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিক মোবাইলে কল করে দেখেন রিং হয়, কিন্তু কেউ রিসিভ করেনি। অনেকবার কল করার পরও রিসিভ না করায় তিনি কিছুটা হতাশ হন। তবে তেমন একটা চিন্তিত হননি এজন্যে যে খারাপ কোনো লোকের হাতে পড়লে মোবাইল বন্ধ করে ফেলতো।

অবশেষে দুপুরে অপর প্রান্ত থেকে ফোন রিসিভ করে তার পরিচয় দিয়ে বলা হলো সে রিকশা চালক নয়ন, তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নে। তখন প্রেসক্লাব সেক্রেটারি নিশ্চিত হলেন তার রিকশায় চড়েই তিনি প্রেসক্লাবে আসেন।

রিকশাচালক নয়ন তখন জানালেন মোবাইলটি তার কাছে আছে এবং তার বাড়ির ঠিকানা বলে বললেন মোবাইল আনতে তার বাড়িতে যাওয়ার জন্যে।
বিকেল ৩টার দিকে প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এএইচএম আহসান উল্লাহ, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গিয়াস উদ্দিন মিলন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক একে আজাদ রিকশা চালক নয়ন শেখের বাড়িতে যান।

তখন নয়ন শেখ হারিয়ে যাওয়া মোবাইল সেটটি প্রেসক্লাব সেক্রেটারির হাতে তুলে দেন। এ সময় নয়ন শেখের স্ত্রী, সন্তানসহ পরিবারের সদস্যরাও সামনে ছিলো। নয়ন শেখ তখন আলাপচারিতায় বললেন, একটা মোবাইল সেট খেয়ে (আত্মসাৎ) আমি কি বড়লোক হয়ে যাবো? কিন্তু আমি চিন্তা করেছি যার মোবাইল তিনি অবশ্যই খোঁজ করবেন। তখন আমি তাকে ফেরত দিয়ে দেবো।

হতদরিদ্র রিকশাচালক নয়ন শেখের সততায় মুগ্ধ হন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। তখন প্রেসক্লাব সেক্রেটারি নয়ন শেখকে বখশিস দেন। নয়ন শেখ বখশিস পেয়ে খুব খুশি হন। হতদরিদ্র রিকশাচালক নয়ন শেখ যেনো সমাজের চোখ খুলে দিলো।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন