চাঁদপুরে সরকারি আইসিইউ এখনি চালু হচ্ছে না : বেসরকারি ৪ আইসিইউ বেড খালি!

রহিম বাদশা :
চাঁদপুরে সরকারি কোনো হাসপাতালে এখন পর্যন্ত আইসিইউ বেড চালু না হলেও বেসরকারি একটি হাসপাতালের চালু হওয়া ৪টি সচল আইসিইউ বেড খালি পড়ে আছে। লোকবলের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে এসব বেড অব্যবহৃত। অথচ চাঁদপুরে আইসিইউ সাপোর্টের অভাবে প্রতিদিন করোনাসহ অন্যান্য জটিল রোগে গুরুতর অসুস্থ লোকজনকে কুমিল্লা কিংবা ঢাকা নিতে হচ্ছে। পথিমধ্যে মারা যাচ্ছেন অনেকে। স্থানীয় হাসপাতালেও ঘটছে মৃত্যুুর ঘটনা। মৃত্যুর প্রহর গুণছেন বেশুমার মুমূর্ষু রোগী।

চাঁদপুর শহরের ষোলঘর এলাকায় অবস্থিত বেসরকারি চিকিৎসালয় হানী ছিদ্দিক মেমোরিয়াল হাসপাতালে চার শয্যাবিশিষ্ট একটি আইসিইউ ইউনিট রয়েছে। কয়েক বছর আগে হাসপাতালটিতে আইসিইউ ইউনিট চালু করা হয়। অনেকেই সেখানে আইসিইউ সেবা নিয়েছেন। কিন্তু প্রয়োজনীয় দক্ষ ডাক্তার ও নার্সের অভাবে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে আইসিইউ ইউনিট বন্ধ রয়েছে। কোটি কোটি টাকায় কেনা এসব মূল্যবান যন্ত্রপাতি করোনার ক্রান্তিকালেও মানুষের উপকারে আসছে না। লোকসান গুণছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও। অথচ এসব আইসিইউ চালু করা গেলে করোনাসহ অন্যান্য জটিল রোগের মুমূর্ষু রোগীদের সেবা দেওয়া যেত।

এ ব্যাপারে হানী ছিদ্দীক মেমোরিয়াল হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এস এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের এখানে ঢাকা থেকে প্রশিক্ষিত ডাক্তার ও নার্স এনে আইসিইউ চালু করেছিলাম। কিন্তু তারা চাকুরি ছেড়ে চলে যাওয়ার পর লোকবলের অভাবে এসব আইসিইউ চালু করা যাচ্ছে না। বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ যদি আগ্রহ দেখায় এবং প্রশিক্ষিত ডাক্তার-নার্সের ব্যবস্থা করে দেয় তাহলে যে কোনো সময় আইসিইউ সার্ভিস চালু করা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আমাদের কোনো লাভ দেওয়ার দরকার নেই, শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় খরচ নির্বাহের ব্যবস্থা করলেই চলবে।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে চাঁদপুরের সিভিল সার্জন ডা. সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, চাঁদপুরে করোনার রোগী বেড়ে যাওয়ায় সদর হাসপাতালসহ অন্যান্য হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক-নার্সের সংকট চলছে। আর আইসিইউ পরিচালনার মতো চিকিৎসক ও নার্স খুব কম। তাই এই মুহূর্তে হানী ছিদ্দিক মেমোরিয়াল হাসপাতালের আইসিইউতে কোনো জনবল দেওয়ার সুযোগ নেই। তবে বিকল্প কোনো উপায়ে বেসরকারি এই হাসপাতালের আইসিইউ চালু করার সুযোগ আছে কিনা তা নিয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলবো।

সিভিল সার্জন আরো জানান, চাঁদপুর সদর হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট চালুর মতো প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষিত লোকবল নেই। সেখানে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন সরবরাহ করার মতো পরিস্থিতিও নেই। তাই আপাতত সদর হাসপাতালে আইসিইউ ইউনিট চালুর কোনো চিন্তা ভাবনা নেই। আমরা চাচ্ছি, সদর হাসপাতালের লিকুইড অক্সিজেন প্লান্ট চালুর পর শয্যা বাড়াতে।

শেয়ার করুন

মন্তব্য করুন